Cyclone Jawad: জাওয়াদ গ্রাসে বাংলা, আম্ফানের দুর্বিষহ স্মৃতি নিয়েই আতঙ্কে প্রহর গুনছে আম-আদমি

আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস মেনে শনিবার সকালেই বাংলার বুকে আছড়ে পড়ার কথা বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের। ইতিমধ্যেই সেই পূ্র্বাভাস সত্যি করে করে মুখ ভার করে ফেলেছে বাংলার আকাশ। উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলোতে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইতেও শুরু করে দিয়েছে। যদিও কিছুটা স্বস্তি মেলার খবর ইতিমধ্যেই পাওয়া যাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর থেকে। তারা জানান রবিবার পুরী ছুঁয়ে আসার সময় ঘুর্নিঝড় জাওয়াদের শক্তি ক্ষয় হয়ে তা গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে।
তবু ঝড়ের(cyclone) হাত থেকে সম্পূর্ণ রেহাই নেই। শনি, রবি সহ সোমবারেও থাকছে বৃষ্টির আশঙ্কা। আপাতত ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান পুরী থেকে ৪৩০কিলোমিটার দূরে রয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। সুতরাং খুব তাড়াতাড়িই যে জাওয়াদের প্রবেশ করবে বাংলার উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর ছিক সেই উদ্বেগের কথা মাথায় রেখেই জাওয়াদ হানা ঠেকাতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুরের মতো উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে চলছে জোরদার সতর্কতামূলক প্রচারাভিযান।
আরও পড়ুনঃCyclone JAWAD:আরও শক্তিশালী হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ, সাইক্লোন নিয়ে সতর্কবার্তা বিশেষজ্ঞদের
পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগণায় শনিবার ভোর থেকেই মেঘলা আকাশের দেখা মিলিছে, সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি। এদিকে বেলা বাড়তেই শীতও যেন উধাও হতে বসেছে। বাতাসে বেড়েছে আদ্রতার পরিমাণ। অন্যদিকে জাওয়াদের সঙ্গে রয়েছে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসও।শনিবার অতি ভারী বৃষ্টি হবে দুই মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া ও হুগলিতে, এমনটাই জানাচ্ছে আবহাওয়া দপ্তর। মাঝারি বৃষ্টি হবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে, এবং ভারী বৃষ্টির হবে দুই বর্ধমান,নদিয়া ও মুর্শিদাবাদে। পাশাপাশি রবিবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বাঁকুড়া, বীরভূম ও পুরুলিয়ায়। এবং মাঝারি বৃষ্টি হবে মালদহে।
এদিকে দুর্যোগ ঠেকাতে শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে মহকুমা ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকেরা একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন। সেখানেই ঝড়ের কারণে হওয়া ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এদিকে শনিবার সকাল থেকেই প্রশাসন সুন্দরবনের উপকূলের নীচু এলাকার বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে আসছে। জেলায় ১০০টির বেশি ফ্লাড শেল্টার ও সাইক্লোন সেন্টার-সহ বিদ্যালয় ভবনগুলিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ব্লক অফিসগুলোতে কন্ট্রোলরুম খুলে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে সব পঞ্চায়েতের সঙ্গে। ইতিমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, সাগর ও কাকদ্বীপে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল বা এনডিআরএফ(NDRF) ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দল বা এসডিআরএফ টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলের জেলাগুলিতে শনিবার সকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে বৃষ্টি। সেখানে শুক্রবার রাত থেকেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছিল। এদিকে ‘নবান্নে’র সময় বহু মাঠে এখনও পাকা ধানে ভরে রয়েছে। আর তাতেই যেন পাকা ধানে মই দিতে উঠে পড়ে লেগেছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ। এই আবহাওয়ার পরিস্থিতি দেখে চাষী সহ শঙ্কিত সমস্ত উপকূলবাসীই। এছাড়াও শনিবার বিকেল থেকেই ঝড়ের বেগ ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার হবে বলে জানাচ্ছে হওয়া অফিস। ইতিমধ্যেই ওড়িশা, অন্ধ্র ও বাংলার উপকূলে মোতায়েন করা হয়েছে এনডিআরএফের ৪৬টি টিম। আবহাওয়াবিদরা জানান মঙ্গলবারেও বৃষ্টির আশঙ্কা থাকবে। দুই পরগণা সহ পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া এবং উত্তরবঙ্গের সব জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।