মা বাবার সঙ্গের কাছে সবই আজ ফিকে তাদের কাছে

পাশে নেই বাবা মা ! তাই আজ উৎসবের রংও ফিকে

রায়গঞ্জ: সন্তান না থাকায় যেমন মা বাবার যন্ত্রণা হয়, তেমনই সন্তান যদি কোনো বাবা মার স্পর্শই ছাড়া বড়ো হতে থাকে তবে তার মনটা ভেঙে পরে দিনের পর দিন। এমনই জীবন প্রতিনিয়ত কাটিয়ে চলেছে মহল্লা গ্রামের একটি ছেলের। প্রতি বছর দুর্গা মা যখন এই সময়ে তার চার ছেলে মেয়েকে নিয়ে মর্তে আসেন তখন তারা থাকে সম্পূর্ণ একা। একসাথে মা-বাবাকে নিয়ে পুজো কাটানোর মত দিন তাদের জীবনে আসে না । তাই এই পাঁচ দিনই চলে মন কেমনের দিন।

সে বছর দুয়েক আগে কথা। মা বাবা দুজনেই দিয়েছিলেন একসাথে গলায় দড়ি। তার পর থেকেই হৃদয় বর্মনের বাসস্থান হয়ে উঠেছে রায়গঞ্জ দেবীনগর এলাকায় অবস্থিত শিশু সদন আবাসনে।

মাঝেমধ্যে হৃদয়ের কাকা খোঁজখবর নিতে শিশু সদনের আবাসনে আসেন। হৃদয়ের বাড়ী রায়গঞ্জ থানার মহারাজায়। সে পড়াশোনা করে দেবীনগর গয়ালাল স্কুলের নবম শ্রেণীতে।

হৃদয়ের মতো আরও এক নিঃসঙ্গ জীবন কাটিয়ে চলছে সাত বছরের দেবজিৎ চন্দ্র।বছর চারেক আগে দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যু হয়। বাবার মৃত্যুর পর থেকেই তার মা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। দেবজিতের বাড়ি রায়গঞ্জ শহরের সুদর্শনপুর এলাকায়। দেবজিৎ স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র। একবছর আগে তার পিসি এসে তাকে ওই শিশু সদনে ভর্তি করে গিয়েছেন। দেবীনগর শিশু শিক্ষা নিকেতনের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ফ্রান্সিস বেসরা। বাড়ি রায়গঞ্জ থানার বিন্দোল গ্রামে। বাবা মারা যান চার বছর আগে। গত বছর মারা যান মা। একসময় পিসি সালমা বেসরা এসে খোঁজ নিতেন।এখন অবশ্য পিসির সেই সময় নেই।রায়গঞ্জ শহরের গোয়ালপাড়ায় বাড়ি দেব বর্মনের। বাবা মারা যাওয়ার পর মা অন্য পুরুষকে সঙ্গে নিয়ে দিল্লি পাড়ি দেন। বাবা মারা যাবার পর মাও ছেড়ে চলে গেছে এখন তার বাস শিশু সদন। রায়গঞ্জের মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতির উপস্থিতিতে এই দিয়ে ছেলের হাতে জামা কাপড় ও অন্যান্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।

সঙ্গে ছিলেন শিশু সদনের সুপারিনটেনডেন্ট সাধন সিংহ রায়। ১৫০ জন আবাসিককে পুজোয় নতুন জামাকাপড় জুতো দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। প্রত্যেককে অষ্টমী পুজো পরিক্রমাও করানো হয়। মেনুতে ছিল, ছোলার ডাল নারকেল দিয়ে আলু পোস্ত, ফুলকপির তরকারি। নবমীর দিন দেওয়া হবে মুরগির মাংস। দশমীর দিন খাসির মাংস ও পোলাও।

তবে, এত কিছু আয়োজন সব বৃথা তাদের কাছে। কারণ মা বাবার পাশে থাকার যে আনন্দ তা হয়তো কেউই পূরণ করতে পারবেনা কোনদিন । তাই আজও তারা খোঁজে মা বাবাকে খোঁজে।




Leave a Reply

Back to top button