Coronavirus: ওমিক্রন আতঙ্কের জের, পুরো পরিবারকে খুন করে পলাতক ডাক্তার

২০২০- র প্রথম থেকেই করোনা থাবা বসিয়েছিল ভারতে। সংক্রমণের সঙ্গে বাড়ছিল মৃত্যুর হারও। শেষের দিকে ভ্যাকসিন আবিষ্কার হওয়ায় খানিক স্বস্তি ফিরেছিল। মৃত্যুর হারের সাথে নেমেছিল সংক্রমণও। এরপর চলতি বছরের প্রথম থেকে আবারও সংক্রমণ বাড়তে থাকে। কিন্তু এই ডিসেম্বরের দিকে সংক্রমণের পরিমাণ কমলেও আবার আবিষ্কার হয় নতুন এক করোনা ভ্যারিয়েন্ট যার নাম ‘ওমিক্রন’ । ইতোমধ্যেই এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট দেশ জুড়ে মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে । আর এই আতঙ্কের জেরেই এক অতি ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটালেন উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) কানপুরের (Kanpur) এক ডাক্তার।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে তিনি তাঁর পুরো পরিবারকে হত্যা করেছে। কিন্তু কেনো এই পদক্ষেপ! ডাক্তার জীবন দান করেন এটাই জানে সকলে। অনেকে ডাক্তারকে ভগবানের আরেক রূপ বলে উল্লেখ করেন। কিন্তু সেই ভগবান কি করে তাহলে তাঁর নিজের পুরো পরিবারকে হত্যা করলেন।
জানা গেছে ওই ডাক্তারের নাম সুশীল কুমার সিং। বয়স ৫৫-র কাছাকাছি। তিনি মান্ধানার (Mandhana) বেসরকারি মেডিকাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান হিসাবে কর্মরত। তাঁর ভাইয়ের নাম ডাক্তার সুনীল কুমার সিং। সুনীল কুমার কানপুর দেহাত (KanpurDehat) জেলার এক সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত আছেন। শুক্রবার বিকাল সাড়ে পাঁচটায় তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ একটি মেসেজ আসে ডাক্তার সুশীল কুমারের । সেই মেসেজে লেখা থাকে পুলিশকে খবর দেওয়ার জন্য। কারণ, অবসাদের বশে তিনি তাঁর স্ত্রী চন্দ্রপ্রভা (৪৮), ছেলে শিখর (২১) এবং মেয়ে খুশি (১৬)’কে হত্যা করেছেন।
সেই মুহূর্তে তার ভাই সুনীল কল্যানপুর থানায় খবর দিয়েছিলেন। এবং তার দাদার বাড়ি ইন্দিরানগরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। সুনীল ও পুলিশ ক্রাইম স্পটে পৌঁছে দেখেছিল দরজা বাইরে থেকে লক করা। তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাঁরা দেখেন তিনটি ঘরে মা ও দুই ছেলে-মেয়ের মৃতদেহ পড়ে আছে। ডাক্তার পলাতক। পুলিশ তিনটি দেহকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। প্রাথমিক তদন্তের পর তাদের অনুমান, ‘স্ত্রীকে গলা টিপে, এবং ছেলে-মেয়েকে মাথায় হাতুড়ির বাড়ি মেরে হত্যা করেছেন ওই ডাক্তার।’ কারণ দেহগুলির পাশেই একটি রক্তমাখা হাতুড়িও ছিল।
পুলিশি তদন্তে ওই বাড়ি থেকে একটি ১০ পাতার নোট এবং ডাক্তার সুশীল সিং-এর ব্যক্তিগত একটি ডায়েরিও উদ্ধার করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ওই ১০ পাতার চিঠিতে হিন্দিতে লেখা আছে, ‘আর কোনও কোভিড চাই না। এই কোভিড এখন সবাইকে মেরে ফেলবে। এখন আর লাশ গুণতে চাই না। আমার অসাবধানতার কারণেই কেরিয়ারের এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছি, যেখান থেকে বের হওয়া অসম্ভব। আমার কোন ভবিষ্যৎ নেই। আমি সম্পূর্ণ বিচক্ষণতার সঙ্গে আমার পরিবারকে শেষ করছি, নিজেকে শেষ করছি। এর জন্য অন্য কেউ দায়ী নয়।’
আরও পড়ুন……Omicron- চওড়া হচ্ছে ওমিক্রনের থাবা, তবে কী শেষ রক্ষা হল না তৃতীয় ঢেউয়ের হাত থেকে
ডাক্তার সুনীল সিং তার দাদার উদ্দেশ্যে জানান, গত কয়েক মাস ধরেই তার দাদা অবসাদে ভুগছিলেন। কোভিড-১৯ সম্পর্কিত কিছু বড় ঘটনা ঘটলেই তাঁর এই অবসাদের মাত্রা বেড়ে যেত। ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের খবরেও তাইই ঘটেছিলো। এমনকী, মাঝে মাঝেই বলতেন, তিনি তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করবেন। কিন্তু, ডা. সুশীলের চোখের অসুখ সম্পর্কে কিছু জানাননি তাঁর ভাই সুনীল সিং-কে। পুলিশ ইতিমধ্যেই তদন্ত চালাচ্ছে। পলাতক ডাক্তার সুশীল সিং-এর খোঁজ চলছে সর্বত্র।