ভোটমুখী গুজরাটের শিক্ষাকেন্দ্রে বাধ্যতামূলক ভগবত গীতা, সিদ্ধান্ত সমর্থন আপ-কংগ্রেসের

দেশের প্রথম রাজ্য হিসাবে স্কুল পাঠক্রমে ভগবত গীতাকে ( Bhagavad Gita) যুক্ত করে ফেলল গুজরাট সরকার। এবার থেকে গুজরাটের ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সিলেবাসের অংশ হিসাবে পড়ানো হবে হিন্দু ধর্মগ্রন্থ (Bhagavad Gita)। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় এ নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেছেন গুজরাটের শিক্ষামন্ত্রী জিতু ভাগনানী। ওই খসড়ায় আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার থেকে গুজরাটে প্রথম শ্রেণি থেকেই ইংরাজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক।

এবার বাংলা, অঙ্ক, ইংরাজির সঙ্গে রাজ্যের সমস্ত স্কুলেই পড়াতে হবে ভগবত গীতা  (Bhagavad Gita)। খসড়ায় বলা হয়েছে, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সিলেবাসে গীতার  (Bhagavad Gita) বিভিন্ন অংশ কবিতা, শ্লোক বা গল্পের আকারে পড়ানো হবে। মূলত গুজরাটি বা অন্য প্রথম ভাষার মধ্যেই জুড়ে দেওয়া হবে এই অংশগুলি। আবার বিভিন্ন মনিষীদের জীবনী পড়ানোর সময় তাঁরা গীতাকে কীভাবে দেখতেন সেসবও বর্ণনা করা হবে। অষ্টম শ্রেণির পর থেকে আরও বিস্তারিত পড়ানো হবে গীতা  (Bhagavad Gita)। বৃহস্পতিবার এমনটাই ঘোষণা করল গুজরাট সরকার  (Gujarat Government। এদিন রাজ্য সরকারের তরফ থেকে নতুন শিক্ষানীতি প্রকাশ করা হয়েছে। আর তাতেই দেখা গিয়েছে যে প্রতিটি সরকারি স্কুলে বাধ্যতামূলকভাবে চালু করা হচ্ছে এই সমস্ত নিয়ম।

গুজরাট সরকারের (Gujarat Government) যুক্তি পড়ুয়াদের গীতা পড়ানো হলে, তাঁরা ভারতীয় সভ্যতা, সংস্কৃতি সম্পর্ক ওয়াকিবহাল হবে। ভারতীয় সমাজব্যবস্থা এবং সামাজিক আদর্শ ছোটবেলা থেকেই আত্মস্থ করতে পারবে। শিক্ষামন্ত্রী জিতু ভাগনানী বলছেন,”ভগবত গীতার শিক্ষা, মতাদর্শ এবং গুরুত্ব জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলেই গ্রহণ করেছেন। আর এটাকে সিলেবাসে এমনভাবে পড়ানো হবে যাতে পড়ুয়াদের মধ্যেও আগ্রহ তৈরি হয়।”

চমকপ্রদভাবে গুজরাট সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করার সাহস কোনও রাজনৈতিক দল দেখায়নি। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস (Congress) বলছে,”আমরা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু গুজরাট সরকারের নিজেদেরও উচিত গীতা থেকে শিক্ষা নেওয়া। গীতাতেই বলা আছে, কোনও সমস্যার সমাধান করতে হলে সবার আগে সমস্যাটা মেনে নিতে হবে। কিন্তু গুজরাট সরকার সেটা মানছে না। আজ রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা আজ বেহাল। রাজ্যের ৩৩ হাজার স্কুলের মধ্যে মাত্র ১৪টি স্কুল A+ গ্রেডের। ১৮ হাজার শিক্ষকের পদ শূন্য। ৬ হাজার স্কুল পুরো বন্ধ।” সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আম আদমি পার্টিও (Aam Aadmi Party)।

গুজরাট সরকারের প্রকাশিত শিক্ষানীতি অনুসারে জানা যাচ্ছে, ছাত্রদের নীতি এবং মূল্যবোধ সম্পর্কে শিক্ষা দিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যেই সরকারের তরফ থেকে এই বিষয়ে একটি বিবৃতি জারি করেছে গুজরাট সরকার। যেখানে বলা হয়েছে, ‘গীতার উপর একটি ডিবেট প্রতিযোগিতা, শরলোক সংগীত এবং সাহিত্যেরও আয়োজন করা হবে, যাতে স্কুলের শিশুরা গীতার জ্ঞান ও মূল্যবোধ জানতে পারে।’

উল্লেখ্য, দেশের ৫ রাজ্যের মতো গুজরাটেও কার্যত বেজে গিয়েছে বিধানসভা নির্বাচনের দামামা। সূত্রের খবর, এই বছরের শেষের দিকে অর্থাৎ ২০২২ সালের নভেম্বর কিংবা ডিসেম্বর মাসেই হতে পারে গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচন। কারণ চলতি সরকারের কাজের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই যে কোনও প্রকারে এই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। সেকথা মাথায় রেখেই ঠিক বিধানসভা নির্বাচনের আগে আগেই শিক্ষাক্ষেত্রে এমন পরিবর্তন আনল গুজরাটের বিজেপি সরকার। এবার এই সিদ্ধান্ত বিজেপি সরকারের পক্ষে যাবে নাকি বিপক্ষে সেটা বলবে সময়।

আরও পড়ুন রাশিয়ার বিমান হামলাই ভেঙে পরেছে থিয়েটার, আটকে পরেছে শত শত লোক

আরও পড়ুন পুতিনের যুদ্ধ অপরাধী কাজ অব্যাহত, ইউক্রেনকে বিদ্যুৎ ছিন্ন করতে তৎপর




Leave a Reply

Back to top button