Pather Panchali : বেনজির উদ্যােগ! অনীক দত্তের পর ‘পথের পাঁচালী’ পরিচালনায় ভবানীপুর থানা

সায়ন্তী বৈশ্য, কলকাতা: অভিনয় করার দক্ষতার জন্য অভিনয় সত্ত্বার প্রয়োজন, প্রয়োজন পারেনা পেশাদার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের। তারা আইনের রক্ষক , দিনরাত পরিশ্রম করেন সাধারণ মানুষের সুরক্ষিত রাখার জন্য তাদেরকেই দেখা গেলো অন্য রূপে, অন্য ভাবে। সুযোগ পেলে যে শিল্পী সত্ত্বা ফুটে ওঠে , মানেনা কোনো কিছুই। কথায় আছে যে রাধে সে চুলও বাঁধে। তাই এইবার আইনের রক্ষকরাই আসতে চলেছে নতুন রূপে দর্শকদের সামনে।
সত্যজিৎ রায়ের ( Satyajit Ray) ১০১ তম জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে এক বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ জানাতে চলেছে ভবানী ভবনের ( Bhawani Bhawan ) একদল পুলিশ অধিকারিক। ১৯৫৫ সালে সত্যজিৎ রায়ের অমর সৃষ্টি “পথের পাঁচালী”র ( Pather Panchali) নেপথ্যে নতুন ভাবে তুলে ধরতে চেয়েছেন তাঁরা। পথের পাঁচালী মানেই ছেলে বেলার স্মৃতি , অপু-দূর্গার রেলগাড়ি দেখতে যাওয়া আজও বাঙ্গালী কে স্মৃতির শহরে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের “পথের পাঁচালী”র উপর ভিত্তি করে পর্দায় অপু-দূর্গার কাহিনী তুলে ধরেছিলেন কিংবদন্তি পরিচালক।”পথের পাঁচালী”-র এই দুই চরিত্র আজও বাঙালির খুব নিজের। কিন্তু এই ছবির তৈরীর নেপথ্যের কাহিনী কতজন জানেন?
বিশ্বদরবারে আলোড়ন ফেলে দেওয়া পথের পাঁচালী তৈরি করতে গিয়ে কতটা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল বাঙ্গালীর শ্রেষ্ঠ পরিচালকে সে কথা অনেকেই জানেন না। সেই কাহিনী পর্দায় তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছেন পুলিশ কর্মীরা। ছবির নাম “অপু এবং আমি” । এই ছবিতে কয়েকজন পেশাদার অভিনেতা- অভিনেত্রী ছাড়া বাকি সবাই কেউ যুক্ত নন অভিনয়ের সাথে। সিনেমার প্রতি ভালোবাসার টানেই এবং সত্যজিৎ রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাতেই তাদের এই অভিনব উদ্যোগ। ছবিতে অভিনয় করছেন টি.আই উলুবেরিয়া পদের কর্মরত পুলিশ ইন্সপেক্টর অনুপ কুমার নাথ, অবসর প্রাপ্ত পুলিশ ইন্সপেক্টর সুপ্রকাস ঘোষ, এস.আই পুলিশ বিজিতাস্ব রাউত , এ.এস.আই প্রদীপ আদ্দ্যা , এ.এস.আই মিঠু সিং, এ.এস.আই পান্নালাল ঘোষ এবং এ.এস.আই দেবজিত সাধু। এছাড়াও ছবিতে সাহায্য করেছেন ডি.আই.জি অফ পুলিশ ( টেলিকম ওয়েস্ট বেঙ্গল) , এস.পি ( টেলিকম ওয়েস্ট বেঙ্গল) , মলয় সাহা ডেপুটি সুপারিন্টিনডেন্ট অফ পুলিশ ভবানী ভবন , সুজিত বোস ডেপুটি সুপারিন্টিন্ডেন্ট অফ পুলিশ ভবানী ভবন। আর এই কাজে বিশেষ উপদেষ্টা পদে যিনি রয়েছেন তিনি হলেন ডি.জি অ্যান্ড আই.জি.পি পুলিশ টেলিকম ওয়েস্ট বেঙ্গল।
কিন্তু সব থেকে অবাক হবার বিষয় হল, এরা কেউ অভিনয়ের সাথে যুক্ত নন। এক পুলিশ অধিকারিক এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন ” এই ছবির নেপথ্যের কাহিনী হয়তো অনেকেই জানেনা। সেই কারনেই এমন একটি ছবির ভাবনা।কিন্তু আইনের রক্ষকদের কাজের চাপে সময় কুলিয়ে ওঠাই সমস্যা। তারওপর আবার করোনার মতো পরিস্থিতি।সেইসময় সাধারণ মানুষদের পরিষেবা দেওয়া আমাদের মূল কর্ম ছিল।সবাই মিলে সপ্তাহে একদিন কোনোভাবে গিয়ে শুটিং করেছি।তাই ২০১৭ সালে মুভি শুরু হলেও সময়টা এতদিন কেটে গেছে।”
তিনি আরো বলেন,“শুধু সিনেমার প্রতি এবং সত্যজিৎ রায়ের প্রতি ভালবাসায় আমাদের এই সিনেমায় কাজ করার উৎসাহ তৈরি করেছে। খুব শীঘ্রই এই ছবি দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেব আমরা।আশা করব অপু-দুর্গা চলচ্চিত্রের নেপথ্যের কাহিনী সবার খুবই ভালো লাগবে”।
আরও পড়ুন…..মমতা নয় বুদ্ধদেব-এ আস্থা জিতুর! অপরাজিত হিটের পরই অকপট স্বীকারোক্তি জিতু’র
আরও পড়ুন….বান্ধবীকে বউ বলে সম্বোধন! বিদিশা কি তবে উভকামী, নেটমহলে উঠছে প্রশ্ন
উল্লেখ্য, এই ছবিতে অভিনয় করেছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। এছাড়াও রয়েছেন , অভিনয় জগতের বিখ্যাত মুখ বোধিসত্ত্ব মজুমদার,সরন চ্যাটার্জি,পিয়া সেনগুপ্ত। যাদের অভিনয় অভিনয় জগতে মুগ্ধ করার মতোন। ২০১৭ সালে তারা মুলত ছবির শুটিং শুরু করেন। তবে ৫বছর কেটে গেলেও খুব তাড়াতাড়ি আসতে চলেছে এই সিনেমাটি। আসলে এতো দিন সময় লাগার পিছনের যে অগ্ৰণী ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ। যাদের কাজ সর্বক্ষন মানুষকে পরিষেবা দেওয়া। আর সেই পরিষেবা দিয়ে এই পরিষেবা দিয়ে তারা যে ভাবে এই কাহিনী দর্শকদের সামনে তুলে ধরেছেন তা নিঃসন্দেহে আকর্ষনীয়। এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে বেনজিরও বলা যায়।