‘সফল হন, রাজনীতির চক্করে যেন না পড়েন, ইস্পাত কারখানা ঘোষণার পরেই সৌরভকে দিলীপ
ধোনি যতই ধনী হোন কিংবা কোহলি যতই বিরাট, তাঁরা বড়জোড় দু’চারটে ক্লাবে, বড়জোর ফ্যাশন ব্র্যান্ড, রেস্তোরাঁ কিংবা রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু পুরোদস্তুর ইস্পাত কারখানায় বিনিয়োগ! সে কি চাট্টিখানি কথা।

কৌশিক, কলকাতা: দুনিয়ার কোনও ক্রিকেট খেলোয়াড়ই আজ পর্যন্ত শিল্পপতি রূপে অবতীর্ণ হননি। সে আদ্যিকালের সুনীল গাভাসকার হোন কিংবা নব্বইয়ের দশকের সচিন তেণ্ডুলকর বা অধুনা মহেন্দ্র সিং ধোনি বা বিরাট কোহলি।
ধোনি যতই ধনী হোন কিংবা কোহলি যতই বিরাট, তাঁরা বড়জোড় দু’চারটে ক্লাবে, বড়জোর ফ্যাশন ব্র্যান্ড, রেস্তোরাঁ কিংবা রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু পুরোদস্তুর ইস্পাত কারখানায় বিনিয়োগ! সে কি চাট্টিখানি কথা।
কিন্তু সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় করেছেন। সুদূর মাদ্রিদে বসে বাংলায় বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। তারপর থেকেই চলছে কাটাছেঁড়া।
লগ্নি টানতে স্পেন সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সফরসঙ্গী হয়েছেন সৌরভ। মাদ্রিদের শিল্প সম্মেলনেও যোগ দিয়েছেন। সেখানেই ভরা মেহফিলে দেশি-বিদেশি শিল্পপতি, মুখ্যমন্ত্রীর সামনে সৌরভ ঘোষণা করেছেন, বাংলায় শিল্পের প্রসার ঘটাতে চান তিনি। তাই আগামী পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে ইস্পাত কারখানা গড়ে তুলবেন। তার জন্য প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
বিদেশি শিল্পপতিদের বলেছেন, ‘আপনারাও আসুন। বাংলায় বিনিয়োগ করুন’। নিন্দুকেরা অবশ্য বলছে, ‘বাংলায় ইস্পাত কারখানা করার কথা মাদ্রিদে গিয়ে ঘোষণা করতে হল’? সে যাই হোক, বাংলায় বিনিয়োগ এলে বাঙালির লাভ, যেখান থেকেই ঘোষণা করা হোক না কেন!
একুশের বিধানসভা ভোটের আগে হাওয়া উঠেছিল, সৌরভ নাকি বিজেপিতে যোগ দেবেন। অমিত শাহ বেহালায় দাদার বাড়িতে নৈশভোজও করে যান। তবে সৌরভ বিজেপিতে যোগ দেননি। বরং তারপরই শাসক দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ান। ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা যায় তাঁকে। এবার তো একেবারে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হয়ে বাংলায় বিনিয়োগের ঘোষণা।
এহেন পরিস্থিতিতে বিজেপির প্রতিক্রিয়া কী? সৌরভ যেখানে ইস্পাত কারখানা গড়বেন বলে জানিয়েছেন সেই পুর্ব মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ রেখে ঢেকে মুখ খুললেন। একদিকে সৌরভের সাফল্য কামনা যেমন করলেন তেমনই সাবধান করলেন, যেন রাজনীতির চক্করে না পড়েন।
দিলীপ ঘোষের কথায়, ‘সৌরভ বাংলার স্বার্থে গিয়েছেন। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা যেন তিনি সফল হন। তাতে বাংলার লাভ। তবে তিনি রাজনীতির চক্করে যেন না পড়েন। এই ঢপবাজির রাজনীতিতে জড়িয়ে গেলে মুশকিল। সম্ভব হলে বাংলায় আরও যাঁরা এই ধরনের সেলিব্রিটি রয়েছেন তাঁদেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাজে লাগান। বাংলার যদি লাভ হয় ক্ষতি কী! তবে শুধু খবর তৈরি করে আর ছবি তুললে কোনও লাভ হবে না’।