৯০ বছর পেরিয়েও জনপ্রিয়তা কমেনি বিন্দুমাত্র! বাঙালির নস্টালজিয়া থেকে নিত্যসঙ্গী BOROLINE

বাঙালি আর নস্টালজিয়া যেন একসূত্রে গাঁথা। পুরোনো দিনের এমনকি কিছু জিনিস রয়েছে যেগুলো চির সবুজের মত ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েছে বাঙালিদের সাথে। ভাবছেন কি এমন জিনিস যেটা আস্ত একটা যুগ বদলে গেলেও একই রকম জনপ্রিয় রয়ে গেছে! সেই জিনিসটি হল বাঙালির বাড়ির অত্যাবশ্যক বোরোলিন (Boroline)।
Boroline- এর বয়স
হ্যাঁ ঠিকই দেখছেন, গাঢ় সবুজ রঙের একটা টিউব যেটা দীর্ঘ ৯০ বছর পেরিয়েও একইরকম জনপ্রিয় রয়ে গিয়েছে প্রত্যেকটা বাঙালির কাছে। ‘সুরভিত অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বোরোলিন’ অতিপরিচিত এই লাইনটি আজও একইরকম রয়ে গিয়েছে। আর একই রয়েছে বাঙালির ৯০ বছরেরও বেশি সময়ের সঙ্গী বোরোলিন।
শ্রাবন্তী মজুমদারের কণ্ঠে Boroline- এর বিজ্ঞাপন
যার কণ্ঠস্বরে বোরোলিনের বিখ্যাত লাইনটি আমাদের সকলের মনে গেঁথে রয়েছে তিন ইহলেন শ্রাবন্তী মজুমদার। বোরোলিনের যখন প্রথম উত্থান হয় তখন তো আর এখনকার মত টেলিভিশনের মত চল ছিল না! সেই সময় রেডিওতে বেজে উঠত বিখ্যাত এই লাইনটি। তবে সময়ের সাথে সাথে কিছুটা বদল এসেছে, টিভির পর্দায় বলিউড অভিনেত্রী বিদ্যা বালানকে দেখা গিয়েছে বোরোলিনের বিজ্ঞাপনে।
Boroline- এর জন্ম
আজ আপনাদের বোরোলিনের যাত্রাপথ শুরুর গল্পটাই জানাবো। সময়টা ছিল ১৯২৯, ভারত তখন ব্রিটিশদের শাসন থেকে মুক্তি পাবার জন্য লড়ছে। স্থানে স্থানে বিপ্লবীরা বিদেশী দ্রব্য বয়কটের ডাক দিচ্ছেন। এমন সময়েই ডিজি ফার্মাসিউটিক্যালসের গৌরমোহন দত্ত তৈরী করে ফেললেন ‘বোরোলিন’। কাটাছেড়া থেকে শুরু করে পুড়ে যাওয়া হোক বা চামড়া ফেটে যাওয়া সবেতেই ম্যাজিকের মত কাজ করতে শুরু করে এই জাদু মলম।
Boroline- এর পথে বাধা
গাঢ় সবুজ রঙের টিউবে বন্দি সাদা অ্যান্টিসেপটিক ধীরে ধীরে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় সাধারণ মানুষের থেকে। বিদেশী দ্রব্যের চাহিদায় রীতিমত কোপ পড়ে স্বদেশী দ্রব্য বোরোলিনের দৌলতে। তাই সাহেবরা চেয়েছিল বোরোলিন শব্দটাকে মুছে ফেলতে, তবে সফল হয়নি। বরং স্বাধীনতার পর একসময় হাতিমার্কা এই বোরোলিন সাধারণ মানুষের জন্য বিলি করা হয়েছিল বিনা পয়সায়।
Boroline- এর সফলতা
এভাবেই ধীরে ধীরে দেশের তৈরী এক জাদু মলম ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র। এমনকি আজ ৯০ বছর পেরিয়েও এই বোরোলিনের জনপ্রিয়তা রয়েছে অক্ষুন্ন। গ্রীষ্ম, বর্ষা থেকে শীত সর্বদাই বাঙালির সঙ্গী হয়ে রয়ে গিয়েছে অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম বোরোলিন।
আরও পড়ুন : Jalpaiguri Suicide case : বোর্ডের অঙ্ক মিললেও জীবনের অঙ্ক মিলল না সোমনাথের, ‘মা আই কুইট’ লিখে আত্মঘাতী কিশোর