চন্দ্রযান-২ এর হাত ধরে মহাকাশ গবেষণায় নতুন দিশা, চন্দ্রপৃষ্ঠে কিসের খনি আবিষ্কার করল ISRO
নতুন মাইলস্টোনের পথে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা। সোমবার ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, ভারতের মহাকাশযান চন্দ্রযান-২ চাঁদের চারপাশে ইতিমধ্যেই প্রায় ৯ হাজারের বেশি বার প্রদক্ষিণ করে ফেলেছে। রিমোর্ট সেন্সিং প্ৰযুক্তির মাধ্যমে ক্রোমিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজের মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলি সনাক্ত করেছে ইসরোর প্ৰযুক্তি।
২০১৯-এর ২২ জুলাই চন্দ্রের উদ্দেশে রওনা দেয় ভারতের মহাকাশযান। ফেসবুক ও ইউটিউবব্যাপী ২দিনের চন্দ্রবিজ্ঞান কর্মশালায় এ বিষয়ে বিশদে জানায় ইসরো। ভারতের সফল মহাকাশযাত্রার ২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে ইসরোর চেয়ারম্যান কে সিভান উছ্বসিত স্বরে জানিয়েছেন, “চন্দ্রযান ২ এর তথ্য আদতে জাতীয় সম্পত্তি। ভবিষ্যতে বিজ্ঞানের অগ্রগতির লক্ষ্যে ব্যবহৃত হবে এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।”
ইসরোর তরফে খবর, মহাকাশ বিভাগের সচিব কে সিভান চন্দ্রযানের প্রাথমিক তথ্যের খুব সামান্যই প্রকাশ করেছেন। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে, চন্দ্রযান-২-এর সফ্ট এক্স-রে স্পেকট্রোমিটারের ‘পে-লোড’-র ফলাফল নিয়ে মূলত আলোচনা করেছেন ইসরোর সচিব। এই ক্ষেত্রে ম্যাগনেশিয়াম. অ্যালুমিনিয়াম, সিলিকন, ক্যালসিয়াম ও টাইটানিয়ামের মতো মূল খনিজ উপাদানের উপস্থিতি পরীক্ষা করে দেখা হয়।
ইসরোর এক আধিকারিকের মতে, চাঁদের উপাদানের উপর এক্স-রে ফ্লুরোসেন্স বর্ণালীর পরিমাণ পরিমাপ করেছে চন্দ্রযান। ‘ক্লাস’-এর প্রধান পর্যবেক্ষক শ্যামা নরেন্দ্রনাথ জানান, “সর্বপ্রথম ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজের সুনির্দিষ্ট উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে চন্দ্রপৃষ্ঠে। গবেষণা অনুসারে, তীব্র সোলার ফ্লেয়ারের কার্যকালে কয়েকটি জায়গায় কিছু উপাদান সনাক্ত করা সম্ভব হয়।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চন্দ্রপৃষ্ঠে উপস্থিত মৌলগুলি সম্পর্কে আগের যাত্রায় সংগৃহীত মাটির নমুনাতেই পাওয়া যায়।
ইসরোর বিবৃতি অনুযায়ী, চন্দ্রযান-২ এর আটটি রিমোর্ট সেন্সিং ও অন-সিটু সিস্টেম চাঁদের পৃষ্ঠের নানাবিধ বৈশিষ্ট্য বহুদূর থেকেই পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা করতে সক্ষম। ফলে চাঁদের মাটির নমুনা পরীক্ষা করার জন্য সবসময় চাঁদে অবতরণের প্রয়োজন হয় না। ইসরোর পাশাপাশি দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় সফলভাবে মঙ্গলের ‘রক স্যাম্পেল’ সংগ্রহ করেছে নাসার মার্স রোভার পারসিভের্যান্স। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র মোতাবেক, লাল গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে সংগৃহীত পাথর পর্যবেক্ষণ করে বুধবার সফলভাবে তথ্য পেশ করেছে পারসিভের্যান্স। ফলত নাসা ও ইসরোর জোড়া সাফল্য যে বিশ্ববাসীকে আরও নতুন রহস্যের উত্তর দেবে, তা বলাই বাহুল্য।