দীঘার নাম দীঘা ছিল না, জানেন কী ছিল সেই নাম?
দাপুটে ইংরেজ শাসক ওয়ারেন হেস্টিংস থেকে তাবড়-তাবড় লোকেরা ঘুরে গিয়েছেন এই গ্ৰামে। ইংরেজ আমলে খুব কম লোক আসতেন এখানে।

শুভঙ্কর, কলকাতা: সামনে দিগন্ত জলরাশি। সবুজ আকাশ। হরেক রকমের পাখি। বিকেলে আকাশ জুড়ে ডুবন্ত লাল সূর্য। এটাই দীঘার অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য। তবে এখন এর সাথে যোগ হয়েছে কিছুটা ভিড়। কিন্তু অল্প কদিনের ছুটিতে কাছে পিঠে ঘুরে আসার নাম উঠলেই। মাথায় চলে আসে দীঘার নাম। অল্প খরচে সপরিবারে ঘুরে আসাই যায়। কিন্তু আজকের এই দীঘা এবং ইংরেজের সময়কার দীঘার মধ্যে রয়েছে অনেক তফাৎ। সবাই তো দীঘায় ছুটে যায়। কিন্তু এই দীঘার পুরনো নাম কি ছিল তা কি জানা আছে।
এই দীঘায় এক কালে দাপুটে ইংরেজ শাসক ওয়ারেন হেস্টিংস থেকে তাবড় তাবড় লোকেরা ঘুরে গিয়েছেন। গিয়ে সুনাম করেছেন। তখন স্বাভাবিকভাবে দীঘাতে এত জমজমাটি ভাব ছিল না। সাধারণ মানুষ ফাঁকা সমুদ্রে বেশি ঘুরতেও আসতেন না। তবে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন হেস্টিংস। তা নিয়ে মিস হেস্টিংস চিঠিও লিখেছিলেন তিনি। তখন অবশ্য দীঘার নাম দীঘা ছিল না। দীঘার ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ। ঘন ঘন ঝাউবন। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ দেখে অন্য এক নাম রেখেছিলেন ব্রিটিশরা।
আজ থেকে কয়েক দশক আগে ওয়ারেন হেস্টিংস তৎকালীন দীঘার নাম রেখেছিলেন ‘প্রাচ্যের ব্রাইটন’। দীঘার প্রকৃত নাম ‘বীরকুল’ যা অষ্টাদশ শতকের শেষভাগে জানা যায়। তখনকার ‘বীরকুল’ই এখনকার দীঘা। এছাড়াও ১৯২৩ সালে জন ফ্রাঙ্ক স্মিথ নামে এক ব্রিটিশ ভ্রমণকারী এখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দীঘায় বসবাস শুরু করেন। তার বিভিন্ন লেখা ও চিঠিপত্র আমজনতার মনে দীঘাকে নিয়ে কৌতুহল বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে তৈরি হয় আজকের সমুদ্রনগরী। তারপরে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ড: বিধানচন্দ্র রায় এই জায়গাকে পর্যটন কেন্দ্র করে তোলার বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।