Ukraine-Russia War : জোরালো হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কতটা প্রভাব পড়ছে ভারতে

অনিশ দে, কলকাতা : বেজেছে রণডঙ্কা। ইউক্রেন-রাশিয়ার সঙ্কটের (Ukraine-Russia War) হাত ধরে উঁকি দিচ্ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্ভাবনা। এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়া ‘সামরিক অভিযানের’ ঘোষনা করার পরেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সহ ওডেসা, খারকিভ এবং মারিউপুল শহরে বিস্ফোরনের শব্দ পাওয়া যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের (Second World War) পর প্রথম কোনো ইউরোপীয় দেশ অন্য একটি ইউরোপীয় দেশের উপর হামলা চালালো এবং এর ফলে ভারত সহ সারা পৃথিবীর শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে। এদিকে বর্তমান পরিস্থিতি যা তাতে সহজেই বলা যায় ঠান্ডা যুদ্ধ-র প্রায় ৪০ বছর পর ফের দু’ভাগে বিভক্ত বিশ্ব। একদিকে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা অন্যদিকে রাশিয়াকে সমর্থন করছে চিন। এই পরিস্থিতিকে অনেকেই ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ’র (Thrid World War) প্রাক মুহূর্ত বলেই তুলে ধরছেন। কিন্তু এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে ভারত কোন অবস্থান নেয় সেদিকে সর্বদাই নজর রয়েছে গোটা বিশ্বের। ইতিমধ্যেই যুদ্ধ আবহ নিয়ে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (PM Modi)।
এদিকে রাশিয়ার আক্রমণে ইতিমধ্যেই পিছু হটতে শুরু করেছে ইউক্রেনের সেনা বাহিনী। অন্যদিকে প্রাণভয়ে আত্মগোপনের রাস্তায় হেঁটেছেন সেদেশের রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির জেলেনস্কি(Ukraine-Russia War)। এদিকে শেষ পাওয়া আপডেট অনুসারে সেদেশে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১০০-র কোটা পার করে ফেলেছে। পাশাপাশি আহতের সংখ্যা তিনশোর গণ্ডি ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে ইতিমধ্যেই রাশিয়ার এই আচরনের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন। ইউরোপীয়ান কমিশন সভাপতি উর্সুলা ভন ডেন লেয়েন জানান , “আমরা রাশিয়ার অর্থনৈতিক ভিত্তি এবং তার আধুনিকীকরণের ক্ষমতা দুর্বল করব। উপরন্তু, আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নে রাশিয়ান সম্পদ জব্দ করব এবং ইউরোপীয় আর্থিক বাজারে রাশিয়ান ব্যাঙ্কগুলির লেনদেন বন্ধ করব”। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের দুটি বিচ্ছিন্নতাবাদী অঞ্চল দোনেস্ক এবং লুহানস্ককে স্বাধীন অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত হয় (Ukraine-Russia War)।
এদিকে ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয় জয়শঙ্করকে ফোন করেছেন ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের পদস্থ কর্তা তথা সহ সভাপতি জোসেফ বরেল ফন্টেলস। ওই ফোনালেই তিনি ভারতীয় নাগরিকদের ইউক্রেনের (Ukraine-Russia War) থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে একাধিক প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। অন্যদিকে একই ইস্যুতে নিজের উদ্বেগের কথা পুতিনকে জানিয়েছেন মোদী। এই ক্ষেত্রে মনে রাখা ভালো আমেরিকা ও রাশিয়ার মতানৈক্য ও আদর্শগত বৈরতার ইতিহাস বহু পুরনো। অন্যদিকে চিনের সঙ্গে সাম্প্রতিককালে কিছুতেই সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছে বাইডেনের দেশের। তবে একাত্তরের মুক্তিযুক্ত হোক বা হালের সময়, প্রতিক্ষেত্রেই আবার রাশিয়ার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কই থেকেছে ভারতের। ভালো সম্পর্ক থেকে ট্রাম্প বা বাইডেন নেতৃত্বাধীন ভারতের সঙ্গেও। এই দোদ্যুল্যমান অবস্থায় ভারত কার পক্ষে ঝোঁকে সেদিকে কৌতূহল ছিল সকলেরই। এই প্রসহ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী ডা: রাজকুমার রঞ্জন সিং জানিয়েছেন, “ভারতের অবস্থান নিরপেক্ষ এবং আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধান আশা করি। এই মুহূর্তে ভারতের প্রধান লক্ষ্য যে করেই হোক ইউক্রেনের থেকে ভারতীয়দের বিশেষ করে ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা”।
অন্যদিকে ইউক্রেনের ভারতীয় অ্যাম্বাসেডর পার্থ সাৎপথি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন যেখানে তিনি বলেন “এই কঠিন পরিস্থিতির সমাধান খোঁজার কাজ শুরু করে দিয়েছি”। এদিকে যুদ্ধ আবহে একাধিক নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সহ পেট্রোপণ্যে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আম-আদমির মধ্যে আশঙ্কার বাতাবরণ দেখা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সূত্রে খবর, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে দ্রুত আলোচনা করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামান।