Bipin Rawat: সেনার বিশেষ কপ্টারে ছিল এয়ার ড্রপের ব্যবস্থা, তারপরেও কেন প্রাণ গেল বিপিন রাওয়াতের

অহেলিকা দও, কলকাতা: আবারও ঘটলো দূর্ঘটনা(Accident)। একটি হেলিকপ্টার(helicopter) কোয়েম্বাটুরের ওয়েলিংটন(Wellington Coimbatore) যাওয়ার পথে সুলুর বিমানঘাঁটি(Sulu Airport) থেকে উড়ছিল। ঠিক সেই সময় ঘটল দূর্ঘটনা কুনুরে(Coonoor) ভেঙ্গে পড়ে হেলিকপ্টারটি। ভারতীয় বায়ুসেনা(Air Force) জানিয়েছে যে, এই হেলিকপ্টারটি একটি আইএএফ(IAF) এমআই ১৭ ভি৫(Mi 17 V5) কপ্টার। এছাড়াও এই হেলিকপ্টারে ছিলেন চিফ অব আর্মি স্টাফ(CDS) বিপিন রাওয়াত(Bipin Rawat) এবং তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত(Madhulika Rawat) সহ ১৪ জন। এখন ও পর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে অসমর্থিত সূত্রে খবর উদ্ধার হয়েছে ১১ জনের দেহ। মারাত্মক আহত হয়েছিলেন বিপিন রাওয়াত(Bipin Rawat)। তারপর তাকে আর্মি হাসপাতালে ভর্তি করলে কিছুক্ষন পরই মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। জেনে নিন এই কপ্টারের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে।
এমআই ১৭ ভি৫(Mi 17 V5) কপ্টারটি রাশিয়ার কপ্টারের একটি সাবসিডিয়ারি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে এমআই(Mi) সিরিজের কপ্টারগুলির মধ্যে এটি সবচেয়ে উন্নত শ্রেণীর কপ্টার। এছাড়াও এমআই(Mi) সিরিজের কয়েকটা কপ্টার তারা ব্যবহার করে আসছেন যেমন- এমআই ২৬(Mi 26), এমআই ২৪(Mi-24), এমআই ১৭(Mi-17) এবং এমআই ১৭ ভি৫(Mi 17 V5)। রাশিয়ায় তৈরি এই কপ্টারটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যারা প্রতিনিয়ত সৈনিক ও অফিসারদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পালন করে শুধুমাত্র যুদ্ধের উদ্দেশ্যে। এটি উচ্ছেদ বা উদ্ধারের কাজেও ব্যবহার করা হয়। আবার এটিতে হালকা অস্ত্র প্রয়োগ করে এটিকে আক্রমণাত্মকও করা যেতে পারে। যদিও তারা সাধারণত অ-সামরিক কাজেই এই কপ্টারটি ব্যবহার করেন।
এমআই ১৭ ভি৫(Mi 17 V5) এর ফিচারগুলি কি কি? প্রথম হল, এমআই ১৭ ভি৫(Mi 17 V5)। এমআই এর সিরিজগুলো বিশ্বের অনেক দেশে ব্যবহৃত হয়েছে এবং তাদের কর্মক্ষমতাও বেশ নির্ভরশীল। এই চপারটি এমআই-৮(Mi-8) এর এয়ারফ্রেমের ভিত্তিতে ডিজাইন করা হয়েছে। তবে এটি আগের চেয়ে অনেকটাই উন্নত প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা হয়েছে। দ্বিতীয় হল, আবহাওয়া। যে কোনও আবহাওয়ায় যেমন- খুব ঠান্ডা থেকে খুব গরম পরিবেশে উড়তে সক্ষম এই এমআই ১৭ ভি৫(Mi 17 V5) কপ্টার। কারণ এটিতে অন বোর্ড ওয়েদার রাডার এবং অটো পাইলট সিস্টেম রয়েছে যা পাইলটকে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন- বায়ুসেনা দুর্ঘটনার কবলে মৃত্যু হয়েছে যসব খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বের, দেখে নিন তালিকা
তৃতীয়ত, এমআই ১৭ ভি৫(Mi 17 V5) কপ্টারের ডিজাইন। কপ্টারের কেবিনটির ফ্লোর ১২ বর্গ মিটারেরও বেশি। কপ্টারটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে জিনিসপত্র এবং সৈন্যদের পিছন দিক থেকে দ্রুত যাওয়া যায়। কপ্টারটিতে ৮টি মাল্টিফাংশন ডিসপ্লে রয়েছে। এমআই ১৭ ভি৫(Mi 17 V5) ভারতের নির্দিষ্ট চাহিদার উপর ভিত্তি করে অনেকটা আপগ্রেড করা হয়েছে। এরপর আসে, মালপত্র বহনের ক্ষমতা। রাশিয়ায় তৈরি এমআই ১৭ ভি৫ (Mi-17 V5) কপ্টারটিরে সেনা জওয়ানদের মালপত্র, যন্ত্রপাতি পরিবহণের কাজে ব্যবহার করা হয়। এই কপ্টারটির বাইরের ঝুলিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় মালপত্রগুলো। এমনকি কপ্টারে বহন করা যায় রকেট, কামান ও ছোট অস্ত্র।
আরো একটি মেজর ফিচার হল, এয়ার ড্রপ। সেনাবাহিনীর এই কপ্টারটির প্রধান কাজ হল এয়ার ড্রপ। মাটিতে থাকা যেকোন টার্গেটে আঘাত করা ও আহতদের তুলে আনা হয়। এবং এমআই ১৭ ভি৫(Mi 17 V5) কপ্টারের দাম- ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ৮০টি কপ্টারের জন্য ১৩০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছিলেন। ২০০৮ সালে ডলার এবং রুপির গড় বিনিময় হার অনুসারে এর পরিমাণ প্রায় ৬০০০ কোটি টাকার সমান ছিল। অর্থাৎ, একটি চপারের চুক্তির মোট মূল্য ছিল ৭৬ কোটি টাকার মতো।ভারতীয় বায়ুসেনা ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৩৬টি বিমান পেয়েছিলেন। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে ভারতীয় বিমান বাহিনী এই কপ্টারগুলির মেরামত এবং সমস্ত সুযোগ সুবিধাও দিতে শুরু করেছিল। তবে এখন একটাই প্রশ্ন এত উন্নতমানের এই কপ্টার কিভাবে এরকম দূর্ঘটনাটি ঘটালো? এই বিষয়ে খতিয়ে দেখছেন সামরিক বাহিনীর দল।