নতুন বছরে সঙ্গীতের জগতে যেন লেগেছে মড়ক, কারা কারা ছেড়ে গেলেন আমাদের

বছরের প্রারম্ভেই সংগীত জগতের নামি সঙ্গীতজ্ঞরা( singers )বিয়োগ হচ্ছেন একে একে। কালের বদলের সাথে সকলের সঙ্গীতের রুচি( music taste ) বদলেছে ঠিকই। তবে ‘ওল্ড ইজ গোল্ড’। মানুষ ভোলেনি তাঁদের যারা এক কালে সুরের মাধ্যমে মাতিয়ে রেখেছিল এই গোটা ভারতকে। মৃত্যু ছিনিয়ে নিয়েছে সেই সমস্ত পুরনো দিনের কালজয়ী শিল্পীদের যারা সকলের মননে বিরাজমান যুগের পর যুগ ধরে। আসুন জেনে নেওয়া যাক কারা ছেড়ে চলে গেছেন সঙ্গীত জগৎ( Singers ) সহ পৃথিবীর মাটিকে( Earth )।

লতা মঙ্গেশকর

Singers

খুব অল্প বয়সেই তিনি সঙ্গীত জীবনে প্রবেশ করেছিলেন। গানের জগৎ জোড়া খ্যাতির জন্য তাঁকে কোকিল কণ্ঠী বলা হয়। জীবিত অবস্থায় পেয়েছেন ‘ভারতরত্ন’, ‘পদ্ম বিভূষণ’, ‘পদ্মভূষণ’, ‘দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার’-এর মতন একাধিক সম্মান। প্রায় ৩০ হাজার গান গেয়ে বিশ্বজোড়া রেকর্ড করেছিলেন তিনি। এছাড়াও বাংলা, হিন্দি, মারাঠি-সহ প্রায় ৩৬টি ভারতীয় ভাষায় গান গেয়েছেন লতা মঙ্গেশকর। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন লতা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। এই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়

Singers

বাংলা গান আর শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের জগতের এক নামি শিল্পী ছিলেন তিনি। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের প্রথম শিক্ষাগুরু ছিলেন যামিনী গঙ্গোপাধ্যায়। ছয় বছর তাঁর কাছে তালিম নেওয়ার পর সন্ধ্যা গান শেখা শুরু করেন বড়ে গুলাম আলি খানের কাছে। এরপর শুরু হয় তার গানের জগতে পথচলা । একের পর এক হিট সিনেমার গান আসে তার। সিনেমার গানের পাশাপাশি লোকসঙ্গীত, কীর্তন, ভজন, রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং নজরুলগীতিও গেয়েছেন তিনি। জীবিত অবস্থায় পেয়েছেন বঙ্গবিভূশনের মতন বহু সম্মান। কোভিড তার জীবন কেড়ে নেয়। এবং ১৫ ফেব্রু‌‌য়ারি তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯০। এই গায়িকার মৃত্যুর পর সুরের নগরীতে সন্ধ্যা শেষে ঘোর রাত্রি নামে।

বাপ্পী লাহিড়ী

Singers

ভারতীয় চলচ্চিত্রের জগতে গত শতকের আটের দশকে পপ-ডিস্কো গানের যে জোয়ার এসেছিল তাঁর অন্যতম মূল নেপথ্যে ছিলেন বাপ্পি। ৩ বছর বয়স থেকে তবলা বাদক হিসেবে কেরিয়ার শুরু হয় তাঁর। সুরকারের সাথে সঙ্গীত শিল্পী দুই পদেই তিনি নাম করেছেন প্রচুর। এমনকি তিনি প্রথম ভারতীয় যার নাম লেখা রয়েছে গ্রিনিস বুকে। বাপ্পি লাহিড়ির গাওয়া সিনেমার প্রত্যেকটি গান হয়েছিল হিট। তার করা গান রিলিজের পরই দর্শক লুফে নিত সেই গান। কিন্তু এত খ্যাতি এত নামের মাঝেই তার ধরা পড়ে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনি সহ বিভিন্ন শারীরিক রোগ। তাই শেষ রক্ষা আর করা যায়নি । মাত্র ৬৯ বছর বয়সে ১৬ ফেব্রুয়ারি আমাদের ‘ ডিস্কো কিং ‘ পরলোক গমন করেন।

অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

Singers

ছয়ের দশকে এক শ্রেষ্ঠ সুরকার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময় একের পর এক সুপার হিট নিজের তৈরি গান ও সিনেমার গানের মধ্য দিয়ে তিনি বাংলা সংগীত জগতে নিজের স্থান পাকা করে নিয়েছিলেন। গীতিকার-সুরকার সলিল চৌধুরীর ছাত্র ছিলেন তিনি। ‘এখনও তো সারেঙ্গিটা বাজছে’, সুবীর সেনের ‘নয় থাকলে আরও কিছুক্ষণ’ সহ বহু কালজয়ী গান সৃষ্টি করেছিলেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও গলা মিলিয়েছেন মান্না দে সহ সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের সাথেও। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তবে শেষ অব্ধি ভাষা দিবসের দিন সারেঙ্গী ফেলে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন হাসপাতালেই। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল নব্বই।

আরও পড়ুন : Gangubai Kathiawadi: লাল শাড়িতে বাংলার গাঙ্গুবাঈ, বিড়ির বদলে দাঁতের ফাঁকে টুথপিক গুঁজেছেন Trina Saha




Leave a Reply

Back to top button