Largest Pearl : দাম্পত্য জীবনে এনেছে ঝড়, অভিশপ্ত মুক্তের তকমা পেয়েছে লা পেরেগ্রিনা

মেরি মেরি কুইট কন্ট্রারি-র ছড়ার ইতিহাস
ছোটবেলায় পড়া পরিচিত এক ছড়া ‘মেরি মেরি কুইট কন্ট্রারি’। তখন আমরা কেউই ইতিহাসের কোনো খবরই রাখতাম না। অবশ্য কেউই শিশু মনে সেই ভয় বা আতঙ্ক রাখতে চায় না। তবে সবাই পরবর্তীকালে মেরি টুডোরের অভিশাপের কথা জানতে পারি। তাঁর ব্যবহৃত সমস্ত জিনিসই নাকি ( Largest pearl ) অভিশপ্ত হয়ে যায়। তাই তাঁর কোনো জিনিসই ব্যবহার করা যায়নি। শুধু একটা জিনিস বাদে।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুক্তো
বর্তমানে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে দামি জিনিসগুলির মধ্যে একটি। একটি ১ ইঞ্চি মাপের মুক্তো, যার নাম লা পেরেগ্রিনা (La Peregrina)। এটি অভিশপ্ত হলেও কিন্তু এমন বড়ো মাপের মুক্তো ( Largest pearl ) পৃথিবীর কোথাও নেই।
লা পেরেগ্রিনা-র ইতিহাস
এটি নাকি ১০ হাজার ঝিনুকের মাত্র একটিতে এই মুক্তোর ( Largest pearl ) সন্ধান পাওয়া যায়। তাও সেগুলো কয়েক মিলিমিটার ব্যাসের। দাম অনেক হওয়াই স্বাভাবিক। আর যে মুক্তোর ব্যাস ১ ইঞ্চি, তার দাম ( Largest pearl ) আকাশ ছোঁয়া। প্রায় ৫০০ বছর ধরে এই মুক্তোর মতো সমান আর কোনো মুক্তো পাওয়া যায়নি। ১৫১৩ খ্রিস্টাব্দে পানামা উপসাগরে নাকি পাওয়া যায় এই মুক্তোটি।
মিলল মুক্তোর হদিশ
গোটা লাতিন আমেরিকাজুড়ে তখন দখল করে বেড়াচ্ছে স্প্যানিয়াড বাহিনী। সেই অঞ্ছলের স্থানীয় মানুষরা প্রত্যেকেই ক্রীতদাসে পরিণত হয়েছিলেন। সেখানকারই এক ক্রীতদাস ঝিনুকের বুক থেকে খুঁজে পায় সেই মুক্তোটি। ঠিক গোল নয় এই মুক্তো ( Largest pearl ) বরং দেখতে ঠিক একটি অশ্রু ফোঁটার মতো। মুক্তোটা দেখার পর স্প্যানিয়াডরা এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে সে সেই ক্রীতদাসকে বিনা শর্তে মুক্তিটি দিয়েছিলেন।
হাত পেরিয়ে মুক্তো গেল নতুন হাতে
এরপর পানামার শাসক ডন পেদ্রো দি টেমেজ মুক্তোটি ( Largest pearl ) দিয়েছিলেন স্পেনের রাজা দ্বিতীয় ফিলিপের হাতে। তিনি মুক্তোটি একটি নেকলেসে বাঁধিয়ে উপহার দিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী ইংল্যান্ডের রানি মেরিকে। তিনিই হলেন ইতিহাসের সেই কুখ্যাত মেরি টুডোর। যাঁর গর্ভে আবার নাকি দুবার শয়তানের জন্ম হয়েছিল। তবে সেই কাহিনির সত্যতা জানা যায় নি।
জীবনে এনেছে ঝড়
তবে মেরি টুডোরের বিবাহিত জীবন যে সুখের হয়নি, সে-কথা ঐতিহাসিক সত্য। আর এই কথাও সত্যি যে লা পেরেগ্রিনা ( Largest pearl ) যখন যাঁর কাছে থেকেছে, কারোরই জীবনই সুখের হয়নি। তিনি মারা যাওয়ার পর আবারও স্পেনের রাজবংশে ফিরে আসে সেই মুক্তোটি। বলা বাহুল্য যে, এই অত্যন্ত সৌন্দর্য মুক্তোকে ( Largest pearl ) ঐশ্বর্যের প্রতীক হিসাবে মেনে নিয়েছিল স্পেনের রাজপরিবার। অভিশাপের কথা তাঁরা ভূলে গিয়েছিল।
স্পেনের রানিদের বড় প্রিয় এই মুক্তো
স্পেনের প্রায় সমস্ত রানির ছবিতে এই মুক্ততে ( Largest pearl ) আবৃত নেকলেস দেখা যায়। এমনিতে সবসময় তিনি সেই নেকলেসটি পরে থাকতেন না। কোনো অভিজাত মণ্ডলীর সভা বা আন্তর্জাতিক সমাবেশ থাকলে প্রতিটা রাণী গলায় থাকত এই নেকলেস। এর মধ্যে স্পেনের রানি ইসাবেলের বিবাহবহির্ভূত যে প্রেম সেটি এক অভিশপ্ত কাহিনি হয়ে ওঠে। সেই প্রেমিককে নাকি হত্যা করেন কোনো এক অজ্ঞাত আততায়ী। রাণী ইসাবেলের থেকে এই মুক্তো ( Largest pearl ) আসে রানি মারিয়ানার হাতে। তিনি ৫ জন সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন যার মধ্যে ৩ জন শৈশবেই মারা গিয়ে ছিল। বাকি দুই সন্তানও শারীরিক অসুস্থতায় ভুগতে থাকেন। শেষপর্যন্ত তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন প্রজনন ক্ষমতা। এইসব ঘটনার পরেই সচেতন হতে হয় স্পেনের রাজপরিবারকে। তখন লুকিয়ে ফেলা হয় সেই মুক্তোটি।
স্পেন থেকে ফ্রান্সে গমন এই মুক্তোর
১৮০৮ সালে নেপোলিয়ানের স্পেন আক্রমণের সময় সেই মুক্তোটির ( Largest pearl ) সন্ধান পাওয়া যায়। স্পেনের বিজয়ীর পর নেপোলিয়ান তাঁর ভাই জোসেফ বোনাপার্টকে সিংহাসনের ভাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৮১৩ সালে জোসেফ বোনাপার্টকে স্পেন ছাড়তে হয়েছিল। তিনি আবার লা পেরেগ্রিনাকে ফ্রান্সে নিয়ে এসেছিলেন। তারপর তাকে সেই নেকলেস তিনি উপহার হিসাবে দান করেছিলেন। তৃতীয় নেপোলিয়ান যখন এই মুক্তটির ( Largest pearl ) অভিশাপের কথা জানতে পেরেছিলেন, তখনই তিনি ঠিক করলেন তিনি আর এটিকে সঙ্গে রাখবেন না। তাই তিনি লন্ডনের ডিউক অফ অ্যাবারকর্নকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন মুক্তোটি। লন্ডনের অসংখ্য অভিজাত পরিবার যখন এই একটি পরিবারের অভিশপ্ত কাহিনির কথা জেনে গিয়েছিল তখন বীতশ্রদ্ধ ডিউক ১৯৬৯ সালে মুক্তোটি নিলামে তুলে দিয়েছিলেন।
ঐতিহাসিক মুক্তো গেল অভিনেতার হাতে
সথেবি’জ আয়োজিত সেই নিলামে ৩৭ হাজার ডলার দিয়ে মুক্তোটি কিনে নিয়েছিলেন বিখ্যাত অভিনেতা রিচার্ড বার্টন। সেই বছরই ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে এই মুক্তোটি ( Largest pearl ) লকেটে বাঁধিয়ে তাঁর তৎকালীন স্ত্রী এলিজাবেথ টেলরের হাতে এই উপহারটি তিনি দিয়েছিলেন। টেলরের উপহারটি খুব পছন্দ হয়েছিল। এরপর থেকে তাঁর প্রায় সমস্ত ফটোতেই দেখা যায় সেই লকেটটি। এমনকি একাধিক সিনেমাতেও এটি পরেছিলেন।
তবে টেলর আর বার্টনের দাম্পত্য জীবনও বলিউডে পরিচিতি ছিল। এমনকি ক্যামেরার সামনেও তাঁদের হাতাহাতি করতেও দেখা গিয়েছিল। এই জন্যই বহু মানুষ বিশ্বাস করেন এই সবকিছুর কারণে দায়ী মেরি টুডোরের অভিশাপ। শোনা যায় ২০১১ সালে এলিজাবেথ টেলরের মৃত্যুর পর আবারও নিলামে ওঠে মুক্তোটি।( Largest pearl ) এবারে দাম বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ১৮ লক্ষ মার্কিন ডলার। তবে এখনও অবধি ক্রেতার নাম জানা যায়নি। তিনি কি আদেও ঠিক আছেন? শান্তিতে আছেন? নাকি এখনও মেরি টুডোরের অভিশাপ সেই মুক্তোটি কে আকৃষ্ঠ করে আছে?
আরও পড়ুন……Worlds dirtiest man : টানা ৬৭ বছর স্নান করেই দিব্যি বেঁচে আছেন বিশ্বের সবথেকে নোংরা মানুষ দেখুন ছবি