মাদক চকোলেটের নেশায় বুঁদ শিশুরা, চিন্তার ভাঁজ অভিভাবকদের কপালে
চকোলেটে গাঁজা মিশিয়ে বিক্রির অভিযোগ কর্নাটকের মেঙ্গালুরুতে । শিশুরা চকলেট না পেয়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলেই সন্দেহ অভিভাবকদের। পুলিশি অভিযানে উদ্ধার ১২০ কেজি মাদক মেশানো চকোলেট। গ্রেফতার দুই দোকানের মালিক।

শুভঙ্কর, ম্যাঙ্গালুরু: চকোলেট নেবে গো চকোলেট। এই সুস্বাদু খাবারটি পছন্দ করে না এমন কোনও বাচ্চা নেই। এমনকি অনেক প্রাপ্ত-বয়স্করাও চকোলেট খেতে পছন্দ করেন। অভিভাবকরাও নির্দ্বিধায় সন্তানদের তা কিনে দেন। তবে এই চকোলেটই বাঁধল-বিপত্তি। মাত্র ২০ টাকা দামের এই চকোলেট বাচ্চাদের খেতে মানা করলেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে তারা। তা নিয়ে সন্দেহ হয় অভিভাবকদের। পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়। নির্দিষ্ট এলাকায় পুলিশি অভিযান হতেই বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। বাচ্চাদের প্রিয় ওই খাবারে মেশানো হচ্ছে গাঁজা। আর তা খেয়েই আসক্ত হয়ে পড়ছে তারা। না পেলেই শুরু করছে তান্ডব।
কর্নাটকের মেঙ্গালুরুতে চকোলেটে গাঁজা মিশিয়ে তা বিক্রি করার মতো চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। অভিভাবকদের অভিযোগ পেয়ে নির্দিষ্ট অঞ্চলের দুটি দোকানে অভিযান চালায় পুলিশ। পুলিশি অভিযানের পর মোট ১২০ কেজি মাদক যুক্ত চকোলেট বাজেয়াপ্ত করেছে মেঙ্গালুরু থানার পুলিশ। পুলিশের তৎপরতার বিষয়ে বুঝতে পেরেই দুই দোকান থেকে চম্পট দেন মালিকরা। তাদের অবশ্য পরে গ্রেফতার করা হয়েছে। একজনকে মেঙ্গালুরু উত্তর থানার সীমান্ত থেকে। অন্যজনকে মেঙ্গালুরু দক্ষিণ থানার সীমান্ত এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দুজনকেই বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি দোকান থেকে ৮৫ কেজি এবং অপর দোকান থেকে ৩৫ কেজি গাঁজা মেশানো চকোলেট পাওয়া গেছে। এই বিষয়ে পুলিশ কমিশনার কুলদীপ জৈন বলেন, “ ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির থেকে পাওয়া পরীক্ষার রিপোর্টে জানা গেছে ওই চকোলেটগুলোতে গাঁজা মেশানো ছিল। চকোলেটগুলো উত্তর ভারত থেকে আনা হচ্ছিল। দোকানের মালিকরা ছাড়াও অন্য অনেকে এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে আমরা সন্দেহ করছি। এ বিষয়ে আরও বিস্তারে তদন্ত করা হবে”।
তবে শুধু মেঙ্গালুরু এলাকাতেই নয়। কিছুদিন আগে রায়চুর শহরেও পুলিশি অভিযান চালিয়ে মাদক মেশানো চকোলেট বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেক্ষেত্রেও দুটি দোকানের মালিককে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের সন্দেহ অনুযায়ী এই মাদক মেশানো চকোলেটের পিছনে একটি বড় চক্র কাজ করছে। এই চক্রের মাথা এবং অন্যান্যদের খোঁজে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অন্যদিকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বাচ্চারা একবার মাদকাসক্ত হয়ে গেলে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নেওয়া আসা অনেকটা কষ্টকর। পরপর দুটি ঘটনায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে অভিভাবকদের কপালে।