Birsa Munda- ভারতরত্ন পেতে পারতেন বিরসা মুন্ডা, কেন শোনা যাচ্ছে এই জল্পনা
ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসকদের দ্বারা অত্যাচারিত হয়ে ‘মুন্ডা’ সম্প্রদায়ের আদিবাসীদের একত্রিত করে প্রথম মুন্ডা উপজাতির হয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন ভারতবর্ষের রাচি অঞ্চলের বিরসা মুন্ডা (Birsa Munda)। তৎকালীন ঐতিহাসিক এই সমাজ সংস্কারক ‘মুন্ডা’ উপজাতির কাছে এখনও ভগবান হয়ে আছেন। ১৮৭৫ সালের ১৫ ই নভেম্বর আজকের দিনেই রাঁচি জেলার উলুহাটিতে (Uluhati) জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই মুন্ডা সমাজ সংস্কারক। পরবর্তীতে ১৮৯৯-১৯০০ সালে ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে উনিশ শতকের প্রথমাংশে সংঘটিত একটি আদিবাসী কৃষক বিদ্রোহে (Farmer Protest) নেতৃত্বে দেন বিরসা মুন্ডা। বিরসা জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন যে দেশে স্বাধীনতা আনতে গেলে, নিজের অধিকার ছিনিয়ে নিতে গেলে প্রয়োজনে জীবনও দিতে হবে। এই বীর শহীদকে শ্রদ্ধা জানাতেই ১৯০০ সালের পর থেকে তাঁর জন্মবার্ষিকী (birth Anniversary) পালন করা হয়ে থাকে।
ব্রিটিশ শাসকের অত্যাচার, জমিদার এবং তার মধ্যস্থতাকারীদের (Middle Man) অত্যাচারের ফলে মুন্ডাদের উপর কৃষিভিত্তিক আক্রমণ শুরু হয়েছিল, প্ররোচনামূলক ধর্মান্তরগুলি একটি সাংস্কৃতিক আক্রমণের দিকে পরিচালিত করেছিল। এছাড়া মুন্ডা মহিলারা অত্যাচারিত ডিকুসের সহজ লক্ষ্যে পরিণত হয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে, সেই বিপথগামী মুন্ডা পুরুষ, যারা মদ্যপানে আসক্ত, তারা তাদের নিজেদের মহিলাদের ব্যবসার জন্য দোষী ছিল।
এই পরিস্থিতিতে বিরসা মুন্ডা ১৮৯৫ সালের দিকে ধর্মীয় মর্যাদা লাভ করার জন্য, সামাজিক সংস্কারের সূচনা এবং গ্রামবাসীদের চিকিৎসা নিরাময়ের জন্য সাধারণ আদিবাসীদের কাছে ধীরে ধীরে পরিচিত হয় এবং দূর-দূরান্তের গ্রাম থেকে গ্রামবাসীরা তার দর্শনের জন্য ভিড় করেন, তখন ব্রিটিশরা অত্যন্ত নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে। অবশেষে, বিরসা মুন্ডাকে ১৮৯৫ সালে রাষ্ট্রদ্রোহের মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ১৮৯৭ সালের নভেম্বরে তিনি জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর বিরসা প্রথমবারের মতো সশস্ত্র বিপ্লবের ধারণা প্রকাশ করেছিলেন। ফলপ্রসূ উনিশ শতকের একদম গোড়ার দিকে মুন্ডা বিদ্রোহ সংঘটিত হয়।
বর্তমানে বহু নেতারাই নিজেদেরকে বিরসা মুন্ডার আদর্শিক বংশধর বলে দাবি করে। এর একটি অন্যতম উদাহরণ হল ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, যিনি সম্প্রতি হার্ভার্ড ইন্ডিয়া কনফারেন্সে বলেন: “আদিবাসীরা কখনই হিন্দু ছিল না, হবেও না।”
এটি সত্যিই দুঃখজনক যে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষকে উস্কানি দেন।অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ঝাড়খণ্ড রাজ্যে উপজাতীয় জনগোষ্ঠী প্রায়ই এই ধরনের বিদ্বেষের শিকার হয়ে থাকেন। এটা মনে রাখা দরকার যে বিরসা মুণ্ডার বিপ্লবের মূলে ছিল আদিবাসীদের অধিকার সংরক্ষণ, যা জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণের দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত করা হয়। আমাদের দেশের জাতীয়তাবাদী সামাজিক ও রাজনৈতিক আখ্যানের আদিবাসী আইকন হিসাবে বিরসা মুন্ডাকে ভারতরত্ন দেওয়ার দাবী অনেকেই করে থাকেন।