পড়ুয়া পিছু ১০ টাকা অনুদান ভিক্ষা’ শিক্ষামহলের নিন্দার কি জবাব দিলেন রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়

এই অনুদানের টাকা দিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ অনেক কাজে ব্যবহার করতে পারবে

শুভঙ্কর,কলকাতা: এ এক চমকে যাওয়ার মতো সিদ্ধান্ত মধ্যশিক্ষা পর্ষদের! করোনা পর্বে স্কুল ছুটের সংখ্যা বাড়া চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কাছে। এবার তা রুখতে এক অভিনব সিদ্ধান্ত নিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। কি সেই সিদ্ধান্ত? পরীক্ষার্থীরা যাতে ঠিকঠাকভাবে পরীক্ষায় বসতে পারে, সেই কারণে পড়ুয়া পিছু ১০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে স্কুলগুলিকে। জানা গিয়েছে, সেই টাকা স্কুলের ফান্ডে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই অনুদানের কথা ঘোষণা করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মাধ্যমিকে নিয়মিত পরীক্ষার্থী হিসেবে একটি অনুদান পাবে স্কুলগুলি। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর জন্য স্কুলকে ১০ টাকা অনুদান দেবে পর্ষদ। ২০২৪ সাল থেকেই এই অনুদানের প্রথা চালু করা হবে। পরীক্ষার্থীরা যাতে ঠিকমতো পরীক্ষায় বসতে পারে, স্কুল যাতে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে পারে, সেইসব কারণেই এই অনুদান দেওয়া হবে। স্কুলের তহবিলে জমা হবে এই অনুদানের টাকা। মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হলে প্রতি পরীক্ষার্থী বাবদ যে পরিমাণ অনুদান হবে সেটা স্কুলকে পাঠানো হবে। এই বিজ্ঞপ্তির পর শিক্ষামহলের নানা প্রান্ত থেকে উঠছে বিভিন্ন প্রশ্ন। এরই মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, “মাত্র ১০ টাকা অনুদানে কী হবে?” শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলছেন, “এটা কি কাজের স্বীকৃতি, নাকি ভিক্ষা? দেখে তো মনে হচ্ছে পর্ষদ ভিক্ষা দিতে চাইছে। এটা খুব লজ্জার কথা যে ১০ টাকা দেওয়া হবে। এটা ভাবনার অতীত। আজকের দিনে ১০ টাকার কোনও মূল্য নেই।”

Ramanuj Ganguly,secondary examination,wbbsc president

অধ্যাপক দেবাশিস সরকারের বলছেন, “পঠন পাঠনের মান ও মাত্রা কখনও এই উৎসাহ অনুদানের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয় না। এটা কোনও ব্যক্তিগত মত নয়, এটাই বিজ্ঞান এবং এটা সবসময় সত্য।“ যদিও এতো বিরোধিতার মাঝেও নিজের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানান, “পরীক্ষার্থী পিছু ১০ টাকা হিসেবে না ধরে, এটির সামগ্রিক প্রয়াসকেই গুরুত্ব দিন। এটি কোনও একক সিদ্ধান্ত নয়। বরং ২০২২ সাল থেকে পরীক্ষা কেন্দ্র, পরীক্ষা ব্যবস্থা, অনলাইন সাবমিশন, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সাম্মানিক, মনিটরিং ব্যবস্থা নিয়ে আসা হয়েছে। এই সবগুলিই হল গোটা প্রক্রিয়ার অঙ্গ। আমরা পর্ষদের তরফে ছাত্রছাত্রীদের জন্য বোর্ডের পাশে গিয়ে দাঁড়াই।” তিনি আরও বলেন, “আমরা যদি এক বেলার, এক বার, এক দিনের জন্যও পাশে দাঁড়াতে পারি! সেটাই আমাদের কাছে অনেক। আচ্ছা ধরুন কোনও স্কুলে যদি ৫০০ পড়ুয়া থাকে, তাহলে সেখানে মোট ৫ হাজার টাকা যাবে। আর এই অনুদানের টাকা দিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ অনেক কাজে ব্যবহার করতে পারবে।




Leave a Reply

Back to top button