Constitution Day- ইতিহাসের পাতায় তাঁর নাম লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে, ভারতের পরিচয় প্রস্তাবনায় আম্বেদকরের অবদান
নেহা চক্রবর্তী, কলকাতা- ভারত স্বাধীন হয় ১৯৪৭ সালের ১৫ই আগস্ট । স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে সে বছরেই ২৬শে নভেম্বর ভারতে প্রথম সংবিধান রচনা করেছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ডঃ ভীম রাও আম্বেদকর। সংবিধানেটিকে ১৯৫০ সালের ২৬শে জানুয়ারি আইনত প্রয়োগ করা হয়েছিলো ।যা পরে ২০১৫ সালে গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ২৬শে নভেম্বরকে সংবিধান দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছিল ভারত সরকার। দেশের প্রতি, গণতন্ত্রের প্রতি ডঃ বি আর আম্বেদকরের অবদান ও সংবিধানের গুরুত্বকে ছড়িয়ে দিতে সংবিধান দিবস পালিত হয়। আজ ভারতে সেই উৎযাপনের ৭ বছর ।
আম্বেদকর ছিলেন সংবিধানের খসড়ার প্রধান ব্যক্তি। খসড়াটি তৈরি করতে সময় লেগেছিলো ২ বছর ১১ মাস ১৭দিন। ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনা ছিলো এরূপ,”আমরা ,ভারতের জনগণ,ভারতকে সার্বভৌম ,সমাজতান্ত্রিক ,ধর্মনিরপেক্ষ,গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রূপে গড়ে তুলতে এবং তার সকল নাগরিকই যাতে সামাজিক ,অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ন্যায়বিচার,চিন্তা,মতপ্রকাশ,বিশ্বাস,ধর্ম এবং উপাসনার স্বাধীনতা,সামাজিক প্রতিষ্ঠা অর্জন ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠা এবং তাদের সকলের মধ্যে ব্যক্তির মর্যাদা এবং জাতীয় ঐক্য ও সংহতি সুনিশ্চিতকরণের মাধ্যমে তাদের মধ্যে যাতে ভ্রাতৃত্বের ভাব গড়ে ওঠে তার জন্য সত্যনিষ্ঠর সঙ্গে শপথ গ্রহণ করে,আমাদের গণপরিষদে আজ, ১৯৪৯ সালের ২৬শে নভেম্বর, এতদ্বারা এই সংবিধান গ্রহণ,বিধিবদ্ধ এবং নিজেদের অর্পণ করছি।”
ভারতীয় সংবিধান গৃহীত হয় ১৯৪৭ সালের ২৬শে নভেম্বর কিন্তু কার্যকর হয়েছিলো ১৯৫০ সালের ২৬ শে জানুয়ারি। গণপরিষদের সভাপতি ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ সংবিধান পাশ করার অনুমতি দেন। তাঁর আগে তিনি মহাত্মা গান্ধীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিয়ে বলেন, “মনে রাখবে যে এটি একটি অনন্য বিজয় যার রাস্তা আমরা জাতির পিতার দেখানো অনন্য পদ্ধতিতে অর্জন করেছি এবং আমরা যে স্বাধীনতা অর্জন করেছি তা রক্ষা করা এবং এটি সত্যিকার অর্থে মানুষের জন্য ফলপ্রসূ করে তোলা আমাদের উপর নির্ভর করে।”
আরও পড়ুন……constitution day: জানেন কি নন্দলাল বসু দিয়েছিলেন সংবিধানের লিখিত রূপ
বি আর আম্বেদরের দেশের প্রতি, জনগণের প্রতি দেওয়া কিছু উক্তি যা দেশবাসীকে সবসময় বুঝিয়েদিতে সক্ষম স্বাধীনতার আসল মানে কী
উক্তিগুলো নিম্নরুপে দেওয়া হলো:
১)”গণতন্ত্র নিছক সরকারের একটি রূপ নয়। এটি প্রাথমিকভাবে যুক্ত জীবনযাপনের যৌথ যোগাযোগের অভিজ্ঞতার একটি পদ্ধতি। এটি মূলত সহপুরুষদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শ্রদ্ধার মনোভাব”।
২)”আইন-শৃঙ্খলা দেহের রাজনীতির ওষুধ এবং রাজনৈতিক শরীর অসুস্থ হলে ওষুধ দিতে হবে”।
৩)”যদি আমি দেখতে পাই যে সংবিধানের অপব্যবহার হচ্ছে আমিই প্রথম এটি পুড়িয়ে দেব”
৪) “যারা ইতিহাস ভুলে যায় তারা ইতিহাস গড়তে পারে না।”
জন্মদিবস বা সংবিধান দিবস । প্রত্যেকটা দিবসের ই এক এক প্রকার শুভেচ্ছা থাকে। ভারতীয় সংবিধান দিবসের শুভেচ্ছাগুলি যে প্রকার হয় তার চারটি উদাহরণ দেওয়া হলো-
১)মনের স্বাধীনতা, কথায় বিশ্বাস। আমাদের হৃদয়ে গর্ব এবং আমাদের আত্মায় স্মৃতি। শুভ সংবিধান দিবস।
২)আমরা হয়তো এটা বুঝতে পারি না কিন্তু ভারতের সংবিধান এমন কিছু যা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। সবাইকে সংবিধান দিবসের শুভেচ্ছা।
৩)সংবিধান দিবস উপলক্ষ্যে, আমি কামনা করি যে আমরা সর্বদা ভারতের ভালো নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলি যারা সংবিধানকে সম্মান করে এবং অনুসরণ করে।
৪)একটি সরকার ভাল এবং সঠিকভাবে কাজ করে যখন তাদের অনুসরণ করার জন্য একটি সংবিধান থাকে। সংবিধান দিবসের শুভেচ্ছা।