Reopen School-College : লকডাউনের ‘আজব বিধি’, অভিনব পোস্টারে কলকাতার রাস্তায় প্রতিবাদ যুবকের

করোনার কোপে নাজেহাল অবস্থা হলেও রাজ্যে অন্যান্য সমস্ত ক্ষেত্র যেখানে ধীরপায়ে হলেও চলছে সেথানে বারেবারেই খাঁড়া নেমে এসেছে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির উপরে। গত বছরের শেষ লগ্নে সবে মাত্রা খুলেছিল স্কুল কলেজের (Reopen School-College) দরজা কিন্তু তৃতীয় ধাপের কোভিড কোপে ফের শুরু হয়েছে অচলাবস্থা। চলতি বছরের শুরু থেকেই রাজ্যব্যাপী শুরু হয়ে গিয়েছে আংশিক লকডাউন। আর ঠিক কারণেই ফের বন্ধ হয়েছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা। প্রতিবারের ন্যয় এই বারও এক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। এবার তারই প্রতিবাদে ও দ্রুত স্কুল-কলেজ খোলার দাবি অভিনব প্রতিবাদ দেখা গেল কলকাতার রাস্তায়। যাতেই সাড়া পড়ে গিয়েছে সোশ্যাল পাড়ায়।

Reopen School-College :  নেই কোনও বিকল্প পদ্ধতি?

একটি মহামারি পর্বে গোটা দেশ জুড়ে অথবা রাজ্য জুড়ে তালা ঝোলাটা কোনও দিক থেকেই হয়তো সেরকম অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু যখন প্রেক্ষাপটটা ঠিক এইরকম হয় যে, অপরাপর সংস্থাগুলি ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে নিজেদের কার্য নির্বাহ করতে পারে শুধুমাত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ( Reopen School-College ) ছাড়া। সেক্ষেত্রে গোটা বিষয়টিই একটি বৃহৎতর সমস্যা। কারণ, সব কিছুই যদি ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে পরিচালনা করা যেতে পারে তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি কেন নয়? সেগুলিকে সঠিকভাবে চালনার জন্য কেন নেই কোনও বিকল্প পদ্ধতি?- এমনটাই প্রশ্ন রাজ্যে অনেকাংশের মানুষের।

Reopen School-Collegeআর এই প্রশ্নগুলি নিয়েই পথে বিক্ষোভে নেমেছে রাজ্যেরই এক যুবক। প্রতিবাদী এই যুবকের সোহানু ঘোষ। তার অভিনব প্রতিবাদের পন্থা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ( Social Media ) শুরু ব্যাপক চর্চা। সম্প্রতি নিউ মার্কেট চত্বরে তাঁকে দেখা যায় একটি পোস্টার হাতে। আর সেই পোস্টারেই ছিল নয়া চমক। আদপে সাধারণ তথ্য তুলে ধরে লকাডাউনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলেও সরকারি ভাবে লকডাউনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছিল পোস্টারের মূল সুর। সেই সঙ্গে বহু প্রচারিত একটি বাংলা ‘স্ল্যাং’-এর ব্যবহারই নাড়িয়ে দিয়েছে সকলকে। এর পক্ষে-বিপক্ষে উঠে এসেছে নানা মতামত। সম্প্রতি “দ্যা বেঙ্গলি ক্রোনিক্যাল”-এর সঙ্গে বিশেষ ফোনালাপে সরকারের এই আত্মশাসনের ( West Bengal Lockdown ) বিরুদ্ধে একাধিক বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সোহানু। রাস্তায় আন্দোলনে নামার পরিকল্পনা কীভাবে এই প্রশ্ন করা হলে উত্তরে তিনি জানান, ‘বিগত কয়েক বছরে বাঙালির রাজনৈতিক ভাবনায় পরিবর্তন ঘটেছে ভীষণভাবে। মানুষের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া প্রতিবাদকে জাগাতেই রাস্তায় নামা। মানুষ আজ থেকে ৫০ বছর আগে যেভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতো সেই মানুষই আজ অনেকটা ঘুমিয়ে গেছে। তাঁদের জাগাতেই আমার এই রাস্তায় নামা।’

Reopen School-College : রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে কী বললেন সোহানু

পাশাপাশি তাঁর এই অভিনব আন্দোলনের তাঁর কোনও সঙ্গী আছে কি না জিজ্ঞেস করা হলে সোহানু জানান, ‘অনেকেই একটি প্রশ্ন বারংবার করেছে আমার পিছনে কোনও সংগঠন আছে কি না। কিন্তু সত্যি বলতে, আমি একজন নিরপেক্ষ ব্যাক্তি। কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের বাইরে বেরিয়ে সাধারণ মানুষের জন্যই আমার এই লড়াই। তবে এদিনের আমার এই একার আন্দোলন পরিণত হয়েছে দুইয়ে। আমার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও একজন ব্যাক্তি। আশা করছি পরবর্তী ক্ষেত্রে তাঁকেও আমার সঙ্গেই দেখা যাবে পথে।’ তাঁর এই পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নামার ছবি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হয়েছে হু হু করে। একপ্রকার ভাইরাল হয়ে গেছেন সোহানু। এই পরিস্থিতি মানুষের কাছ থেকে কিরকম প্রতিক্রিয়া পেলেন সেই বিষয়ে জিজ্ঞেস করাতে তিনি জানান, ‘সাধারণ মানুষের তরফে দুর্দান্ত প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। আমার মূল বক্তব্যকে বহু মানুষ সমর্থন করেছেন। আমি রাস্তায় নেমে বুঝেছি জে, সরকারের এই আত্মশাসনের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার সিধান্তে বহু মানুষ অসন্তুষ্ট। আমি যখন মানুষের মনের মধ্যে চলা অসন্তোষকে তুলে ধরলাম, তখন অনেকেই আমাকে সমর্থন জানাল।’

Reopen School-College : নজরে আগামীর আন্দোলন

প্রতিটি বিক্ষোভ কিংবা আন্দোলনের থাকে আগামী পরিকল্পনা। পরবর্তী পরিকল্পনা ছাড়া কোনও আন্দোলনই সম্পূর্ণ হতে পারে না। এই পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর আগামী পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে সোহানু জানান,আগেই বলেছি আমার পিছনে কোনও সংগঠন নেই। আমি একজন নিরপেক্ষ ব্যাক্তি যে জনগণের কথা তুলে ধরি। এই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী পরিকল্পনা বলতে একটিই তা হল, মানুষের দাবি নিয়ে আবার রাস্তায় নামা। পাশাপাশি, সাধারণ মানুষকেও নামার জন্য উদ্বুদ্ধ করা।’

আরও পড়ুন : West Bengal- “এগিয়ে বাংলা” বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহে শীর্ষে, ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পকে স্বীকৃতি কেন্দ্রের

 




Leave a Reply

Back to top button