Maternity leave UGC- মাতৃত্বকালীন ছুটির ঘোষণা ইউজিসি’র, পাবে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা

Maternity LeMযেসমস্ত ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে (University) গবেষণারত হিসাবে রয়েছেন সেসমস্ত ছাত্রীদের মাতৃত্বকালীন ছুটির (Maternity leave) অনুমোদন ২০১৬ সাল থেকেই ছিল। এবছর অর্থাৎ ২০২১ সাল থেকে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক (Graduation) ও স্নাতকোত্তরের (Post Graduation) পড়ুয়াদের জন্যও সেই নিয়মবিধির জন্য নির্দেশিকা দেওয়া হল। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (UGC) সচিব রজনীশ জৈন এই মঙ্গলবার দেশের সব ক’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের উদ্দ্যেশ্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। সেই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ আছে অবিলম্বে মাতৃত্বকালীন ছুটির নিয়ম কার্যকর করার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার। ইউ জি সি এর সচিব বিজ্ঞপ্তিতে লিখেছেন, ‘সন্তানের জন্ম দেওয়া অথবা তাদের লালন-পালনের জন্য এমফিল (M.Phil) বা পিএইচডি (PHD) এর ছাত্রীদের ২৪০ দিন মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হয়। এ বার যে কোনও উচ্চশিক্ষার (Higher Education) ক্ষেত্রেই যাতে সেই সুযোগ দেওয়া হয়, তার নির্দেশিকা দেওয়া হলো।’
ইউজিসি এর সচিবের দেওয়া এরূপ নির্দেশিকা উপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাব হিসেবে অত্যন্ত ভালো। রাজ্য সরকারের সম্মতি পেলে আমরাও এই ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ করতে পারি। এটা গোটা দেশের ক্ষেত্রেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘আমরা এখনও ই-মেল পাইনি। ই-মেল পেলে এই ব্যাপারে সিন্ডিকেটে আলোচনা করা হবে।’
বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য, অনেক ছাত্রীকেই পড়াশুনা চলাকালীন গর্ভবতী হলে পড়াশুনা ছেড়ে দিতে হয় বা সেই বছর ড্রপ দিতে হয়। তারপরে অনেকেই সেই ছেড়ে দেওয়া পড়াশুনাকে আর নিজের জীবনে ফেরাতে পারেন না নানা কারণে বা অনভ্যাসের জন্য। তাই ইউ জি সিয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে মাতৃত্বকালীন সময়ে ছাত্রীরা যেন ছুটির সাথে সাথে পরীক্ষার ফর্ম জমা দেওয়া এবং অন্যান্য যে কোনও ক্ষেত্রে ছাড় পায়। এবং এই নিয়ম সকল কলেজ সহ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযোজ্য হবে।
এই নির্দেশিকার ফলে অনেকের অনেক প্রশ্নও ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। যেমন রাজ্যের স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রক সংস্থায় উচ্চ পদে দীর্ঘদিন যাবৎ কর্মরত এক শিক্ষা প্রশাসকের কথায়, ‘UGC যখন এই নির্দেশ দিয়েছে, তার মানে এটা কার্যকর করার কথাই বলা হয়েছে। পড়াশোনা করতে করতে বিবাহিত ছাত্রীরা নানা অসুবিধের সম্মুখীন হন। তাঁদের কথা ভেবেই এই নির্দেশিকা কমিশনের। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলি কী ভাবে বিষয়টি কার্যকর করবে, সেটাই দেখার।’ কারণ, তাঁর ব্যাখ্যা, ‘প্রথমত, কোনও ছাত্রী তৃতীয় সেমেস্টারে সন্তানসম্ভাবা হলে ৯ মাসের গর্ভবতী অবস্থায় বা সদ্যোজাতকে নিয়ে তিনি ফাইনাল পরীক্ষা দেবেন কী ভাবে? তা হলে কি বর্তমানে যে ব্লেন্ডেড মোড বা মিশ্র পদ্ধতিতে পড়াশোনা ও পরীক্ষার কথা বলা হচ্ছে, অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের ক্ষেত্রে কি সেই ব্যবস্থা করা হবে? আবার কলা বিভাগে না-নয় প্র্যাকটিক্যাল নেই। কিন্তু বিজ্ঞানের বিষয়গুলিতে কী হবে?’
আরও পড়ুনঃ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নিজেকে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল ভারত, জেনে নিন ইতিহাস
অন্যদিকে এই নির্দেশিকার উপর মন্তব্য করেছেন লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকারের। তিনি বলেছেন ‘ছাত্রীরা পড়াশোনা করবে নাকি বিয়ে করে সংসার বাড়াবে, সেটা একান্তই তাঁর ও পরিবারের বিষয়। তবে আমাদের দেশে বিভিন্ন কারণে মেয়েদের কম বয়সে বিয়ে হয়। সে দিকে তাকিয়েই এই সিদ্ধান্ত। তবে আমি বলব, লেখাপড়ার সময়ে অন্য কিছু না-করাই ভালো। সেটাকে মান্যতা দিয়ে পরিবার, প্রতিবেশী ও সমাজের সেই ছাত্রীর পাশে দাঁড়ানো উচিত।’
আবার অন্যদিকে বেথুন কলেজের অধ্যক্ষা কৃষ্ণা রায় নিজের জীবনের অভিজ্ঞতার সাথে এই পরিস্থিতির তুলনা করে বলছেন, ‘এটা মানবাধিকার। মহিলাদের ক্ষমতায়নে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ১৮ বছর পেরিয়ে বিবাহিত ও সন্তানসম্ভবা হতেই পারে। সেটা একেবারে তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়।’