বন্দি মুক্তি নিয়ে ফের প্রকাশ্যে রাজ্য- রাজ্যপাল সংঘাত
নবান্ন সূত্রে খবর রাজ্যের পাঠানো ফাইলে সই করেননি রাজ্যপাল। ফলে বন্দি মুক্তি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন রাজ্যপালকে। অপরদিকে পাল্টা বিবৃতি দিয়ে রাজভবন জানায় নবান্নের ইচ্ছার অভাবেই এটা সম্ভব হয়নি।

শুভঙ্কর, কলকাতা: রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত লেগেই আছে। রেড রোডে স্বাধীনতা দিবস অনুষ্ঠান হওয়ার আগে ফের চলল কাদা ছোড়াছুড়ি। স্বাধীনতা দিবসের আগে বেহালায় দলের অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে রাজ্যপালকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান রাজ্যপালের গাফিলতিতে এ বছর স্বাধীনতা দিবস অনুষ্ঠানে জেলবন্দীদের মুক্তি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এই অভিযোগের ভিত্তিতে অপরদিকে রাজভবনও চুপ করে বসে থাকেনি। তারাও সোমবার রাতে পাল্টা বিবৃতি প্রকাশ করে জানায় নবান্নের সদ্-ইচ্ছার অভাব থাকার জন্য এই কাজ করা যাচ্ছে না। যা নিয়ে স্বাধীনতা দিবসে ফের চরমে উঠেছে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত।
উল্লেখ্য স্বাধীনতা দিবসের দিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলে বন্দিদের আচার-আচরণ দেখে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। তবে এর জন্য রয়েছে লম্বা প্রশাসনিক পর্যায়। নিয়ম অনুযায়ী রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে বন্দিদের একটি তালিকা তৈরি করে রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য তা রাজভবনে পাঠানো হয়।। রাজ্যপাল সেই তালিকায় সই করলে তা পাঠানো হয় কারা দপ্তরে। অনুমোদন পাওয়া নামের তালিকা দেখেই রাজ্যের বিভিন্ন জেলে থাকা বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়। তবে এই বছর তা হচ্ছে না।
স্বাধীনতা দিবসের আগে দলীয় এক অনুষ্ঠানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, রাজ্যপালের সহযোগিতার অভাব থাকায় এই বছর বন্দিদের মুক্তি দেওয়া যাচ্ছে না। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বক্তব্যের পরেই রাজভবন থেকে পাল্টা বলা হয়, বন্দি মুক্তির বিষয়টিকে নিয়ে রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছিলেন। নবান্নের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতেও আগ্রহী ছিলেন। কিন্তু নবান্নের তরফ থেকে কোন উচ্চবাচ্য করা হয়নি। রাজ্যপালের চাওয়া-সাত দফা প্রশ্নের উত্তর দেয়নি, রাজ্যের শীর্ষ দপ্তর। তার ফলেই বন্দিদের মুক্তি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। রাজভবন সূত্রের খবর ৮৭ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য ফাইল পাঠিয়েছিল নবান্ন। তার মধ্যে ১৬ জন বন্দি বিদেশী। বিদেশি বন্দিদের ছাড়ার বিষয়ে রাজ্যপালের আলাদা দায়িত্ববোধ আছে বলে জানাচ্ছে রাজভবন। সেই জন্যই কিছু প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা হয়েছিল নবান্নকে। কিন্তু তার আজ ভবনে গিয়ে পৌঁছায়নি। শেষে স্বরাষ্ট্র সচিব এবং বিপি গোপালিকা ও ডিজি কারার সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়ে তাদেরকে ডেকে পাঠান রাজ্যপাল। কিন্তু তাঁরা উপস্থিত হননি। ফলে এই বছর বন্দী মুক্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যের পাঠানো ফাইলে অনুমোদন দেয়নি রাজভবন। তাই এ বারের স্বাধীনতা দিবসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বন্দিমুক্তি দিতে পারছে না।