Kolkata Book Fair : প্রথম বইমেলায় মাঠের ভাড়া মকুব করা হয়েছিল, জেনে নিন কলকাতা বইমেলার ঐতিহ্যের ইতিহাস

এখন কলকাতার মুখ্য আকর্শন কলকাতার বইমেলা ( Kolkata Book Fair)। পরিবারে সাথে কিংবা প্রমিকের সাথে বা বন্ধুবান্ধবের সাথে বেড়িয়ে পড়ছে বইএর উদ্দেশ্যে। জায়গা পরিবর্তন হয়েছে আবেগ এখনো একই আছে। আজ বইমেলা এক্কেবারে আন্তর্জাতিক, কিন্তু ইতিহাসের পাতা ঘাটলে দেখা যাবে, এই বইমেলা ছিল একেবারে ছা-পোষা। প্রথম বইমেলা ( Kolkata Book Fair) আয়োজিত হয়েছিল ১৯৭৬ সালে।
১৯৭৬ সালের ৫ মার্চ প্রথম কলিকাতা পুস্তকমেলা ( Kolkata Book Fair) আয়োজিত হল। মেলা চলেছিল ১৪ মার্চ অবধি। সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল-বিড়লা তারামণ্ডলের উলটো দিকের মাঠে (বর্তমানে মোহরকুঞ্জ উদ্যান) এই মেলা আয়োজিত হয়েছিল। কলকাতার ডিসি হেডকোয়ার্টার্স অর্চিষ্মান ঘটক মাঠের ভাড়া মকুব করে দেন। প্রবেশদ্বারের নকশা অঙ্কণ করেছিলেন বিশিষ্ট শিল্পী শুভাপ্রসন্ন। মেলা উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের তদনীন্তন রাজ্যপাল এ. এল. ডায়াস। প্রথম মেলার সভাপতি ছিলেন জিজ্ঞাসা প্রকাশনের কর্ণধার শ্রীশকুমার কুণ্ডা। গিল্ডের প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি সুশীল মুখোপাধ্যায়, সুপ্রিয় সরকার, প্রবীর দাশগুপ্ত, বিমল ধর প্রমুখ বিশিষ্ট প্রকাশকেরা মেলার আয়োজনে প্রধান ভূমিকা পালন করেন।
প্রথম বইমেলায় ( Kolkata Book Fair) কলকাতার সব প্রকাশক সংস্থা যোগ দেননি। তাঁদের অনেকেই মেলার সাফল্য নিয়ে সন্দিহান ছিলেন। তাই মেলার মাঠ ছোটো হলেও তা ভরতি হওয়ার মতো স্টল পাওয়া যায়নি। তখন এনবিটি একটি বিরাট অংশ জুড়ে বইয়ের প্রদর্শনী করে এবং রূপা অ্যান্ড কোম্পানি একটি বিরাট প্যাভিলিয়ন দেয়। কিন্তু এই বইমেলায় যথেষ্ট জনসমাগম হওয়ায় পরের বছর থেকে বইমেলায় অংশগ্রহণকারী প্রকাশকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ফলে বইমেলার আয়তনও বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে এই বইমেলা আয়োজনের সুবাদে সেই বছর নয়াদিল্লিতে বিশ্ব বইমেলায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায় গিল্ড এবং জিতে নেয় মাঝারি স্টলের শ্রেষ্ঠ পুরস্কারটি। সুপ্রিয় সরকার তার ‘প্রকাশকের ডায়েরি’ গ্রন্থে মন্তব্য করেছিলেন, “এই মেলায় সবকিছুই আলাদা, বিদেশি মেলার সঙ্গে এর কোনো মিল নেই শুধু আইডিয়াটি ছাড়া।”
২০০১ সালে কলকাতা মহানগরীর ইংরেজি নাম “ক্যালকাটা” (“Calcutta”) থেকে “কলকাতা” (“Kolkata”) করা হলে, “কলিকাতা পুস্তকমেলা” বা “ক্যালকাটা বুক ফেয়ার”-ও নাম বদলে পরিণত হয় “কলকাতা পুস্তকমেলা” বা “কলকাতা বুক ফেয়ার”-এ ( Kolkata Book Fair)। ২০০৭ সালে পরিবেশ রক্ষা সংক্রান্ত একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ময়দানের পরিবর্তে বিধাননগরের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গণ-সংলগ্ন একটি অপেক্ষাকৃত ছোটো মেলাপ্রাঙ্গণে বইমেলার আয়োজন করা হয়। ২০০৮ সালে একই ধরনের একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বোধনের আগের দিন মেলা বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুন- কলকাতার জনপ্রিয় নায়িকাদের বয়স জানলে আপনি অবাক হবেন,জেনে নিন কার বয়স কত
মেলার প্রাথমিক আয়োজন সেইবার করা হয়েছিল পার্কসার্কাস ময়দানে। আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার উদ্বোধন করা হলেও, সেবার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ‘কলকাতা পুস্তকমেলা’র আয়োজন করা হয়নি। বরং মার্চ মাসে ‘বইমেলা ২০০৮’ ব্যানারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ বিভাগের উদ্যোগে ও গিল্ডের সহযোগিতায় একটি মেলার আয়োজন করা হয়। কলকাতা পুস্তকমেলার ইতিহাসে এটি ছিল এক নজিরবিহীন ঘটনা। ২০০৯ সালে কলকাতা পুস্তকমেলা স্থানান্তরিত হয় সায়েন্স সিটির বিপরীতে সেই বহুপ্রস্তাবিত মিলন মেলা নামক অত্যাধুনিক মেলাপ্রাঙ্গণে। ২০০৯ সালেই “কলকাতা পুস্তকমেলা” নাম বদলে হয় আজকের “আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তকমেলা”।
আরও পড়ুন- ফের ঊর্ধ্বমুখী জ্বালানির দাম, মাথায় হাত মধ্যবিত্তদের