Nagaland Op Deaths: পরিণয়ের পরিণতি রক্তপাতেই, নাগাল্যান্ড সংঘর্ষে বিয়ের ১২ দিনেই স্বামীহারা স্ত্রী

প্রথমে মণিপুরের(Manipur) চূড়াচাঁদপুর, তারপর ২১ দিনের মধ্যেই নাগাল্যান্ডের(Nagaland) মন জেলার ওটিং গ্রাম(Oting Village)। পর পর দুটি অ্যামবুশ, গোয়েন্দা(Detective) ব্যর্থতার(Failure) জেরে চরম ভোগান্তির শিকার স্থানীয়রা। ঘটনার সূত্রপাত ৫ই ডিসেম্বর, এদিন সন্ধ্যায় কয়লা খনির(Coal Mine) শ্রমিকরা প্রতি সপ্তাহের মতোই একটি পিকআপ ভ্যানে(Pickup Van ) চেপে নিজেরদের বাড়ি ফিরছিলেন। প্রতিবারের ন্যয় এইবারও একই ভাবে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছিলেন। তাঁদের মনের কোণে ফের বাসা বেঁধে ছিল একটা ক্ষণিকের সুখ। সপ্তাহান্তে নিজের পরিবারের কাছে আসার, নিজের সঙ্গে সময় কাটানোর কিংবা নিজের স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোর।
কিন্তু কিছুই যেন সম্পূর্ণ হল না। কোথাও একটা গিয়ে সব কিছুই বড্ড এলোমেলো হয়ে গেল বা বলা চলে মুহূর্তগুলো ছন্নছাড়া হয়ে গেল। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রইলো কতকগুলো নিথর রক্তাক্ত দেহ। তাঁদের শরীর থেকে প্রতিটা রক্তবিন্দুর সঙ্গেই যেন ভেসে বেরিয়ে গেল তাঁদের মধ্যে বেঁচে থাকা সেই ছোট্ট সুখগুলি। আর এই মাটিতে পড়ে থাকা এই নিথর সুখগুলির বিপরীতে দাঁড়িয়ে রইলো কতজন মোটা শোলের বুট পরা, বন্দুকধারী সৈন্য।
মুহূর্তের মধ্যেই চারিপাশে বেঁধে গেল কোলাহল, উত্তেজিত জনতাকে দেখে মনে হতে লাগলো তাঁদের এই যুদ্ধ বেঁচে থাকার যুদ্ধ, স্বাধীনতার(Independence) যুদ্ধ। হতাহতের জেরে মৃত্যুর সংখ্যা ১৭। উল্লেখ্য, এই ১৭ জনের মধ্যেই একজনের নাম হকআপ, পেশায় সেও বাকিদের মতো কয়লা খনির একজন দিনমজুর। সপ্তাহান্তে সেই পিকআপ ভ্যানে করে সেও ফিরছিল নিজের বাড়ি। আসলে গত ২৫ নভেম্বরই বিয়ে করে সে। তাঁর বিয়েতে নাকি গোটা গ্রাম আনন্দ করেছিল। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস! সুখ সইলো না কপালে। সুখের সংসার শুরুর আগেই সিঁদুরটা মুছে গেল তাঁর স্ত্রীর কপাল থেকে।
আরও পড়ুন…..Nagaland Firing: সেনার গুলিতে প্রাণপাত ১২ নিরাপরাধ গ্রামবাসীর, নেপথ্যে কী রাজনৈতিক রহস্য
কান্না ভেজা গলায় সে সংবাদমাধ্যমকে জানালো, খুবই ভালোবাসতো সে নিজের স্বামীকে। গত মাসের ২৫ তারিখই তাঁদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। সে আরও জানিয়েছে, “বিয়ের পর থেকে একে ওপরকে সেরকমভাবে সময় দেওয়া হয়নি। যেহেতু আমিও গির্জায় কাজ করি আর সেও নিজের কাজে ফিরে গিয়েছিল সেই কারণে খুব একটা সময় বের করতে পারেনি দুজনেই। কিন্তু সপ্তাহান্তে একটু আশা করেছিলাম তাঁর বাড়ি ফেরার…… এখন তাঁর সাথে হয়তো শেষ কথাটাই শুধু বলতে পারবো”। এরপর তাঁর স্বামীর কফিনটিকে গলায় জড়িয়ে নেয় মনলং। পাশেই বাড়ির দোরগোড়ায় দেখা যায় তাঁদের বিয়ের কাজে সজ্জার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হওয়া বাঁশটি এখনও মাটিতে পোঁতা রয়েছে কিন্তু তা দেখে এখন আর মনটা আনন্দিত হয়ে উঠছে না তাঁদের। যে হাত চিরকাল একসাথে ধরে রাখার কথা হয়েছিল, যে পথ চিরকাল একসাথে অতিক্রম করার প্রতিশ্রুতি একেওপরকে দেওয়া হয়েছিল, সে সবই এখন বিষণ্ণতার আচ্ছাদনে ঢাকা পড়ে গিয়েছে।