আকাশের প্রত্যাবর্ত্তন, প্রযুক্তিবিদের প্রচেষ্টায় ৩৬ ঘন্টা পর মা ফিরে পেলেন ছেলেকে

রাজকুমার মণ্ডল, কলকাতা : কাকভোর একটি ক্যাব ধরে বাড়ি ফিরছিলেন পেশাগতভাবে নিযুক্ত এক প্রযুক্তিবিদ। হঠাৎই চোখে পড়ে একটি ছেলে আপন মনে আছে বসে আছে একাকী। কনাকাপুরা রোডের পুরানো তালাঘট্টাপুরা থানার বিপরীতে একটি স্কুল ইউনিফর্ম পরিহিত বালক উপবিষ্ঠ। সন্দেহবসত ক্যাব চালককে গাড়ি ঘোরাতে বলেন জনৈক ক্যাব সওয়ার। বছর বারো কি তেরোর বালকের কাছে যেতেই পরিস্কার হল বিষয়টা। কিছু উত্তর দিতেই অক্ষম এই বালক। ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত কিশোরের ( Akash returns ) বিয়টি আঁচ করে স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করেন প্রযুক্তিবিদ শান শানমুগাম অসাধারন প্রচেষ্টা। অনেক কষ্টে জানা গেল কিশোরের নাম আকাশ ( Akash returns ) । এবং দীর্ঘ প্রচেষ্টায় প্রায় ৩৬ ঘন্টা পর নিজেদের হারানো ছেলেকে ফিরে পেল পরিবার। শানমুগাম পেশায় একজন সফ্টওয়্যার ফার্মের টেক ম্যানেজার এবং জুডিশিয়াল লেআউটের বাসিন্দা।
আচমকা রাস্তার ধারে ছেলেটিকে একটি পরিষ্কার ঝকঝকে ইউনিফর্ম পরিহিত বালককে বসে থাকতে দেখে অস্বাভাবিক কিছু মনে হয়েছিল তাঁর। শানমুগামের কথায় “আমার মনে হয়েছিল ছেলেটির সাহায্য দরকার। আমি ড্রাইভারকে ইউ-টার্ন নিতে অনুরোধ করি এবং আমরা ছেলেটির কাছে গিয়ে বুঝতে পারি যে ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত। কথোপকথনে সাড়া দিতে অক্ষম ছেলেটিকে ( Akash returns ) ক্যাবে বসিয়ে এগোতে থাকলাম বাড়ি খুঁজে পাওয়ার আশায়। তবে ঠিকানা জানতে চাওয়ায়, ছেলেটি একবার উত্তর দিয়েছিল ‘সোজা-সোজা’। প্রায় এক ঘণ্টার বেশি গাড়ি চালানোর পর, কোনানকুন্টে থানায় পুলিশের কাছে গিয়ে জানা যায় যে তার নাম আকাশ,” শানমুগাম জানান ব্যাগে ছেলেটির কোনো পরিচয়পত্র খুঁজে বের করার চেষ্টাও করেছিলেন। পুলিশের মাধ্যমে আকাশের পরিচিতি শেয়ার করা হয় ব্যাপকভাবে। অবশেষে পাওয়া যায় আকাশের পরিবারকে। প্রযুক্তিবিদ জানান পুলিশ ছেলেটির স্কুল ইউনিফর্ম সনাক্ত করে আকাশকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার পদক্ষেপের গ্রহন করেন।করে।
আরো পড়ুন সবার ওপরে আদিত্যনাথ, বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে সামনের সারিতে যোগীচর্চা
ডেইরি সার্কেলের কাছে একটি বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন ছাত্রদের স্কুল। সেখানেই পাঠরত আকাশ। আকাশের মা ভারতী সিঙ্গল-মাদার, যিনি মাদিওয়ালায় চায়ের স্টল চালান। ভারতী সকাল ৯টা থেকে উন্মত্তভাবে ছেলেকে খুঁজছিলেন। প্রায় ৩৬ ঘন্টা পর প্রযুক্তিবিদ শানমুগামের প্রচেষ্টায় তার একমাত্র ছেলেকে কাছে পেলেন। ভারতী জানান, “প্রতিদিন আমি আকাশকে ( Akash returns ) সেন্ট জনস হাসপাতালের কাছে ছেলেকে স্কুল ভ্যানে সকাল ৮.৩০ এ তুলে দিয়ে আসি। কিন্তূ মঙ্গলবার,একটু আগেই ভ্যান আসার ১০ মিনিট আগে আমি তাকে ছেড়ে দিয়ে আসি। পরে স্কুল থেকে ফোন পেলাম আকাশ স্কুলে পৌঁছায়নি। আমি সন্দেহ করেছিলাম যে সে কেআর মার্কেট এবং ম্যাজেস্টিকের অন্য কোনো বাসে উঠে পড়েছে। তার পরই নিজের ভাইদের খবর দিই। শুরু হয় আকাশের খোঁজ”। এমনকি ভারতী তামিলনাড়ুর তিরুভান্নামালাই আত্মীয়দেরও ডেকেছিলেন। অবশেষে এক চাকুরীজীবির সুপ্রচেষ্টায় ভারতী ফিরে পেলেন কাছের আকাশকে।