Farm law-কেন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হল সরকার, কী বলা হয়েছিল বিতর্কিত তিন কৃষি আইন
২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের পূর্বেই বড় ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর, উচ্ছ্বসিত দেশবাসী। ১৯ শে নভেম্বর গুরু নানকের জন্মদিনের(Guru Nanak’s Birthday) দিন কৃষকদের দাবী মেনে তিনটি কৃষক আইন প্রত্যাহারের(Repealed) ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার সকালে জাতীর উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ” হয়তও আমাদের দিক থেকেও কিছু ভুল ছিল। যে কারণে আমরা কৃষকদেরকে এই আইন সম্পর্কে বোঝাতে পারিনি। তবে আজ কাউকে দোষারোপ করার সময় নয়। আজ আমি দেশকে বলতে চাই যে আমরা তিনটি কৃষি আইন বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত খুশি বিরোধীরাও। কী ছিল এই তিনটি কৃষক আইন, কেন এত বিতর্ক এই কৃষক আইনগুলো নিয়ে, কী-ই বা দাবী ছিল কৃষকদের ? এই তিনটি কৃষক বিল সংশোধন করে ২০২০ সালে আইনে রূপান্তর আনে কেন্দ্রীয় সরকার। এরপর থেকেই পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ প্রভৃতি রাজ্যে তুমুল প্রতিবাদ শুরু হয়। তবে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর থেকে সেখানকার চিত্র সম্পূর্ণ বিপরীত।
১) ২০২০ সালে ফারমার্স প্রোডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রোমোশন অ্যান্ড ফেসিলিটেশন) অ্যাক্ট অনুযায়ী, বড় ব্যবসায়ী বা বেসরকারি সংস্থা চাইলে সরাসরি চাষির কাছ থেকে কৃষিজ পণ্য কিনতে পারবে। এ বিষয়ে কৃষকদের দাবী, কেন এভাবে সম্পূর্ণ বাজারদরের নিয়ন্ত্রণ কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, কেন্দ্রের দাবী এর ফলে যে কোনো জিনিসেরই সর্বোচ্চ মূল্য পাবেন কৃষকেরা।
২) ২০২০ সালে ফারমার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রটেকশন) এগ্রিমেন্ট অব প্রাইস অ্যাসিওরান্স অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিসেস অ্যাক্ট অনুযায়ী, কোনও বেসরকারি বাণিজ্য সংস্থা বা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা চাইলে কৃষকদের কাছ থেকে জমি লিজ নিয়ে সেই জমিতে কৃষিজ পণ্য ফলাতে পারবে। কিন্তু কৃষকেরা এটি মেনে নিতে পারেননি। কারণ তাঁদের দাবি, এর ফলে তাঁদের জমি আর তাঁদের থাকবে না। তবে সরকারী যুক্তি ছিল, এতে দেশীয় কৃষিজ পণ্যের চাহিদা বাড়বে এবং কৃষিজ পণ্য রপ্তানির পথ প্রশস্ত হবে।
৩) এসেনশিয়াল কমোডিটিজ বা অত্যাবশ্যক পণ্য আইন অনুযায়ী, চাল, ডাল, গম, ভোজ্য তেল, তৈলবীজ ইত্যাদি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সামগ্রী মজুতের ঊর্ধ্বসীমা বলে কিছু থাকবে না। এ বিষয়ে কৃষকদের আশঙ্কা ছিল , এভাবে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা ঘুরপথে চলে যেতে পারে বড় ব্যবসায়ীদের হাতে। তবে সরকার মনে করেছিল, এর ফলে কৃষিক্ষেত্রে বেসরকারি এবং বিদেশি বিনিয়োগও আসবে।
২০২০ সালে সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকার এই তিনটি বিল পাস করালে দিল্লিতে দফায় দফায় কৃষক আন্দোলন শুরু হয়। অবশেষে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী এই তিনটি কৃষক বিল প্রত্যাহার করার ঘোষণা করে কৃষকদের মাঠে ফেরার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্ত ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকাইত স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত সংসদে এই তিনটি বিল প্রত্যাহারের প্রস্তাব পেশ করা হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কৃষকেরা ঘরে বা মাঠে ফিরবেন না।