Uk News Viral : মাথাটাই আস্ত সুপার কম্পিউটার! কঠিন রোগের শিকার হয়েও মুখস্ত ১২ হাজার বই

এই পৃথিবীতে অসম্ভব বলে হয়তো কিছুই নেই। আমাদের চারপাশে আমরা প্রতিটি ক্ষনে কতশত আশ্চর্য প্রতিভাবান মানুষ দেখতে পাই। কেউ কেউ আবার সাধারণ ধ্যান-ধারণার মধ্যেই পড়েন না। সাধারণকে ছাপিয়ে যারা অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেন তারাই তো অসাধারণ। এইরকমই একজন মানুষ ছিলেন লরেন্স কিম পিক( uk News Viral )। আমেরিকায় জন্মগ্রহণকারী এই মানুষটি “এই পৃথিবীতে অসম্ভব বলে কিছু নেই” এই কথাটির অনেক বড়ো উদাহরণ স্বরূপ ছিলেন।
কে এই ব্যক্তি
১৯৫১ সালের ১১ই নভেম্বের, আমেরিকার সল্ট লেক সিটিতে লরেন্স কিম পিক (Laurance Kim Peek) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। জন্মকালীন সময় থেকেই তিনি ছিলেন এক ভীষণ রোগে আক্রান্ত। এফজি সিনড্রোম রোগে আক্রান্ত ছিলেন লরেন্স। জন্মের সময় সাধারণ শিশুর তুলনায় তার মাথার আকার ছিল বৃহৎ। তার মস্তিষ্কে করোটির দুটি খন্ডের মধ্যেকার যোগাযোগ স্থাপনের স্নায়ু সংখ্যার পরিমান সাধারণের তুলনায় ছিল যথেষ্ট কম ছিল।
লরেন্সের চিকিৎসক যা বলেছিলেন
লরেন্সের জন্মের পর চিকিৎসকেরা লরেন্সের মা-বাবাকে জবাব দিয়েই দিয়েছিলেন যে, কিম কখনো হাঁটতে বা কথা বলতে পারবেনা। তবে কিম এর মা-বাবা হাল ছাড়তে নারাজ ছিলেন। তারা নিজেদের চেষ্টায় লরেন্সকে স্বাভাবিক আর পাঁচজন শিশুদের মতো গড়ে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন। অবশেষে তাদের চেষ্টা সফল হয়েছিল। ধীরে ধীরে হলেও লরেন্স জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে থাকেন। চার বছর বয়সে কিম হাঁটতে শেখেন। তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশ হতে থাকে ধীর গতিতে।
লরেন্সের মগজাস্ত্র ক্ষুরধার
তবে কিম এর মগজাস্ত্র ছিল ক্ষুরধার। ছোট থেকেই তিনি যা শুনতেন, যা পড়তেন সব হুবহু মনে রাখতেন তিনি। একবারের দেখাতেই গোটা বই মুখস্থ করে ফেলতেন তিনি। মায়ের বলা প্রতিটি গল্প তার স্মৃতিতে বন্দি থাকতো। এক ঘন্টারও কম সময়ে তিনি একেকটি বই মুখস্থ করে ফেলতেন। তার একটি অদ্ভুত স্বভাবও ছিল, যা তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত অব্যাহত রেখেছিলেন। লরেন্স নিজের পড়ে শেষ করে ফেলা বইগুলি সেলফে উল্টো করে রাখতেন বরাবরের অভ্যাসবশত।
ব্যরি লেভিনসনের ‘রেইন ম্যান’
এই অসাধারণ ব্যাক্তির কথা মাথায় রেখেই ব্যরি লেভিনসনের ‘রেইন ম্যান’ সিনেমাটি প্রস্তুত হয়েছিল। সেই সিনেমাতেও এমনি এক চরিত্রের ছবি দেখা গিয়েছিলো, যিনি এককথায় অসাধারণ, আশ্চর্যকর ছিলেন। অসম্ভবকে সম্ভব করে জীবনের কঠিনতম বাধাবিপত্তি পেরিয়ে ৫৮ বছর বয়সে লরেন্স পৃথিবী থেকে চিরতরে বিদায় নেন। সেই অসাধারণ মানবের সমাপ্তি ঘটে।