Actor Pasha Arrested: চোর বদনাম কাটাতে অভিনয় জগতে প্রবেশ, খুনের ৩০ বছর পর ধরা পুলিশের হাতে অভিনেতা পাশা

শকুনির ‘পাশা’র চালেই সূত্রপাত হয়েছিল কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের (Kurukshetra War)। যা আজও পৌরাণিক কাহিনী হয়ে মানুষের মনে গেঁথে আছে। কিন্তু সে সব অনেক কাল আগের কথা। যুধিষ্ঠির দুর্যোধনের কাছে সব খুইয়ে এগিয়ে গিয়েছিল এক বিরাট যুদ্ধের দিকে। আর পুরাণ মতে, এই যুদ্ধের নেপথ্যে মূল কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল সেই ‘পাশার চাল’। আর একথা একাল ও সেকাল মিলিয়েও সত্যতায় কোনও খাদ নেই। কাহিনী মতে, সেবার বিপদে পড়েছিলেন যুধিষ্ঠির। আর এবার এমনই বিপদে পড়েছিল হরিয়ানা পুলিশ (Haryana Police)।
‘পাশা’র জালে পড়েই শত জায়গায় চিরুনি তল্লাশি করেও তাদের হাতে আসেনি তার টিকিটাও। তবে অন্ধকার কেটে একটা নতুন সূর্য মাথা চাড়া ঠিক সময়েই। সেই নতুন আলোতেই পাশার সকল চাল ধরাশয়ী করে পুলিশের দল। ঘটনা গত মাসেরই, পয়লা অগস্ট হরিয়ানার স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (Haryana Special Task Force) ফন্দি এঁটেই পুলিশি জালে জড়িয়ে নেয় পাশাকে। শত পরিকল্পনায় যে কুখ্যাত খুনি হাতে আসেনি, এবার তাঁকে বাগে পেয়ে যেন স্বস্তি ফিরল গোটা রাজ্যে।

কখনও সে গ্রামের মোড়ল, কখনও আবার পুলিশ, কখনও চোর, নানা চরিত্রেই বিহার, উত্তরপ্রদেশের ছোট পর্দায় ধরা দিত সে। তবে এই সব চরিত্রের পিছনেই যে লুকিয়ে ছিল একজন খুনি এমনটা প্রায় সকলেরই ধারণার বাইরে ছিল। জীবনের প্রথমার্ধে ভারতীয় সেনায় নিজের নাম লিখিয়েছিল সে (Pasha)। ১৯৮৪ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সেনায় (Indian Army) কাজ করার পর তাঁকে বরখাস্ত করে দেওয়া হয়। কাজে মন ছিল না তাঁর, জওয়ান হলেও ছিল না কোনও দায়িত্ববোধ। ফলত, কয়েকবছর কাটাতে না কাটাতেই হাতের বরখাস্তের চিঠি পেয়ে ঘরে ফেরে পাশা। পেট চালাতে খুঁজে নতুন পথ। নিজের একটি তিন বন্ধুর দল তৈরি করে শুরু করে দেয় চুরি-ডাকাতি।
সাধারণভাবেই, চোরা মোটরবাইক চালান করেই নিজের পেট চালানোর ব্যবস্থা করে নেয় সে। তবে বেশিদিন এই ভাবে চালানো কঠিন হয়ে পড়ে তাঁর ক্ষেত্রে। এলাকায় নাম ছড়িয়ে পড়তেই পুলিশি তৎপরতায় গ্রেফতার হয় পাশা ও তাঁর সঙ্গীরা। কিন্তু সাক্ষীর অভাবেই বুক ৫৬ ইঞ্চি চওড়া করে ফের বেরিয়ে পড়ে জেল থেকে।
প্রসঙ্গত, সময়ের হাত ধরে মানুষের জীবনে পরিবর্তন সুনিশ্চিত। এমনটাই ঘটেছিল তাঁর সঙ্গে। জেল থেকে বেরিয়ে নিজের মননে পরিবর্তন আনার যথা সাধ্য চেষ্টা করে সে। সাইকেল-গাড়ি সারাইয়ের দোকান খুলেই সূচনা হয় নতুন জীবনের। কিন্তু বিপত্তি যেন তখনও পিছু ছাড়েনি। ফের মোটরবাইক চুরির নেশায় মত্ত হয়ে ওঠে পাশা। এক ব্যাক্তির কাছ থেকে তার গাড়ি ছিনতাই করতে গিয়ে ব্যর্থ হলে তাকে খুন করে বসে সে। ঘটনা চোখে পড়ে যায় এলাকাবাসীর। পাশা পলাতক হয়ে পড়ে। অপরদিকে, তার সঙ্গী সাত বছরের হাজতবাসের সাজা হয়।
উল্লেখ্য, পাশার এই পলায়নই যেন তাকে ঢেলে দেয় এক নতুন জীবনযাত্রার দিকে। হরিয়ানা ছেড়ে পার্শ্ববর্তী নানা রাজ্যে চুপিসারে ঘুরে বেড়ায় সে। পরিস্থিতি ঠান্ডা হতেই ঝাঁপিয়ে পড়ে শিল্পের দিকে। গ্রামের যাত্রা থেকে শুরু করে অল্প বাজেটের সিনেমায় কাজ এই সবের মধ্যে দিয়েই নিজের জীবনকে চালিত করে সে। এদিকে বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে ঘুরে পর্দায় কাজ করলেও তাঁকে তখনও থামেনি মামলা। চার রাজ্যের ১০০টি এলাকায় তদন্ত করলেও মেলেনি পাশার হদিশ। তুখোড় বুদ্ধিমত্তা দিয়ে যেন বারংবার সকলকে ধোঁকা দিয়ে চলেছিল সে। অবশেষে ৩০ বছর কাটিয়ে বৃদ্ধ দশায় পুলিশের হাতে ধরা দিল সে।