প্রতি বছর বাড়ছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা! নীতীশের মৃত্যুতে কাঠগড়ায় মমতার সরকার

বৃষ্টির আমেজ অনেকের জীবনে একটা আনন্দের ছোঁয়া দিতে সক্ষম হলেও, অনেকের জীবনে ঘনিয়ে আনে অন্ধকার। আপাতত এখন এই রকমই অন্ধকারে আচ্ছন্ন হরিদেবপুরের যাদব পরিবার। একমাত্র সন্তানকে খুইয়ে একেবারে আকাশ ভেঙে পড়েছে তাদের মাথায়। ঘটনা গতকালের। ছুটির দিনে দফায় দফায় বৃষ্টিতে বেশ আমেজেই ছিল শহরবাসী। কিন্তু আমেজ যে মুহূর্তের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাবে এই নিয়ে পূর্ব ধারণা ছিল না কারোরই।

হরিদেবপুরের হাফিজ মহম্মদ ইসাক রোডের এক পশলা বৃষ্টিতেই যেন পাহাড়প্রমাণ জল দাঁড়িয়ে যায়। যাতায়াতের ক্ষেত্রে বেশ অসুবিধার মুখে পড়তে হয় স্থানীয়দের। বৃষ্টির মাঝে এই রাস্তা দিয়েই সেদিন ফিরছিল নীতীশ যাদব। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, জলের মধ্যে টাল সামলাতে না পেরে একটি বিদ্যুতের খুঁটিকে আঁকড়ে ধরে সে। আর তারপরই ঘটে যায় মহাবিপদ। সঙ্গে সঙ্গ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জমা জলের মধ্যেই ছিটকে পড়ল নীতীশ। স্থানীয় বাসিন্দারাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় কেউ তাকে তুলে আনতে যেতে পারেনি।

mamata banerjee 

উল্লেখ্য, শুধুই নীতীশ নয়! এদিন রাজভবনের সামনে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয় এক যুবকের।  দমদমে একই ভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হয় দুই কিশোরীর। একদিনে  এতগুলি মৃত্যুর জেরে বেশ রোষের মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। প্রতি বর্ষায় শহর জুড়ে জমা জল ও তার জেরে একের পর এক দুর্ঘটনা। কিন্ত কবে অন্ত হবে? এই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য অজানা। গতবছর বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হয় বহু মানুষের। প্রতি বছরই এই বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যুর পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে বৃদ্ধি। গত বছর উত্তর ২৪ পরগনার তিনটি পরিবারের চার জন সদস্য মারা যায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে। শুধু তাই নয়, গতবছরই মালদায় একদিনে বিদ্যুৎস্পৃষ্ঠ হয়ে মৃত্যু হল তিন জনের। 

প্রসঙ্গত একটি সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ভারতে ১১টি রাজ্যে প্রতিবছর ৮৫ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। আর এই দুর্ঘটনাগুলির মূল কারণ, নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কম অগ্রাধিকার, খারাপ নকশা, অনুন্নত প্রযুক্তির মান ইত্যাদি।এদিকে, নীতীশ যাদবের মৃত্যুতে রাজ্য জুড়ে তৈরি হয়েছে চাপা ক্ষোভ। শিক্ষকের বাড়ি থেকে ফেরার পথে প্রাণ হারিয়েছে যাদব পরিবারের এক মাত্র সন্তান। আর তারপর থেকেই শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর। প্রশ্ন উঠছে দায় কার? ইতিমধ্যে পুরসভা সক্রিয় হয়ে উঠলেও তাতে যে আর বিশেষ কিছু লাভ হবে না বলেই মনে করছেন একাংশের রাজনীতিবিদ। অভিযোগের আঙুল আপাতত তৃণমূল বোর্ড পরিচালিত নিকাশি ব্যবস্থার দিকে। 

  




Leave a Reply

Back to top button