Punjab Assembly Election: পহলে ‘আপ’! পাঞ্জাবের মসনদে কেজরি,ভাগবন্তের বিপুল জয়ের পাঁচকাহন

লখনউ ঘরানার শিষ্টাচার ‘পহলে আপ’ পঞ্জাবে (Punjab Assembly Election) আত্মপ্রকাশ করল। ভোটের লড়াইয়ে সব রাজনৈতিক দলকে আপ তার ‘ঝাঁটা’য় প্রায় সাফ করে দিল। একটা রাজ্যে তিন তিনজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর হার। তার মধ্যে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি হারলেন ২টি কেন্দ্রেই। হার ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের। 

পাঞ্জাবে (Punjab Assembly Election) কংগ্রেসকে কোণঠাসা করে বিপুল জয় আপ-এর। জয়ের পর অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, “বড় বড় রাজনীতিবিদদের আসন আজ নড়ে গেছে। ক্যাপ্টেন, চন্নি, সিধু হেরে গিয়েছেন। পাঞ্জাবে কোনও উন্নয়নের কাজ হয়নি। এখানে উন্নয়নের কাজ করবে আপ ।” 

বাইশের ভোটে ভগবন্ত মানকে মুখ করেই পঞ্জাব (Punjab Assembly Election) জয়ের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল। এবং প্রায় সব বুথফেরত সমীক্ষা সত্যি করে কেজরিওয়ালের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন কৌতুক শিল্পী ভগবন্ত। যদিও রাজনীতিতে রাতারাতি সাফল্য পাননি ভগবন্ত। হবু মুখ্যমন্ত্রীকে আজকের এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে এক দশকেরও বেশি সময়। পঞ্জাবে ‘আপ’ র এই ল্যান্ড স্লাইড ভিক্ট্রির পর সাংবাদিকদের সামনে আপ নেতা রাঘব চাড্ডা জানান, “এবার জাতীয় শক্তি হওয়ার দিকে এগোচ্ছে আমাদের দল। ঈশ্বরের আশীর্বাদে কেজরিওয়াল একদিন দেশকে নেতৃত্ব দেবেন।”

ভোটে ধরাশায়ী পঞ্জাব রাজনীতির (Punjab Assembly Election) পিতামহ ভীষ্ম প্রকাশ সিং বাদলও। আর জয়জয়কার আম আদমি পার্টির। AAP-র এই জয়ে ভারতীয় রাজনীতিতে একটি নতুন অক্ষ খুলে গেল বলা যায়। আপ কিন্তু সেই অর্থে আঞ্চলিক দল নয়! দিল্লিকে ভিত্তি করে মূলত ছোট ব্যাপারী ও প্রান্তিক মানুষের দল। দিল্লির সুশাসনের প্রভাব পড়েছে পঞ্জাবে। এর পাশাপাশি দীর্ঘদিনের কৃষক আন্দোলনে আপ কর্মীদের সদর্থক ভূমিকাও হয়ত তাঁদের পক্ষে কাজ করেছে। তাই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন ভগবন্ত সিং মান। একজন জনপ্রিয় কমেডিয়ান শিল্পী থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

এগজিট পোল থেকেই ইঙ্গিত মিলেছিল। সেই সম্ভাবনাই কাঁটায় কাঁটায় মিলে গেল বৃহস্পতিবার। পাঞ্জাবে (Punjab Assembly Election) কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল কংগ্রেস। দিল্লির পর প্রতিবেশী রাজ্যেও ক্ষমতায় আম আদমি পার্টি তথা আপ। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি দীর্ঘদিন ধরেই দিল্লির বাইরে নিজের জন্য জমি তৈরির চেষ্টা করছিল। অবশেষে দলের সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) সেই স্বপ্ন সত্যি হল। কিন্তু কীভাবে এল এই সাফল্য? কোন অঙ্কে কংগ্রেসকে নাস্তানাবুদ করে পাঞ্জাব জয় আপের (AAP)? রইল কিছু কারণ।

১) দিল্লির ‘কেজরিওয়াল মডেল’-এর সাফল্য একটা বড় ফ্য়াক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল এবারের পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে। সেই যে প্রবাদ ‘ওপারেতে সর্বসুখ’, সেই মানসিকতাই যেন কাজ করেছে ভোটারদের মধ্যে। পাশের রাজ্যে আপের পরপর দু’বার ক্ষমতায় থাকা, কেজরিওয়ালের ক্যারিশমা- এই সব কারণে এবারের নির্বাচনে আপকেই বেছে নিতে চেয়েছেন পাঞ্জাবের ভোটাররা।

২) কংগ্রেস, বিজেপি, অকালি দলের মতো ‘ট্র্যাডিশনাল দল’ নয়, বরং তথাকথিত একেবারেই নতুন দল আপকেই বেছে নিতে চেয়েছেন রাজ্যের ভোটাররা। এই মনোভাবের ফলেই অ্যাডভান্টেজ পেয়েছে আপ।

৩) নির্বাচনের ঠিক আগেই যেভাবে প্রকাশ্যে এসেছে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, তা থেকেই যেন পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল দলের পরিস্থিতি। সেসব দেখেশুনেই যেন জনতা আর ভরসা রাখতে পারল না হাতের উপরে। প্রথমে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং, পরে চরণজিৎ সিং চান্নি- এঁদের সঙ্গে নভজ্যোৎ সিং সিধুর দ্বন্দ্ব চরমে উঠতে দেখা গিয়েছিল। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা ছিল, এর বিরাট প্রভাব পড়তে চলেছে ভোটে। শেষ পর্যন্ত তাই হল। অথচ ভোটের কয়েক মাস আগেও মনে হচ্ছিল, পাঞ্জাবে কিছুতেই হারবে না কংগ্রেস। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই দলীয় কোন্দল কার্যতই ‘আত্মহত্যা’।

৪) কেন্দ্রের বিতর্কিত তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া কৃষক আন্দোলনে সেভাবে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকতে পারেনি কংগ্রেস। বরং দিল্লি সীমান্তে বিক্ষোভরত কৃষকদের পাশে ছিলেন আপ কর্মী-সমর্থকরা। এর ফলে ক্রমশই জনতার বিশ্বাসভাজন হয়ে উঠেছে আম আদমি পার্টি। আর একই ভাবে জনপ্রিয়তা হারিয়েছে কংগ্রেস।

৫) পাঞ্জাবের রাজনীতিতে (Punjab Assembly Election) জাতপাতের রাজনীতির কার্ড খেলে যে লাভ হবে না, সেটা বুঝে উঠতে পারেনি কংগ্রেস। ফলে তারা নানা ভাবে ভোটপ্রচারে এই সংক্রান্ত রাজনীতিরই প্রচার হয়েছে। এটাই ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে ভোটের ফলাফলে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ, খোদ চান্নি দু’টি কেন্দ্রে দাঁড়িয়েও হেরে গিয়েছেন। কাজে আসেনি দলিত কার্ড খেলা।

আরও পড়ুন এই প্রথম কবীরকে নিয়ে অমৃতসর দর্শন, ছেলেকে নিয়ে আবেগে ভাসলেন কোয়েল

আরও পড়ুন  নতুন ব্রহ্মাস্ত্র! উন্নত প্রযুক্তির সান্নিধ্যে প্রতিরক্ষায় আসতে চলেছে দূরপাল্লার ‘ব্রহ্মোস’ 




Leave a Reply

Back to top button