“মেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিল!” ট্রোলের জেরে প্রাণ দিতে বাধ্য হয়েছিল Amrela গার্ল

একটা ভিডিও তারপরই যেন সব শেষ। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ইংরেজীতে ফেল, তাই তার মতোই অনুত্তীর্ণদের সঙ্গী করে বিদ্যালয়ের সামনেই ধর্নায় বসে নদীয়ার সুদিপ্তা বিশ্বাস। কিন্তু এতটা অবধি হয় তো সব কিছুই ঠিক ছিল। ঝামেলার সূত্রপাত এরপর থেকে। এক সাংবাদিক আমব্রেলা বানান জিজ্ঞাসা করলে, তার উত্তরে সুদিপ্তা যে বানানটি বলে তাতে গোটা মানেটা দাঁড়ায় ‘Amrela’। উচ্চ মাধ্যমিক আন্দোলনকারী ছাত্রী এ হেন ভাষাজ্ঞান দেখে যেন হাসিতে ফেটে পড়ে নেটমাধ্যমে। মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে সেই ভিডিও। সুদিপ্তা বিশ্বাস নয় ‘Amrela গার্ল’ হিসাবে পরিচিতি লাভ করে সে।
ভিডিও রাতারাতি ছড়িয়ে পড়ার জেরে বাইরে বেরোন বন্ধ হয়ে যায় সুদিপ্তার। নদীয়ার একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রী সে। আন্দোলনের মাঝে ভুল বানান ও সামাজিক মাধ্যমের চুল চেড়া বিশ্লেষণের মাঝে পড়ে একেবারে তছনছ হয়ে যায় ছাত্রীর জীবন। শুধুই তরুণী নয়! সমাজের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরাও। টোন টিটকিরির হাত থেকে বাঁচতে ও নিজের পরিবারকে মূল স্রোতে ফেরাতে দুই তিনবার আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন, বলে জানিয়েছে তার পরিবার।
উল্লেখ্য, আপাতত নেটমাধ্যম জুড়ে আমরেলা গার্লের ধারা। তার একটি ভুল উক্তি ও নেটিজেনদের নতুন ঠাট্টার জোগান। মিম থেকে শুরু করে রিমিক্স গান পর্যন্ত সবই তৈরি হয়ে চলেছে আমরেলা গার্লকে কেন্দ্র করে। সুদিপ্তাকে নিয়ে চলা ট্রোলের এই বন্যা দেখে চিন্তিত তার বাবাও। তার দাবি, “মেয়ে ভাল নেই।” এদিন সুদিপ্তার বাবা সুকুমার বিশ্বাস সংবাদমাধ্যমকে জানান, “মেয়ে দু’তিন বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে আমরা চোখে চোখে রাখছি। এখনও কোনও অঘটন ঘটেনি। কিন্তু আমরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। যারা ওই ভিডিও ছড়াচ্ছে তাদের অনুরোধ করছি থামার জন্য।” মেয়ের পরিস্থিতিতে অনেকটাই ভেঙে পড়েছেন তার বাবা। আত্মীয়রাও পাশে নেই বলে জানিয়েছেন সুদিপ্তার বাবা। এছাড়াও, তাঁর সংযোজন, “নিজের আত্মীয়, প্রতিবেশীরা খারাপ মন্তব্য করছেন। পড়াশোনা শেখাতে পারেননি। আমি দেখেছি ইউটিউবে ওই ভিডিওটা। আমব্রেলা বানান করতে পারে না।”
প্রসঙ্গত, সুদিপ্তা এই প্রকার পরিণতির প্রসঙ্গে দুশ্চিন্তা দেখিয়েছেন মনোবিদরা। সোশ্যাল মিডিয়ার অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার এই বিপদ ডেকে এনেছে বলে দাবি অনেকের।আবার অনেকাংশের মতে, একটি স্কুলে শুধু মাত্র ইংরেজী পরীক্ষায় এত জনের ব্যর্থতা প্রশ্ন তৈরি করছে।