কালী পুজোয় সেজে উঠেছে তারাপীঠ,স্বর্ণালঙ্কারে সাজানো হচ্ছে মা তারাকে
দীপান্বিতা অমাবস্যায় সাজো সাজো রব, পুজোর প্রস্তুতি তারাপীঠ-কঙ্কালীতলায়

তারাপীঠের বিশ্বাস অনুযায়ী, সকলের ঊর্ধ্বে মা তারা। তাই তারাপীঠে তারা ভিন্ন কোনও দেবীমূর্তি পুজোর প্রচলন নেই। মা তারাকে সামনে রেখেই সমস্ত দেবীর পুজো করা হয় সিদ্ধপীঠ তারাপীঠে। অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রথম দশক থেকে এই প্রথা চলে আসছে। কার্তিকী অমাবস্যার রাতেও তাই মা তারাকেই শ্যামা রূপে পুজো করা হয়। এ দিন মায়ের নিত্য পূজার্চনার পাশাপাশি শ্যামা রূপে মায়ের বিশেষ আরাধনা হয়।আজকে কালীপুজোর রাতে মা তারাকে স্বর্ণালঙ্কারে রাজরাজেশ্বরী বেশে সাজানো হবে। আর এই রাজ রাজেশ্বরী বেশে মা তারাকে দেখার জন্য ইতিমধ্যেই তারাপীঠ দর্শনার্থীদের ভিড় শুরু করেছে।দর্শনার্থীদের জন্য আজকে তারাপীঠে ছোট বড় লজ গুলি ঝকঝক করছে দীপাবলীর আলোর রোশনাই।
এ দিন আর পাঁচটা দিনের মতো মা তারাকে ভোর বেলা স্নান করানো হয়। তারপর অষ্টধাতুর মুখাভরণ, মুণ্ডমালা, মুকুট, সোনার অলঙ্কার, শোলা ও ফুল মালা দিয়ে শ্যামা রূপে সাজানো হয়। শুরু হয় মঙ্গলারতি। মায়ের প্রথম পুজোর সঙ্গে দেওয়া হয় শীতলা ভোগ। নিত্য নিয়ম মেনে এ দিনও মায়ের নিত্যভোগ হয়। সন্ধ্যারতির আগে মা’কে নতুন করে ফুল মালা দিয়ে সাজানো হয়। তারাপীঠ মন্দির এর পুরোহিত গোলক মহারাজ জানান, আজকে মা তারার জন্য বিশেষ ভোগের আয়োজন করা হয়েছে। এরই সঙ্গে ১৫ জন পুরোহিত মোতায়ন করা হয়েছে অতিরিক্ত ভোগ রান্না করার জন্য যাতে তারাপীঠ মন্দিরে আগত সমস্ত দর্শনার্থীরা সামান্য হলেও ভোগ গ্রহণ করতে পারেন।পাশাপাশি তিনি আরও জানান, “শ্যামা পুজোর শুভক্ষণে নাটোরের পুরোহিত এবং মন্দিরের পালাদার সেবাইত পুজোয় বসেন। একদিকে চলে চণ্ডীপাঠ অন্যদিকে চলে পুজো। পুজো শেষে মায়ের আরতির পাশাপাশি দ্বিতীয়বার ভোগ নিবেদন করা হয়। ভোগে পোলাও, খিচুড়ি, মাছ, মাংস, ভাজা মিষ্টি, পায়েস দেওয়া হয়।”
মন্দির কমিটির সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এ দিন কালী পুজো উপলক্ষে সেবাইতদের বাড়ির মেয়েরা মন্দিরের চারিদিক মাটির প্রদীপ জ্বালিয়ে আলোকিত করে তোলেন।” সারারাত মোমবাতি আর মাটির প্রদীপে আলোকময় হয়ে থাকে শ্মশান চত্বর। কেউ কেউ শ্মশানের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দ্বারকা নদীতে প্রদীপ ভাসিয়ে সংসারে সুখ সমৃদ্ধি কামনা করে। রাতভোর চলে যজ্ঞ। শ্মশানের বিভিন্ন জায়গায় সাধু সন্তরা ভক্তদের মঙ্গল কামনায় যজ্ঞ করে থাকেন। কালী পুজো উপলক্ষে ছাগল বলি দেওয়া হয়। বহু ভক্ত মানত করে বলি দিয়ে থাকেন।সারারাত মোমবাতি আর মাটির প্রদীপে আলোকময় হয়ে থাকে শ্মশান চত্বর। কেউ কেউ শ্মশানের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া দ্বারকা নদীতে প্রদীপ ভাসিয়ে সংসারে সুখ সমৃদ্ধি কামনা করে। রাতভোর চলে যজ্ঞ। শ্মশানের বিভিন্ন জায়গায় সাধু সন্তরা ভক্তদের মঙ্গল কামনায় যজ্ঞ করে থাকেন। কালী পুজো উপলক্ষে ছাগ বলি দেওয়া হয়। বহু ভক্ত মানত করে বলি দিয়ে থাকেন।
সকালে থেকেই ভক্ত সমাগম। তারাকে শ্যামা রূপে পুজো দিতে দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন বহু মানুষ। এ দিন সারাদিনই শ্যামা রূপে পুজো। এই বিশেষ দিনে সারা রাত খোলা থাকে মন্দিরের দরজা। কলকাতা থেকে পুজো দিতে আসা পরিতোষ সাহানি, বিশ্বজিৎ দত্তরা বলেন, বিশেষ দিনে পুজো দেওয়ার ইচ্ছে থেকেই তাঁরা এতদূর এসেছেন।