জীবনে সায়েন্সই শেষ কথা নাকি, আর্টস কমার্সের সমান গুরুত্ব আছে, Anchor এর প্রশ্নের সপাট জবাব সৌভিকের

মাধ্যমিক কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক মেধাতালিকায় নাম ওঠা পড়ুয়াদের প্রতিবছরই  গেরিলা বাহিনীর মতো ঘিরে ধরে মিডিয়া। জানতে চায় তাঁদের সফলতার চাবিকাঠি। শুনতে চায় আগামী দিনের পথ নির্বাচনের কথা। কেউ দেখেছে  ডাক্তার হওয়ার  স্বপ্ন, কেউ বা দেখেছে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। দিন শেষে ভালো নম্বর নিয়ে কিংবা ভালো নম্বর না পেয়েও পারিপার্শ্বিক চাপে মাধ্যমিকের পর বেশিরভাগ পড়ুয়াই ঝুঁকেছে সায়েন্সের দিকে। কিন্তু আখেরে যে কতজন তাঁর মধ্যে লাভ করতে পেরেছে এই নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে এই সব কিছুর থেকেই উর্দ্ধে গিয়ে নিজের চিন্তাভাবনাকে স্থান দিয়েছে সৌভিক দাস। এ বছরের উচ্চমাধ্যমিকে অষ্টম স্থান অধিকার করেছে চেতলা বয়েজ হাই স্কুলের ছাত্র সৌভিক। 

মেধাতালিকায় নাম উঠতেই হইচই পড়ে যায় তাঁকে নিয়ে। মিডিয়া ছেঁকে ধরে তাঁকে। সৌভিক ডাক পায় এক সর্বভারতীয় টিভি চ্যানেলে। নিজের ব্যাক্তিগত জীবন ও পড়াশোনা নিয়ে কথা বলতেই আর পাঁচ জন মেধাবীদের পাশাপাশি ডাকা হয় তাঁকেও। সেখানেই সাংবাদিক তাকে সায়েন্স না নেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করলেই নিজের চিন্তাভাবনাকে তুলে ধরে সৌভিক। এদিন সে বলে, “জীবনে সায়েন্সই শেষ কথা নয়। কমার্সেরও যেমন সমান মূল্য আছে, আর্টসেরও সেরকম সমান মূল্য আছে।”

souvik das

সৌভিকের মন্তব্য যেন মন ছুঁয়েছে শিক্ষামহলের। অনেকের মতে, তাঁর এই ধারণাই আগামী দিনে মানুষের মননে শিক্ষা নিয়ে বিপ্লব আনবে। একাংশের মনোবিদদের মতে, ‘আজকাল অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের উপর নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে পছন্দ করেন। কোনও পড়ুয়ার সায়েন্স ভালো লাগে না, কিন্তু তা সত্ত্বেও তাকে সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। এমন ঘটনা হামেশাই দেখা যায়। যার ফলে একটা সময় পর সেই পড়ুয়া নিজের জীবনের কাছেই হেরে যায়। আত্মঘাতী হয়ে পড়ে সে।’ সৌভিকের এই চিন্তাই হয় তো আগামীর ধারাকে বদলাবে, বলে মত অনেকের। 

higher secondary

প্রসঙ্গত, এদিন উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল নিয়ে বেশ আশাবাদী ছিল। সেই কারণে কোথাও রেজাল্ট বের করতে না গিয়ে বাড়িতেই টিভি পর্দায় নজর লাগিয়ে বসেছিল সে। আশা ছিল দশের মধ্যে থাকবে সে। আর সেই আশাই পূরণ হল আজ। সৌভিকের ইচ্ছা CA হবে সে। সেই জাহির করতে গিয়েই সায়েন্স, আর্টস নিয়ে তাঁর মনের কথা বলে ফেলল সৌভিক। উচ্চ মাধ্যমিকে ৪৯১ পেয়ে অষ্টম স্থান অধিকার করেছে সে। আগামী দিনের জন্য আপাতত প্রস্তুত সে। তবে CA হওয়া ছাড়াও তাঁর মনের কোণে অনেক আগেই বাসা বেঁধেছে আরও একটি সুপ্ত বাসনা। তা হল ডিফেন্সে যোগ দেওয়ার। স্বপ্নের নেপথ্যে থাকা কারণ সে জানে না। শুধু জানে স্বপ্ন সত্যি করতে নিজেকে পরিণত করতে হবে অ্যাথালিটে। আর সেই অদম্য ইচ্ছার জোরেই আজ মেধাবী ছাত্রের পাশাপাশি সে একজন দক্ষ অ্যাথলিটও।




Leave a Reply

Back to top button