ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসে অপরিচিত অমর বীরযোদ্ধারা
পশ্চিমবঙ্গের তমলুকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এক বৃদ্ধা। তখনই পুলিশের গুলিতে ঝাঝড়া হয়ে যায় তাঁর দেহ।

শুভঙ্কর, কলকাতা: ব্রিটিশ অত্যাচার মাত্রা ছাড়িয়েছে। দিকে দিকে বিপ্লবীদের ধরার নাম করে সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে ব্রিটিশ পুলিশ। চলছে ভারত ছাড়ো আন্দোলন। পশ্চিমবঙ্গের তমলুকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এক বৃদ্ধা। তখনই পুলিশের গুলিতে ঝাঝড়া হয়ে যায় তাঁর দেহ। তিনি মাতঙ্গিনী হাজরা। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম উচ্চারণ হলেই সবার আগে উঠে আসে পশ্চিমবঙ্গের নাম। তখন অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ ছিল না। ছিল বাংলা। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকাশ করা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামের তালিকা দেখলেই দেখা যাবে বাংলা থেকে কতজন ছিল। কিন্তু অনেকের নামই অজানা থেকে যায়। তাদের নিয়ে খুব একটা আলোচনা করা হয় না। এই প্রতিবেদনে সেই লুকিয়ে থাকা সংগ্রামীদেরই নিয়েই আলোচনা করা হল।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে কথা ভাবলেই মাতঙ্গিনী হাজরার কথা প্রথমে মনে পড়ে। মাতঙ্গিনী হাজরা, গান্ধী বুড়ি নামেও পরিচিত।তমলুকের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেন। গান্ধী আদর্শে নিজেকে তৈরী করেন। জরিয়ে সক্রিয় আন্দোলনে। হাতে পতাকা ধরে বন্দেমাতরম ধ্বনী দিতে দিতে নিজের প্রান ত্যআগ করেন তিনি। আজ আমরা ২০২৩-এ এসে ভারতের স্বাধীনতার যে পতাকা উত্তোলন করছি তার পিছনেও তার অবদান অপরিসীম। স্বাধীনতা দিবসের আরও এক অন্যতম সংগ্রামী হলেন চন্দ্রশেখর আজাদ। তিনি ছিলেন মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। তিনি হিন্দুস্তান সোশালিস্ট রিপাবলিকান এসোসিয়েশনের অন্যতম সদস্য ছিলেন। চন্দ্রশেখর ব্রিটিশদের প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে নিজের সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ব্রিটিশদের আটকাতে পেরেছিলেন। ভারত স্বাধীনতার পিছনে তিনি নিরলসভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যান। আজ আমরা ২০২৩-এ যখন স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলি তখন এই সংগ্রামী বীর যোদ্ধাকে আমাদের স্মরণ করা উচিত।
স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে উপজাতি সম্প্রদায়গুলির উপর অত্যাচার চালানোর বিরুদ্ধে যিনি গর্জে উঠেছিলেন তিনি হলেন বিরসা মুন্ডা। ছোটনাগপুরের প্রাণকেন্দ্র তথা ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা তিনি। ভারতীয় সংগ্রামীদের মধ্যে বিরসা মুন্ডা খুব অল্পভাবে পরিচিত হলেও তার অবদানও কিছু কম নয়। তিনি উলগুলানার আদিবাসীদের নেতা ছিলেন। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে স্বল্প পরিচিত এই বীর যোদ্ধাকেও আমাদের স্মরণ করা উচিত। আজ আমরা আরও এক বীর নারীর কথা স্মরণ করব যিনি মাত্র ১৭ বছর বয়সে তাঁর সাহসিকতার নজির গড়েছিলেন। তিনি হলেন কনকলতা বড়ুয়া। মহাত্মা গান্ধীর পাশাপাশি তিনিও ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় তেজপুরে এক সাহসিকতার প্রমাণ দিয়েছিলেন। তিনি ব্রিটিশদের চ্যালেঞ্জ করে জাতীয় পতাকা নিয়ে একটি বিক্ষোভকারী মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বড়ুয়ার জীবন শেষ হয়ে যায় ব্রিটিশদেরই একটি বুলেটে।
ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাস ঘাটতে গেলে অনেক বীর যোদ্ধাদের কথা উঠে আসে। আমরা হয়তো সকলের নামও জানিনা। তবে আজকের এই স্বাধীনতা এসেছে তাঁদের রক্তের ফলেই।