saraswati pujo : বাগদেবী শুধুই নয় বিদ্যার দেবী, বিভিন্ন রূপে জেনে নিন সরস্বতীকে

প্রত্যুষা সরকার, কলকাতা: প্রতিবছর মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আরাধনা করা হয় বিদ্যার দেবী সরস্বতীর ( saraswati pujo )। বসন্তকালে এবং পঞ্চমী তিথিতে অনুষ্ঠিত হয় বলে এটিকে বসন্ত পঞ্চমী ও শ্রীপঞ্চমীও বলা হয়। এদিন সকাল সকাল আয়োজন করে স্কুল- কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের বাড়িতেই বিদ্যার দেবী সরস্বতীর আরাধনা ( saraswati pujo ) করা হয়। প্রচলিত অর্থে সরস্বতী দেবী হলেন বিদ্যার দেবী। তবে তিনি কি শুধুই বিদ্যার দেবী? আসুন জেনেনিন সেই তথ্যই
saraswati pujo: পুরান মতে দেবী সরস্বতী
পুরাণ অনুযায়ী দেবী স্বরস্বতীর উত্থান সৃষ্টিকর্তার ব্রহ্মার মুখ থেকে। দেবীর সকল সৌন্দর্য ও তৃপ্তির উৎস মূলত ব্রহ্মা। আবার ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী দেবী সরস্বতী হলেন ব্রহ্মার পত্নী। সরস্বতী বাগদান করেন বলেই তিনি বাগদেবী ( saraswati pujo ) তার অপর নাম বাণী ভারতি। বাঘ ও বিদ্যা দান করার জন্যই তিনি বিদ্যার দেবী নামেই পরিচিত। পুরান মতে জ্ঞান হল নিরাকার ও জ্যোতির্ময়। আবার জ্ঞানী পরম ব্রহ্ম। তাই কোন বস্তুর রং নেই সবকিছুই রং বিহীন, শুধু সাদা। দেবী স্বরস্বতী ( saraswati pujo ) চতুর্ভূজা।
saraswati pujo: দেবীর সরস্বতী রূপ
গোটা বাংলা ( bangal ) জুড়ে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে পূজিত হন দেবী সরস্বতী ( saraswati pujo )। ডিবির গায়ের রং চাঁদ এবং তুষারের মতো শ্বেতশুভ্র। পরনে সাদা শাড়ি সাদা রঙের অলংকার দ্বারা শোভিত। তিনি শ্বেতপদ্মাসনা, শ্বেত-পুষ্পাশোভিতা , শ্বেতচন্দনচর্চ্চিতা। দেবী স্বরস্বতী চতুর্ভূজা। একটি হাতে অক্ষমালা, একটিতে বিনা একটিতে বই এবং আরেকটি হাতেই দেবী আশীর্বাদ প্রদান করেন।
saraswati pujo: দেবী সরস্বতীর বাহন
প্রচলিত অর্থে দেবী সরস্বতীর বাহন হিসেবে হাঁসকেই দেখা যায় দেবীর সাথে। কিন্তু দেবীর বাহন হিসেবে ময়ূর এবং হাঁস দুটোই বহুল প্রচলিত। ময়ূর সৌন্দর্যের প্রতীক এবং হাঁস হল পরমহংস। যে দুধ এবং জল মিশিয়ে দিলেই তার মধ্যে থেকে দুধটুকু আলাদা করে পান করতে পারে। অর্থাৎ জ্ঞানের তত্ত টুকু আয়ত্ত করতে পারে। তাই বিদ্যার দেবী স্বরস্বতীর পাশে বাহন হিসেবে হংসরাজকেই পুজো ( saraswati pujo ) করা হয়।
saraswati pujo: নীল সরস্বতী
দ্বিতীয় মহাবিদ্যালয় তারা অর্থাৎ মা কালীর নাম নীল সরস্বতী। দেবী মাতঙ্গী কেবল মা সরস্বতী তান্ত্রিক রূপ। মা তারা এবং দেবী স্বরস্বতীর মিলিত হয়ে সৃষ্টি হয়েছে নীল সরস্বতী ( saraswati pujo )। এই দেবী তন্ত্রসাধনার দেবী হিসেবে পূজিত হন। তন্ত্রসাধক তার কাছেই নীল সরস্বতী পুজো ( saraswati pujo ) তন্ত্রসাধনার এক মহোৎসব।
saraswati pujo: মহাসরস্বতী রূপ
দুর্গাপূজার সময় যে শ্রী শ্রী চন্ডীপাঠ করা হয় সেখানে দেবী দুর্গার কোন উল্লেখ থাকে না। যে তিন দেবীকে স্মরণ করা হয় তারা হলেন মহাকালী, মহালক্ষী এবং মহাসরস্বতী। তুমি মহা সরস্বতী চতুর্ভূজা এবং ত্রিনিত্রি। বাংলা বাদে বাকি ভারতের সর্বত্রই দেবী সরস্বতীকে মহাসরস্বতী রূপে পুজো ( saraswati pujo ) করা হয়।
saraswati pujo: জলের দেবী
হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বঙ্গীয় শব্দকোষ অনুসারে সরস্বতী কথাটির অর্থ সমুদ্র বা নদী বিশেষ। অন্যদিকে ঋকবেদের অধিকাংশ জায়গায় সিন্ধু নদ অর্থে ‘সরস্বতী’ কথাটি ব্যবহার করা হয়েছে। অনেক স্থানে আবার সরস্বতীকে ‘ দেবনদী ‘ বলে উল্লেখ করা আছে। অর্থাৎ যিনি সহজ ভাবে প্রবাহিত হয় তিনি সরস্বতী ( saraswati pujo )। এই অর্থে দেবী সরস্বতী আবার জলের দেবী। দেবী স্বরস্বতীর বৈদিক রূপ এই নদীর রূপ। ভারতের উত্তরে হিমালয় পর্বতের প্রয়োগের ত্রিবেণী তে গঙ্গা-যমুনা সাথে সরস্বতী নদীর প্রবাহমান। যদিও সেখানে সরস্বতী নদী দেখা যায় না।