কেউ একাধিকবার কোভিড আক্রান্ত, তো কাউকে ছুঁতেও পারেনি করোনা ভাইরাস, জানুন কেন হচ্ছে এমন

রাখী পোদ্দার, কলকাতা : করোনার ( Corona Infection ) এই ভয়ানক তান্ডবে সমগ্ৰ দেশ এখন ঘরে বন্দী। ঘরে ঘরে মানুষ পরছে এই মহামারীর কবলে। একবার কিংবা দুবার নয় কোনো কোনো মানুষ তো তিনবারও আক্রান্ত হচ্ছেন। হয়তো আগেও একবার সংক্রমণ হয়ে যাওয়ার জন্য প্রথমবারের মতো এতো সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে না, কিন্তু তবুও সংক্রমিত হচ্ছেন বলেই জানাচ্ছেন ডাক্তারী মহল। আবার অপরদিকে এমনও বহু মানুষ আছে যারা একবারও সংক্রমিত হয়নি এই কোভিডে। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় কোনো ঢেউই তাঁদের উপর কোনোটি আঁচই ফেলতে পারেনি তাদের জীবনে। কেন তাঁদের করোনা ( Corona Infection ) সংক্রমণ হচ্ছে না, এর কারণটা ঠিক কি?
সম্প্রতি দ্য ইমপেরিয়াল কলেজ অব লন্ডন ( The Imperial College of London ) একটি গবেষণা পত্রে উল্লেখ করেছে এর সম্ভাব্য কারণ। কেন অনেকে একবারও কোভিডে সংক্রমিত ( infected ) হচ্ছেন না, সে কথা বলতে গিয়ে গবেষকরা বলেছেন এর রহস্য লুকিয়ে আছে আমাদেরই শরীরে। মানুষের শরীরেই রয়েছে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বাইরে থেকে যখন কোন রোগজীবাণু শরীরে ঢুকেছে বলে শরীর বুঝতে পারে, তখন সেই জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে আমাদের শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধক প্রতিক্রিয়াগুলি। আমাদের শরীর তখন কিছু রাসায়নিক এবং সাদা রক্ত কোষ ( white blood cells ) তৈরি করে। রক্তের ওই সাদা কোষগুলো সংক্রমিত কোষগুলোকে মেরে ফেলে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের ( corona virus ) ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া কাজ করে না।
বিজ্ঞানীদের মতে কার কোভিড ( Corona Infection) হবে আর কার হবে না সেটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আমাদের শরীরে উপস্থিত টি-সেলসের উপর। রোগ প্রতিরোধ শক্তির পুরোটাই দাঁড়িয়ে থাকে এর উপরেই। কারও কারও ক্ষেত্রে এই টি-সেলস কোভিডকে আটকে দেয়। কীভাবে কাজ করে এই টি-সেলস ( T-cells )? ধরা যাক, কারও জ্বর হল। তাঁর শরীর ওই জ্বরের জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করার পরে সেই জীবাণুটির স্মৃতি টি-সেলসের ( T-cells) মধ্যে জমিয়ে রাখে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই স্মৃতি দুর্বল হতে থাকে। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে এই টি-সেলসের ( T-cells ) স্মৃতি হয় বেশ জোরদার। তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য শরীরে থেকে যায়। তার মধ্যে জ্বরের জীবাণু আবার ঢুকলে সেগুলিকে যেমন আটকে দিতে পারে, তেমন আটকে দিতে পারে করোনার ( Corona ) জীবাণুকেও। দ্য ইমপেরিয়াল কলেজ অব লন্ডনের গবেষণা পত্র থেকে জানা গেছে যাঁদের সাধারণ ঠান্ডালাগা বা জ্বর বিশেষ হয় না, তাঁদের কোভিড তুলনায় কম হচ্ছে।
তবে গবেষক দলের অন্যতম প্রধান অজিত লালবনি ( Ajit Lalbani ) সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, এক্ষেত্রে অবশ্যই আমাদের সকলকে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে : টিকা ( vaccination ) নেওয়াই করোনা ( Corona Infection ) থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার সবচেয়ে ভালো রাস্তা। তবে তার মানেই যে আমি পুরোপুরি নিরাপদ এমন ধরে নেওয়ার কারণ নেই। এখনও পর্যন্ত খুব বেশি মানুষকে নিয়ে এই পরীক্ষাটি করা হয়নি। ফলে এর সত্যতা নিয়ে কিছুটা সংশয় এখনও রয়েছে।