মেয়েকে মানুষ করতে ৩৬ বছর ধরে বাবা সেজে রইলেন বিধবা মা ! ঘটনায় বিস্মিত গোটা বিশ্ব

অনীশ দে, কলকাতা: একবিংশ শতাব্দীর অনেকটা সময় পার করলেও, এখনও কুসংস্কারে আচ্ছন্ন আমাদের সমাজ। এই পিতৃতান্ত্রিক সমাজে আজকেও নিজের সম্মান ও অধিকারের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন নানা মহিলারা (Petchiammal)। কিন্তু এরই মধ্যে এক অভিনব পন্থায় পিতৃতন্ত্রের গালে কষিয়ে চোর লাগিয়েছেন এক মহিলা। হ্যা, তামিলনাড়ুর এক মহিলা (Petchiammal) নিজের মেয়েকে সুরক্ষিত রাখার জন্য দীর্ঘ ৩০ বছর পুরুষ সাজে নিজের জীবন কাটাচ্ছেন।
তামিলনাড়ুর (Tamilnadu) থেনি জেলায় অবস্থিত কাট্টুনায়াকানপতি। এই জায়গা এখনও সামাজিক বিকাশের থেকে অনেক ক্রোশ দূরে রয়েছে। এখানে মেয়েদের বিশেষত বাড়ির বউদের বাইরে কাজ করা নিষেধ। তাতে নাকি মান যায়। আর সমাজের এই নিম্ন মানসিকতাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এক অভিনব পন্থা নেন এস পেটচিয়াম্মল (Petchiammal)। তিনি পুরুষ সেজে দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে জীবনযাপন করছেন।
আরও পড়ুন:“অভিনেত্রী মানেই পেটে বিদ্যা নেই!”,বস্তাপচা ধারণা ভাঙতে বিস্ফোরক পটলকুমার খ্যাত খলনায়িকা
২০ বছর বয়সে মহিলার বিয়ে হয়। আর পাঁচজন বাকি মহিলার মত তারও স্বপ্ন ছিল একটা সুন্দর সংসারের। কিন্তু ভাগ্য কি আর পরিবর্তন করা যায়? বিয়ের ১৫ দিনের মধ্যেই পেটচিয়াম্মলের স্বামী দেহত্যাগ করেন। এই ঘটনায় বিস্মিত হয়ে ওঠেন পেটচিয়াম্মল। সংসার কিভাবে চালাবেন, মেয়েকে মানুষ কিভাবে করবেন, প্রাথমিক চিন্তা ছিল এটাই। বাইরে বেরিয়ে কাজ করলে গ্রামের সবাই নানান কথা বলবে। তবে উপায় কি?

মা নয়, বাবা হয়ে মানুষ করতে হবে মেয়েকে। অনেক ভেবে নিজের স্বামীর সাজ ধরলেন পেটচিয়াম্মল। পরবর্তীকালে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, কখনও কনস্ট্রাকশন সাইটে ঠিকা কর্মীর কাজ আবার কখনো বা চায়ের দোকানে মজুরের কাজ করেছেন (Tamilnadu)। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই নিজের বেশভূষা পাল্টে ফেলেন পেটচিয়াম্মল। স্বামীর মৃত্যুর পরেই মন্দিরে গিয়ে চুল কেটে আসেন, পরনে থাকত শার্ট আর লুঙ্গি।
আরও পড়ুন:কিডন্যাপ ফুলঝুড়ি! মাথা ফাটল লালনের, ‛পিয়া রে’ ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে হাসির রোল নেটপাড়ায়
তার এই সাজের কথা আত্মীয় পরিজন ছাড়া কেউই জানতেন না। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ১০০ দিনের কর্মীর কাজ, সবকিছুই চেষ্টা করেছেন তিনি। নিজের সন্তানকে মানুষ করার জন্য বাবা মা কতদূর পর্যন্ত যেতে পারেন তার জলজ্যান্ত উদাহরণ পেটচিয়াম্মল। স্বামী মারা যাওয়ার পর তার নামেই ভোদার কার্ড, আধার কার্ড বানান তিনি। এখন অবশ্য তার মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু তাও তিনি সারাজীবন তার স্বামীর পরিচয় নিয়েই বাঁচতে চান, জানিয়েছেন পেটচিয়াম্মল।




Leave a Reply

Back to top button