মহিলারা সংসারের দায়িত্বের পাশাপাশি কাঁধে তুলে নিলেন ঢাক
শাড়ি পড়ে অনায়াসেই পুজোর কটা দিন মাতিয়ে রাখেন তারা। দিনে দিনে চাহিদা বাড়ছে মহিলা ঢাকীদের।

শুভঙ্কর, কলকাতা: উমার বাপের বাড়ি আসার সময় হয়ে গেছে। তাকে বরণ করে নিতে আপামর বাঙালি প্রস্তুত হচ্ছে। আর মাত্র তিন দিন বাকি মহালয়ার। তারপরেই কাউন্টডাউন শুরু মা আসার। মা আসা কথাটা বলা ভুল হবে মা এসেই গেছেন। এখন বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে মন্ডপ সজ্জার কাজ প্রায়ই শেষ। শুধু মণ্ডপ সজ্জার কথা বলবো না প্রতিমা করার কাজও শেষ। অনেক পূজো মণ্ডপে ইতিমধ্যেই প্রতিমা এসে গেছে। মহালয়ার আগেই অনেক পুজ মণ্ডপ উদ্বোধন হয়ে যাবে। তবে পুজো মণ্ডপ উদ্বোধনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকি। ঢাকের আওয়াজেই অনুভব করা যায় পুজো বিষয়টা। ঢাক ছাড়া পুজো যেন অসম্পূর্ণ। আগে আমরা ঢাকি বলতে বুঝলাম ছেলেদেরকে। কিন্তু বর্তমানে যুগের সাথে সাথে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে মেয়েরা সংসার পড়াশোনার পাশাপাশি ঢাকীদের দলে নাম লিখিয়েছেন। আজকাল মহিলা ঢাকির চাহিদাও প্রচুর।
মা, বোন, কাকিমারা শাড়ি পড়ে যেমন সংসার সামলাচ্ছেন তেমনি কাঁদে ঢাক তুলে পুজোর দিনগুলিতে মাতিয়ে রাখছেন সকলকে। শুধু নিজেদের সখ আল্লাহদের জন্যই নয় পরিবারের অনটন খোঁচাতেও ধাক্কাতে তুলে নিয়েছেন অনেক মেয়েরাই। কলকাতাতেও তেমনি এক মহিলা ঢাকির দল রয়েছে যারা আনন্দের সহিত পুজোর দিনগুলিতে ঢাক কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ান ভিন্ন রাজ্যে। এই মহিলা ঢাকি দলের এক সদস্যা পিপাসা বৈরাগী বলেন,“ আমি প্রায় ১০ বছর ধরে ঢাক বাজিয়ে আসছি। আমরা ঘরের মেয়েরা সচরাচর বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতে পারি না। কিন্তু এই ঢাক বাজানো সুবাদে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতে পারি। শুধু ঘুরতে যাওয়াই নয় তার সাথে বাইরে গেলে আমরা বেশি টাকা উপার্জন করতে পারি। আর এর ফলে আমাদের পরিবারের অনটনও অনেকটা ঘোচে।”
এই মহিলা ঢাকিদলের প্রধান আনন্দ দাস। আনন্দ বাবু এই মহিলা ঢাকীদের সম্পর্কে বলেন, “ আমার প্রথম থেকেই একটা পুরুষ ঢাকির দল ছিল। তারপর বোন কাকিমারা হঠাৎই একদিন বলেন যদি আমরা মেয়েরা এই ঢাক বাজানো শুরু করি তাহলে কেমন হয়। তারপর আমি সবাইকে নিয়ে একদিন বসি। তারপর দেখি এরা ভালোই বাজাতে পারছে এবং সেই থেকেই আমাদের যাত্রা শুরু। মহিলা ঢাকিনি আমাদের যাত্রা প্রায় ৭-৮ বছর হয়ে গেছে। বর্তমানে মহিলা ঢাকির চাহিদা অনেকটাই বেড়েছে। আমি আশা করছি এই সদস্যের সংখ্যা আরও বাড়বে। আমাদের এখন মহিলা ঢাকির দলে ৪০ জন সদস্যা আছেন।”