Kargil Vijay Diwas: যুদ্ধে প্রতি সপ্তাহে খরচ ৫০০০ কোটি, তবু অঙ্ক মেলেনি ‘সামান্য’ ২২ কোটি টাকার

আজ থেকে ২৩ বছর আগে ভারতের বুকে বেজে উঠেছিল বিজয়ী ধ্বনি। পাকিস্তানের ( Pakistan ) আগ্রাসনকে ধুলোর সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে কার্গিলের ( Kargil ) পাহাড়ে লেখা হয়ে বিজয়গাঁথা। পাকিস্তানকে হারিয়ে পাহাড়ের চূড়া বেয়ে যেন শোনা গিয়েছিল একটাই চিৎকার ‛ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর’। কানে যেন ভাসে সেই আওয়াজ। গলাটা ছিল বিক্রম বাত্রার। পৃথিবী আজও তাঁকে ভোলেনি এবং শুধু  তাই নয় তাঁর মতোই বাকি ৪ জওয়ানকেও ভুলতে পারিনি ও কখনই পারব না। 

প্রায় দু’মাস ধরে চলেছিল যুদ্ধ এবং অবশেষে আজকের দিনেই ফুটেছিল একটা নতুন ভোর। চারপাশ আলো করে বিজয়ী ধ্বনি সেদিন বেজে ছিল ভারতের। নব্বইয়ের শেষ বছরটায় কাশ্মীর ও লাদেখের সম্পর্ক ছিন্ন করে নিয়ন্ত্রণ রেখা ধরে প্রবেশ করে সশস্ত্র পাকিস্তানের বাহিনী। এরপর ভারতীয় ভূখন্ডের দখল ও সেখানেই নিজেদের ঘাঁটি তৈরি। প্রথমদিকে জয়টা তাদের মনে হলেও দিন শেষে বেজে উঠেছিল ‛ইয়ে দিল মাঙ্গে মোর’ ধ্বনি। বিজয়ী পতাকা তুলেছিল ভারত। দুই দেশের মধ্য দিয়ে যেন বয়ে গিয়েছিল হাজারও রক্তের স্রোত। 

জানা যায়, এই কার্গিল যুদ্ধ বিজয়ী ( Kargil Vijay Diwas ) হওয়া পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে পাঁচ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হয়েছিল। এই অঙ্ক হয় শুনে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যাবে যে কারও। কিন্তু এই কোটি কোটি টাকা আসলে খরচ হয়েছিল দেশের স্বার্থে, এই ভূখণ্ডের প্রতিটি ব্যাক্তি-মানুষের সুরক্ষার স্বার্থে, পার্শবর্তী দেশের আগ্রাসনকে নিষ্পেষণের স্বার্থে। যে কারণে এই যুদ্ধের ভারতের বাজেট ও অর্থনীতিও অনেকটা চাপের মুখে পড়ে যায়। 

kargil (1)

কাট টু প্রেজেন্ট! বিগত কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। শিক্ষক নিয়োগ মামলায় দেখা গিয়েছে নতুন মোড়। ইডির চিরুনি-তল্লাশি মানুষের সামনে যেন তুলে ধরেছে একাধিক অপ্রিয় সত্যকে। চেনা মানুষ যেন হয়ে উঠেছে অচেনা-অজানা। রাজনৈতিক মহলে একটি বিষয় হামেশাই চর্চায় আসে যে, বর্গি আক্রমণ থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলার মানুষ তৃণমূলকেই ভরসা করেছিল। কিন্তু দিন শেষ সেই ভরসা কতটা গুরুত্ব পেল? এই ‛কোটি’ টাকার প্রশ্নটা এখন যেন মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে চারপাশ থেকে। গতকালই বঙ্গভূষণ ও বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার বিতরণী মঞ্চ থেকে মমতা ব্যানার্জি ( Mamata Banerjee ) বলে উঠলেন, “বই লিখি, গানে সুর দিই, অনেক বই বেস্ট সেলার”। তবে মানুষ কি এটাকেই সেই কোটি টাকা আয়ের ‛উৎস’ হিসেবে ধরবে নাকি নেপথ্যে আবার কোনও অন্য কাহিনী। 

partha and arpita

ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ( Partha Chatterjee ) (বর্তমান শিল্পমন্ত্রী) ও পার্থ-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় ( Arpita Mukhopadhyay )। ইডির তল্লাশিতে এই অভিনেত্রীর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় কোটি টাকার পাহাড়। যা রাজ্য জুড়ে তৈরি করে নানা ‛কোটি’ টাকার প্রশ্ন। এমতাবস্থায় শরীরে দহনদশা ধরে মন্ত্রীমশাইয়ের। ‛হাসপাতাল-হাসপাতাল’ বলতেই রাজ্য পেরিয়ে নিয়ে চলে যাওয়া হয় ভুবনেশ্বর AIIMS-এ। কিন্তু সেখানেও যে নেই মুক্তির স্বাদ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাফ বক্তব্য,পার্থবাবু ঠিক আছেন, ভর্তি করার প্রয়োজন নেই। এরপর থেকেই যেন চাপের পরিমাণ বাড়তে থাকে। আপাতত আদালত-আইন-তল্লাশি- এই হল কয়েকদিনের রুটিন পর্ব।

partha and arpita

কিন্তু একটা প্রশ্নের উত্তর এখনও অস্পষ্ট। এই কোটি টাকার পাহাড়ের উৎস কী? আর যাই উৎসই থাকুক সেই পাহাড়প্রমাণ টাকা একজন ছোট পর্দার অভিনেত্রীর কাছেই বা আসতে পারে কীভাবে? এটা নিশ্চই রাজ্যের স্বার্থে নয় কিংবা এ রাজ্যের সাধারণ মানুষের স্বার্থে নয়? তা হলে কার স্বার্থ পূরণে এত গুলো টাকার আগমন। এই পরিস্থিতি থেকে একটি ভাবনা হামেশাই খোঁচা দেয় কার্গিলের সেই কোটি কোটি টাকাও যদি কারও পকেটে ঢুকে যেত তা হলে আজ মানুষ বিক্রম বাত্রাকে চিনতে পারত? ঠিক যেমন, প্রতিদিনের আসা-যাওয়ায় সড়কের পাশে আন্দোলনে বসে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ব্যস্ততার মাঝে এড়িয়ে যাচ্ছি, তেমনই হয় আমরা আজ এড়িয়ে যেতাম এই জওয়ানদেরও। কার্গিল যুদ্ধের খরচের হিসাব জনগণের মাঝে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কিন্তু এদিকে রাজ্যের এই ২২ কোটি টাকার পাহাড়ের হিসাব নেই কারও কাছে। কাদের হাত ধরে ভিত্তি প্রস্তর হয়েছিল দুর্নীতির তাও আপাতত অধরা।




Back to top button