তদন্তে ঢিলেমি কেন? ‘দুর্নীতি-কাণ্ডের মাথাদের ধরতে হবে’, সিবিআই অফিস ঘেরাও অভিযানে সিপিএম
দিল্লিতে আক্রমণ শুধু বিজেপিকে। আর বঙ্গে তৃণমূল, বিজেপিকে উভয়কেই। এ এক জটিল অবস্থান।

বিজেপির বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছে বিরোধীরা। তৈরি হয়েছে ইন্ডিয়া জোট। সেই জোটে সিপিএম আছে। এই জোটে তৃণমূলও আছে। এখান থেকেই তৈরি হয়েছে এক মজার পরিস্থিতি। জোটে থাকলেও মমতা-অভিষেকের ছোঁয়া বাঁচিয়ে চলতে চায় সিপিএম। তাই কোঅর্ডিনেশন কমিটিতে তারা নেই। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে জোরদার আক্রমণে নামছে তারা। অর্থাৎ দিল্লিতে আক্রমণ শুধু বিজেপিকে। আর বঙ্গে তৃণমূল, বিজেপিকে উভয়কেই। এ এক জটিল অবস্থান।
এই অবস্থানকে আরও জোরদার করতে বাংলায় পথে নামতে চলেছে সিপিএম। ৫ অক্টোবর সিবিআই দফতর অভিযান করবে তারা। ইস্যু অনেক। নিয়োগ দুর্নীতির ইয়দন্ত এখনও শেষ হচ্ছে না কেন? মাথাদের কেন ধরা হচ্ছে না? কেন্দ্রীয় এজেন্সি কি রাজ্যের শাসকদলকে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে? দল বদল করা নেতাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় এজেন্সি কেন পদক্ষেপ করছে না? এই সব প্রশ্ন নিয়েই ওই দিন সিবিআই দফতর ঘেরাও অভিযান করতে চলেছে সিপিএমের রাজ্য কমিটি। তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপিকেও নিশানায় নিয়েছে তারা।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য বলছেন, ‘রাজ্যের চিটফান্ড সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চলছে। কিন্তু এখনও তাদের মাথাকে ধরতে পারেনি কেন্দ্রীয় এজেন্সি। যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, প্রকাশ্যে তাঁরা অনেকের নাম বলেছেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অভিযুক্তদের ক্যামেরার সামনে টাকা নিতে দেখা গেছে। এদের অনেকেই দল বদল করেছেন। কিন্তু তদন্ত চলছে তো চলছেই। রাজ্য ও কেন্দ্রের সরকার একই মুদ্রার দুই পিঠ। আমাদের দাবি, দ্রুত তদন্ত শেষ করে অপরাধীদের জেলে ভরতে হবে। নাহলে আমরা চুপ করে বসে থাকব না। এটা বুঝিয়ে দিতেই অভিযান’।
রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, সিপিএম পড়েছে মহা ফাঁপড়ে। শুধু বিজেপি বিরোধিতা করলে তৃণমূল রাজনৈতিক ভাবে লাভবান তো হবেই, সঙ্গে সাধারণ মানুষ ভাবতে পারে, এতদিন যাঁদের বিরোধিতা করছিল, ক্ষমতার লোভে তাদের সঙ্গেই হাত মিলিয়ে নিল। আবার রাজ্যে একতরফা তৃণমূল বিরোধিতা করলে বিজেপির সুবিধা। তাদের জমি শক্ত হবে। সেটাও চাইছে না সিপিএম, তৃণমূল কোনও পক্ষই। তাই ভারসাম্য রক্ষার খেলায় নেমেছেন মহম্মদ সেলিমরা। এখন দেখার সবদিক রক্ষা হয় কিনা।