পাঁচ রাজ্যে ভোট ভরাডুবি! সনিয়ার নেতৃত্বেই আস্থা কংগ্রেসের

উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, মণিপুর ও গোয়া— সদ্য শেষ হওয়া পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে কার্যত দুরমুশ কংগ্রেস( Congress )। সেই শোচনীয় হারের পর রবিবাসরীয় বিকেলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার বৈঠকে বসে কংগ্রেস ( Congress ) ওয়ার্কিং কমিটি। বৈঠক শুরুর আগে জল্পনা ছড়িয়েছিল, এ বার হারের দায় নিয়ে হয়তো সভানেত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন সনিয়া গাঁধী। রাহুল বা প্রিয়ঙ্কা নয়, কংগ্রেস ( Congress ) সভাপতি হতে পারেন মুকুল ওয়াসনিক, এমনও শোনা যাচ্ছিল। তবে ম্যারাথন বৈঠকের পর কংগ্রেস ( Congress ) নেতৃত্ব জানালেন, সনিয়াতেই তাঁদের আস্থা অটুট। পাঁচ রাজ্যের ভোট-ফলাফল অবশ্যই তাঁদের ভাবাচ্ছে। কিন্তু তার জন্য নেতৃত্বে কোনও অদল-বদলের কারণ দেখছেন না।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি-র বৈঠকে সনিয়াকেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার অনুরোধ করেন অধিকাংশ নেতা। একটি বিবৃতিতে কংগ্রেস জানায়, রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। সাংগঠনিক স্তরেও পরিবর্তন কার্যকর হবে। তবে সে সবই হবে সনিয়া গাঁধীর নেতৃত্বে। বৈঠকের পর কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সূরজেওয়ালা বলেন, ‘‘বৈঠকে অনেক বিষয়ে খোলাখুলি আলোচনা হয়েছে। সদস্যরা সর্বসম্মত ভাবে স্থির করেছেন সনিয়ার নেতৃত্বে তাঁদের ভরসা আছে। দলের সাংগঠনিক নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত তাঁরই সভানেত্রী থাকা উচিত।’’
কংগ্রেসের ( Congress ) ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন হাত শিবিরের বর্ষীয়ান নেতারা। ডাকা হয়েছিল ৫৭ জন নেতাকে। কিন্তু সেখানে নেই প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী তথা ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য মনমোহন সিং। সূত্র তাই বলছে। জানা গিয়েছে, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই এই বৈঠকে যোগ দেবেন না তিনি।
৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল কোণঠাসা করেছে হাত শিবিরকে। এরপরই ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের ডাক দেন সনিয়া গান্ধী। জানা গেছে বৈঠকে মনমোহন সিং ছাড়াও আরও চারজন বর্ষীয়ান নেতা উপস্থিত নেই। যেই তালিকায় নাম রয়েছে প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী একে অ্যান্টনির। গুঞ্জন শোনা গিয়েছে আজকের এই বৈঠকে আলোচনা হতে পারে পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচনের দিনক্ষণ এগিয়ে আনার বিষয়েও। অন্যদিকে গতকাল সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে দাবি করা হয়, গান্ধী পরিবার কংগ্রেসের সমস্ত দায়িত্ব পথ থেকে সরে দাঁড়াতে পারে।
যদিও সূত্রের খবর, ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সনিয়া জানান, দল যদি মনে করে তবে তাঁরা তিনজনই (সনিয়া, রাহুল ও প্রিয়ঙ্কা) নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। কিন্তু সনিয়ার এই প্রস্তাব সবিনয়ে সরিয়ে তাঁকেই নেতৃত্বদানের অনুরোধ করেন কংগ্রেস নেতারা। জানা গিয়েছে,পাঁচ রাজ্যের ভোটে হেরে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট রাজ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছন। বৈঠকে রাহুল গাঁধী জানিয়েছেন, এ বার রাজ্যভিত্তিক রাজনৈতিক কৌশল নিতে হবে তাঁদের। প্রিয়ঙ্কা জানান, ফলাফল যে তাঁদের পক্ষে যাবে না, সেটা অনুধাবন করেছিলেন। কিন্তু এতটা খারাপ ফল হবে আশা করেননি। সূরজেওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, এর পর রাহুলই কংগ্রেস সভাপতি হবেন কি না। জবাবে তিনি জানান, ‘‘হ্যাঁ। প্রত্যেক নেতা চান রাহুল গাঁধী এগিয়ে আসুন এবং দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিন। তবে নির্বাচন হলেই এ সব নির্ধারণ হবে।’’
যদিও বা পরে সংবাদমাধ্যমের এই খবরকে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের ( Congress ) মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা জানিয়েছেন, এই খবর মিথ্যে। এর আগে নির্বাচনে ভরাডুবির পর, কংগ্রেস ( Congress ) শিবিরে নিজেদের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ভেবেছিল গান্ধী পরিবার। ২০১৪-তে নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপির কারণে একেবারে নিঃশেষ হতে বসেছিল হাত শিবির। এরকমই কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কথা উঠেছিল, সনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর পদ ছাড়ার।
কিন্তু সেই সময় গান্ধী পরিবারকে পদত্যাগ করতে বারণ করেছিলেন ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যরা। আজও সেরকমই একটি বৈঠক। কিন্তু তাতে উপস্থিত থাকবেন না মনমোহন সিং ছাড়াও দলের আরও চারজন বর্ষীয়ান নেতা। এমনিতে জানা গিয়েছে, তিনদিন আগেই সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে একে অ্যান্টনি জানিয়েছিলেন যে, নির্বাচনী রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াতে চান তিনি। ভোটের ময়দান থেকে সরে দাঁড়ানোর আর্জি জানানোর পর, এবারে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে একে অ্যান্টনির অনুপস্থিতি অনেকের কাছেই তাৎপর্যপূর্ণ লাগছে।
আরও পড়ুন কিয়ারার প্রেমে হাবুডুবু সিদ্ধার্থ, জুটির ভালোবাসা দেখে মজেছে নেটিজেনরাও
আরও পড়ুন Hijab Controversy : হাইকোর্টের রায়ে মন ভারী পড়ুয়াদের, বিতর্ক থামাতে দমতে হল তাদেরই