language day: ভাষা দিবসে বাংলার চাপে অস্তিত্বের সংকটে দশটি ভাষা

বাংলা ( Bangla ) ভাষা ও তার শৈল্পিকতা ও সংগ্রাম নিয়ে উচ্ছ্বাস গর্বের অন্ত নেই বাঙালির। তবে তার চাপেই এই বাংলায় ( Bangla ) অস্তিত্ব সংকট অন্যান্য ভাষার মেনে নেওয়া যায় না তাও। বিপুল জনগণের ভাষা হিসেবে একাধিক দেশ ও রাজ্যে সরকারি ভাষার তকমা পেয়েছে বাংলা ( Bangla ) । তবে এই বাংলাতেই রয়েছে এমন অনেক ভাষা যাদের বলার মতন মানুষের সংখ্যা খুবই কম হাতেগোনা।

 

বাংলা ( Bangla ) এবং বাঙালির দাপটে তাই অস্তিত্বের সঙ্কটে এই সমস্ত ভাষা। আজ আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে যখন বেজে উঠছে বাংলা ( Bangla ) ভাষার ডঙ্কা স্বাধীনতা সংগ্রামের উদ্দেশ্যে তখনই ধীরে ধীরে মৃত্যুবরণের মুখে এই সমস্ত ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর বিলুপ্তপ্রায় ভাষা। উত্তর থেকে দক্ষিনে ছড়িয়ে থাকা এমনই কিছু ভাষার মধ্যে পড়ে বিরহোড় ভাষা, যেটি একটি মুন্ডা ভাষা। পশ্চিমাঞ্চলে ছোটনাগপুর মালভূমি অঞ্চলে এই ভাষার প্রচলন আছে। বর্তমানে এই গোষ্ঠীর মাত্র দেড় হাজার লোক আছে।

আরও পড়ুন: Bhopal : তিন বছরের শিশুর চিৎকার শুনেই ছুটে আসলেন মহিলা, শ্রীলতাহানী থেকে বাঁচল ছোট্ট শিশু

এর পরে আছে টোটো ভাষা, নামটা অনেকটা পরিচিত মনে হলেও ভাষা হিসেবে জ্ঞাত নয় এই শব্দটা। পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলায় এই ভাষার প্রচলন আছে। টোটো জনগোষ্ঠীর এই ভাষার ব্যবহারকারী এক হাজারের কিছু বেশি। ধিমাল ভাষা পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলায় নকশালবাড়ি অঞ্চলে প্রচলিত। ভাষাভাষীর সংখ্যা কুড়ি হাজার হলেও পশ্চিমবঙ্গে রয়েছেন মাত্র এক হাজার জন। তবে ভারতের অন্যান্য রাজ্যেও রয়েছেন এই ভাষার ব্যবহারকারী।

কয়া ভাষার নাম বরং বাঙালি সমাজে অধিক পরিচিত। বাংলা সাহিত্যে এর উল্লেখ হয়েছে বহুবার। কয়া ভাষা একটি দ্রাবিড়িয়ান ভাষা। পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়খন্ড সীমান্তে রয়েছে ভাষা প্রচলন। তবে আজকের দিনে এটি প্রায় অবলুপ্তপ্রায়। ঝাড়খণ্ডের কিছু মানুষও এই ভাষার ব্যবহারকারী। শবর জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষা হিসেবে পরিচিত শবর ভাষা। উড়িষ্যা ও ঝাড়খন্ড সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রয়েছে এই ভাষার প্রচলন। তবে বিক্ষিপ্তভাবে পুরুলিয়া এবং মেদিনীপুরেও রয়েছেন কিছু ভাষাব্যবহারকারী। তবে বাংলার চাপে অস্তিত্ব সংকট এই ভাষার।

 

অন্যদিকে হাজং ভাষা হল আবার একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যযুক্ত ভাষা। ইন্দো-আর্য এবং তিবেতো-বর্মান— এই দুই ভাষা পরিবারের সংমিশ্রণে জন্ম হাজং ভাষার। উত্তর-পূর্ব ভারতে এই জনগোষ্ঠীর প্রচুর মানুষ পাওয়া গেলেও পশ্চিমবঙ্গে এদের সংখ্যা কমে আসছে ক্রমশ। বক্তার সংখ্যা ৭২ হাজার। বাংলাদেশের ময়মনসিংহ ও সিলেটে ব্যবহৃত হয় হাজং ভাষা। এছাড়াও অসম, মেঘালয় ও সিকিমেও রয়েছে এই ভাষার প্রচলন।

 

উত্তরবঙ্গের থারু ভাষা হল আরেকটি সংমিশ্রিত ভাষা। আওয়াধি, ভোজপুরি এবং মৈথিলী ভাষার সংমিশ্রণে তৈরি থারু ভাষা। বক্তার সংখ্যা চার লক্ষের কাছাকাছি। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলায় প্রচলন আছে এই ভাষার। মালতো ভাষা হল একটি আদিবাসী ভাষা। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর মালদা ও কোচবিহার জেলায় ব্যবহৃত হয় এই ভাষা। বক্সার সংখ্যা ৮৩ হাজার। রাজমহলী কিংবা রাজবংশী নামেও পরিচিত এই ভাষা। রাজবংশী জনগোষ্ঠীর মাতৃভাষা। রাউতিয়া ভাষা হল একটি সাঁওতালি ভাষা। পশ্চিমবঙ্গের ছোটনাগপুর অঞ্চলে কিছু মানুষ ব্যবহার করেন এই ভাষা। রাউতিয়া ভাষা মূলত রাউতিয়া সম্প্রদায়ের দ্বারা ব্যবহৃত হয়। বাংলা ছাড়াও বিহার ও উড়িষ্যার রয়েছে এই ভাষার প্রচলন।

 

 




Leave a Reply

Back to top button