Sandhya Mukhopadhyay : মধু মালতীর ডাকে সাড়া সন্ধ্যার, পাড়ি না ফেরার দেশে

বাংলার বিশিষ্ট শিল্পী সন্ধা মুখোপাধ্যায় আর নেই। দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভোগার পর আজ শেষমেশ সেই সাত কলা সাঙ্গ হয়ে গেলেন। বয়স বাড়লেও তার মন ছিল একেবারে ইয়ং। একার সংসার তাঁর, কিন্তু শেষ অবধি আর বাড়ি ফেরা হল না তাঁর। মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সুত্রে খবর, তার পরিবারের লোক ইতিমধ্যে হাসপাতালে এসেছেন। বাংলার সঙ্গীত ( Sandhya Mukhopadhyay ) জগতে আজ সত্যিই সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল।
উল্লেখ্য, সাল ১৯৩১-এর ৪ অক্টোবর কলকাতার ঢাকুরিয়ায় এক রেল কর্মকর্তার ঘরে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান কিন্তু জীবনের খাতায় লিখেছেন সেরা সেরা উন্নতির উপন্যাস। অল্প বয়স থেকেই শাস্ত্র ( Sandhya Mukhopadhyay ) সঙ্গীতের প্রতি ভীষণ ভাবে ঝোঁক এবং সেই ঝোঁককেই কাজে লাগিয়ে পরবর্তীকালে ছুঁয়েছেন উন্নতির শিখর।
সাল ১৯৪৫ নাগাদ নিজের জীবনের প্রথম রেকর্ড বের করেছিল কলম্বিয়া থেকে। কিশোরীর প্রথম রেকর্ড বেরলো কলম্বিয়া থেকে। আধুনিক গান— গিরীন চক্রবর্তীর কথায় ও সুরে ‘তুমি ফিরায়ে দিয়াছ’ ও ‘তোমার আকাশে ঝিলমিল করে’। এর বছর দু’য়েকের মধ্যেই দু’টি বাংলা ছবিতেও নেপথ্যে গাইবার ( Sandhya Mukhopadhyay ) সুযোগ হয়ে গেল: রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গীত পরিচালনায় ‘অঞ্জনগড়’ এবং রবীন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গীত পরিচালনায় ‘সমাপিকা’ ছবিতে।
শুধু তাই নয় ওই একই বছরে অর্থাৎ ১৯৪৮-এ তিনটি আধুনিক গানের রেকর্ড! সাল ১৯৪৫ থেকে ১৯৪৮ এই তিন বছরেই নিজের জীবনকে এক অন্য পথে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন তিনি। বাংলা ছায়াছবির গান, বেসিক আধুনিক গানের সম্রাজ্ঞী সন্ধ্যা উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতেও বিশেষ নৈপুণ্যের পরিচয় রেখেছিলেন। এই সন্ধ্যাই ( Sandhya Mukhopadhyay ) এক সময় মুম্বইয়ে হিন্দি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাকের কিছু কাজ করেছিলেন, যা অনেকটাই অজানা। সন্ধ্যার সেই মুম্বই-পর্বেরই কিছু কথা আপনাদের নিবেদন করি।
১৯৫০ সালে পা রাখেন মুম্বাইতে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। ১৭টি হিন্দি ছবিতে প্লে-ব্যাক করেন সুর সম্রাজ্ঞী। শচীন দেব বর্মনের হাত ধরেই শুরু হয়েছিল তাঁর বম্বে সফর। তবে ( Sandhya Mukhopadhyay ) শচীন দেববর্মন তাকে বাণিজ্য শহরে নিয়ে গেলেও প্রথম প্লেব্যাকের সুযোগ হল অনিল বিশ্বাসের সুরে ‘তারানা’ ছবিতে। নিজের প্রতিভার মাধ্যমেই সকলের মন জয় করতে পেরেছিলেন তিনি।
আর পড়ুন…Sandhya Mukhopadhyay : সন্ধ্যা আর নেই
১৯৭১ সালে ‘জয়জয়ন্তী’ ও ‘নিশিপদ্ম’ ছবিতে গান গেয়ে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এরপর ১৯৯৯ সালে ভারত নির্মান পুরস্কার পান। ২০১১ সাল নাগাদ বঙ্গবিভূষণ সম্মান পান তিনি। ২০২২ সালে তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ দিতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার, কিন্তু এতদিন সে সম্মান তাঁকে না দেওয়ায় অভিমানে ( Sandhya Mukhopadhyay ) পদ্মশ্রী প্রত্যাখান করেন তিনি। জীবনে একের পর এক মাইলস্টোন অতিক্রম করেছেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। হইয়ে উঠেছেন সকলের প্রিয় ও শ্রদ্ধেয়। আজ তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে সংগীত জগতে। দিন কয়েক আগেই লতাকে হারিয়ে এখন আরও এক রত্ন হারিয়ে ফেললো এই দেশ। কেউ জানে না কার ডাকে, ঠিক কার ডাকে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন গীতশ্রী। হয়তো সেই মধু মালতীর ডাকে।