পার্থর মুখে মোদী নাম! আচার্য বিলের প্রসঙ্গে গুজরাতের উদাহরণ তুলে ‘বিজেমূল’ তত্ত্বে উস্কানি তৃণমূলের

বাংলার বিধানসভায় হাজারও তর্ক-বিতর্কের মধ্যে দিয়েই পাশ হয়ে গেল মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বসানোর বিল। কিন্তু বিলটিকে নিয়ে বিতর্ক বাঁধল শাসক ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে। সেই প্রসঙ্গে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বিল পাশের উদাহরণ টানলে, বিপরীতে পাল্টা যুক্তি দিলেন খোদ বিজেপি বিধায়করা।
উল্লেখ্য, রাজ্য রাজনীতিতে এখন সরগরম পরিস্থিতি। আবহাওয়ার ভ্যাপসা গরমের মতোই বাংলার রাজনীতির মধ্যেও দেখা গিয়েছে একটি চাপা ক্ষোভ। একদিকে দাঙ্গা পরিস্থিতি অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আচার্য পদে আসীন হওয়া নিয়ে সর্বত্র শাসক বনাম বিরোধী পরিস্থিতি। এমতাবস্থায়, সোমবার বিধানসভা সরকারের তরফে ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি ল’(সংশোধনী) বিল, ২০২২ পেশ করা হয়। বিলটি পেশ করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শাসক-বিরোধী শিবিরের আলোচনার পর বিলটির বিরোধীতা করে ডিভিশন বিজেপি বিধায়করা। তাতেই ভোটাভুটি হয়। সেখানেই জয়ী হয় শাসক দল। বিলটির সপক্ষে ভোট পড়ে ১৮২টি ও বিপক্ষে পড়ে ৪২টি। এই বিলের পেশের ফলে মোট ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বসানো হবে। এদিন বিলের পক্ষে বক্তৃতা দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পার্থ ভৌমিক-সহ তৃণমূল বিধায়কেরা। অপরদিকে, বিজেপি পরিষদীয় দলের তরফে বিধায়ক বিশ্বনাথ কারক, অগ্নিমিত্রা পাল, অম্বিকা রায়ের মতো বিধায়করা বিলের বিরোধিতা করেন।
এদিন মোদী রাজ্যের দিকে সুর টেনে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘এর আগে গুজরাত ও তামিলনাডুতে এই বিলটি পাশ হয়েছিল। গুজরাতের সময় সেই রাজ্য মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সময়কালেই রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলি থেকে আচার্যকে সরিয়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সেই পদে আসীন করা হয়।’ পাল্টা যুক্তিতে বিল পাশ হলেও, তা কোনও ভাবেই রাজ্য সরকারের তরফে কার্যকর করা সম্ভব হবে না বলেই দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন বিধানসভার এই প্রধান বিরোধী দলনেতা বলেন, “রিটায়ারমেন্ট হয়ে যাবে, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী আচার্য পদে আসীন হতে পারবেন না। এই বিলটি বিধানসভায় পাশ হয়ে রাজ্যপালের কাছে যাবে। তারপর কেন্দ্র সরকারের কাছে যাবে। মনে করিয়ে দি, পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন করে বঙ্গ ও বিধান পরিষদ তৈরির প্রস্তাব বিধানসভায় পাশ হয়ে দিল্লিতে পরে রয়েছে। পাশ হচ্ছে না।আচার্য বিলেরও একই দশা হবে।” অবশ্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য অনেকে ‘বিজেমূল’ তত্ত্বের প্রয়োগ করেছেন। কয়েনের এই পিঠ আর ওই পিঠ বলে দাগিয়েছেন তৃণমূল-বিজেপিকে।