অভিষেকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ, ‘দিদি’কে নিয়ে গান বাঁধলেন প্রাক্তন সিপিএম নেতার নাতি
ওয়েব ডেস্ক: ‘অভিষেক বন্দোপাধ্যায় হবেন আমাদের রাজ্যের উন্নয়নের কান্ডারি। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে অভিষেকের হাত ধরেই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় সরকার গঠন করবে তৃণমূল’, সন্দীপ চক্রবর্তীর এই মন্তব্য রীতিমতো সারা ফেলে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কিন্তু এখন প্রশ্ন, কে এই সন্দীপ চক্রবর্তী ? তিনি ত্রিপুরার প্রথম সিপিআইএমের মুখ্যমন্ত্রী নৃপেন চক্রবর্তীর নাতি। সন্দীপের এই মন্তব্যের জেরে সরগরম ত্রিপুরা। রাজ্য-রাজনীতির চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন তিনিই। তবে তাঁর এই মন্তব্যের জেরে অস্বস্তিতে সিপিআইএম।
তবে দল যাই বলুক না কেন, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায়কেই আগামী দিনে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান নৃপেনবাবুর নাতি সন্দীপ। এই নিয়ে একটি গানও বেঁধেছেন তিনি, যা ইতিমধ্যেই দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায়। তাঁর লেখা গানে উঠে এসছে ত্রিপুরায় বিজেপির অপশাসনের কথা। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একুশের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয় এবং জয়ের অন্যতম কান্ডারী অভিষেকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও ধরা পড়েছে তাঁর গানের লাইনে। যা রীতিমতো আলোড়ন ফেলে দিয়েছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মনে।আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হয়ে প্রচারেও শামিল হতে চান বলে জানিয়েছেন সন্দীপ।
সন্দীপ বলেন, ‘এতকাল সিপিএম, কংগ্রেস আর বিজেপি মিলে ঠকিয়ে এসেছে ত্রিপুরাবাসীকে। রাজ্যের উন্নয়ন বলতে কিছুই হয়নি। কিন্তু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নের জোয়ার এসেছে। তাই পরবর্তী নির্বাচনে তৃণমূলকেই চাইছে ত্রিপুরার মানুষ।’
পেশায় সরকারি কর্মী সন্দীপ হলেন নৃপেন চক্রবর্তী’র দাদার ছেলের ছেলে। সেই সূত্র ধরেই নৃপেনবাবুর নাতি তিনি। পঞ্চাশের দশকে কলকাতা থেকে পার্টি হাই কম্যান্ড নৃপেনকে পাঠান ত্রিপুরায় সাংগঠনিক দায়িত্বের দেখভাল করতে। ১৯৭৬ সালে সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য এবং ১৯৮৪ সালে পলিটব্যুরোর সদস্যও নিবাচিত হন। ১৮৭৮-৮৮ অবধি, ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বভারও পালন করেন। এরপর পার্টির সাথে মতবিরোধের দরুন ১৯৯৫ সালে তাঁকে বহিষ্কৃত করা হয়। ২০০৪ সালে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই কমিউনিস্ট রাজনীতিবিদ।
সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্রতে উত্তর সম্পাদকীয় লেখার অপরাধে প্রয়াত সিপিএম নেতা তথা রাজ্য সিপিএমের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে ৬ মাসের জন্যে দল থেকে বহিস্কৃত করে হয়ে। যদিও সন্দীপের দলীয় সদস্যপদ না থাকায় সেই পন্থা অবলম্বন করতে পারছে না সিপিএম।
তবে এই প্রশ্ন থেকেই যায়, তাহলে কি বামপন্থার উপর থেকে সম্পূর্ণ ভাবে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন সাধারণ মানুষ? ভারতে মার্ক্সসবাদের তথাকথিত ‘পোস্টার বয়’ সিপিএমের উপর কি সব রকম আস্থা হারিয়েছেন আমজনতা ? এর উত্তর হয়তো স্পষ্ট হয়ে উঠবে আগামী কয়েক বছরেই।