‘যা পাখি উড়তে দিলাম তোকে’, বাড়িতে টিয়া, ময়না পোষার দিন শেষ, আইন আনছে রাজ্য
দেশি পাখিতে নিষেধাজ্ঞা, তবে বিদেশি পাখিতে শর্তসাপেক্ষে ছাড়

‘যা পাখি উড়তে দিলাম তোকে’। আর গান নয়, এবার সত্যি তাই করতে হবে। বাড়িতে আর টিয়া, ময়না কেন, কোনও দেশি পাখিই আর পোষা যাবে না। এমনই নিয়ম আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। চলতি বিধানসভা অধিবেশনে এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেছেন, ‘রুল তৈরি হয়ে গিয়েছে, আগস্টের শেষেই লাগু হয়ে যাবে’।
পোষ্য অনেকেরই প্রিয়। কেউ কুকুর, বিড়াল পোষেন তো কেউ টিয়া, কাকাতুয়া। খাঁচায় রেখে জল, খাবার দেন। কথা বলতে শেখান। নতুন কথা শিখলে অতিথিদের দেখিয়ে এক ধরণের আত্মতৃপ্তিও পান অনেকে। কিন্তু এবার সে সবে লাগাম পরাতে চলেছে রাজ্য। ভারতীয় প্রজাতির পাখি পোষা বা পালন নিষদ্ধ করে খুব শীঘ্রই বিজ্ঞপ্তি জারি হবে বলে জানিয়েছে সরকার।
বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, ‘বনের পাখি হোক কিংবা টিয়া, কাকাতুয়ার মতো গৃহপালিত – বাড়িতে আর কোনও পাখি পোষা যাবে না। খাঁচাবন্দী করে রাখা চলবে না। যাঁদের বাড়িতে পাখি আছে, ছেড়ে দিতে হবে’। গৃহস্থ বাড়িতে পাখি পোষা হচ্ছে কিনা নজরদারি চালাতে কমিটি তৈরির কথাও ভাবছে সরকার।
তবে দেশি পাখি পোষায় লাগাম টানলেও বিদেশি পাখির ক্ষেত্রে কিঞ্চিৎ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। যেমন ম্যাকাও। কেউ পুষতে পারেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে বন দফতরের ছাড়পত্র নিতে হবে। সঙ্গে ফি বাবদ দিতে হবে ১৫ হাজার টাকা। প্রজননের জন্য বিদেশি পাখি বাড়িতে রাখার ছাড়পত্র মিললেও কোনও মেলা বা প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া যাবে না বলে জানা গেছে। বনমন্ত্রীর কথায়, ‘বিদেশি পাখি বাড়িতে পুষতে চাইলে বন দফতরের ছাড়পত্র লাগবে। মেলা বা প্রদর্শনী করা যাবে না। আইন লাগু হলে পুরো ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে’।
কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় পাখির হাট বসে। সে সবও কি বন্ধ হয়ে যাবে? এই প্রশ্নের উত্তরে বনমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘অভিযোগ পেলেই বন দফতর খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে’। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, ‘দেশি পাখি পোষায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইতিমধ্যেই খসড়া আইন তৈরি হয়েছে। এই মাসের শেষের দিকেই তা লাগু হয়ে যেতে পারে’।