Zone Of Silence : নেই নেটওয়ার্ক, কাজ করে না কম্পাস, এই রহস্যময় অঞ্চলেই নাকি আনাগোনা রয়েছে ভিনগ্রহীদের

এ পৃথিবীতে মানুষের বসবাস তাও প্রায় কয়েক হাজার বছর। যদিও এই স্বল্প সময়ে পৃথিবীর সকল রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি মানবসমাজ। উত্তর মেক্সিকোর(Mexico) চিহুয়াহুয়ান মরু অঞ্চলের এক অদ্ভূত জায়গার রহস্য আজও অবাক করে সকলকে। রেডিয়ো সিগন্যাল হোক বা কম্পাস, দিকদর্শন বা যোগাযোগের কোনো মাধ্যমই কাজ করে না এখানে। বারমুডা ট্রায়াঙ্গলের(Barmuda triangle) ঘটনার সঙ্গে তুলনা করা হয় মেক্সিকোর এই অঞ্চলকে( Zone Of Silence )।

অঞ্চলের নাম Zone Of Silence

Zone of silence

নানা সময়ে নানা মানুষ এই অঞ্চল পরিদর্শনে এসেছেন। ফলত তাঁদের অভিজ্ঞতা শুনে কোনটা সত্যি আর কোনটা গুজব, তা বোঝার উপায় থাকে না। ভিন্‌গ্রহীদের আনাগোনা থেকে অদ্ভুতুড়ে উল্কাবৃষ্টি, সবকিছুই নাকি প্রত্যক্ষ করেছেন পর্যটকরা।এহেন অপ্রত্যাশিত আচরণের জন্য এই অঞ্চলের নামকরণ করা হয়েছে ‘জোন অব সাইলেন্স’(Zone Of Silence ), অর্থাৎ ‘নীরবতার অঞ্চল’।

Zone of silence

ভৌগোলিকদের মতে Zone Of Silence-এর অবস্থান

Zone of silence

ভৌগোলিকদের মতে ‘জোন অব সাইলেন্স’-এর ব্যাপ্তি মাত্র ৫০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। প্রায় চার লক্ষ হেক্টর এলাকাব্যাপী মাপিমি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের একটি অংশ নীরবতার অঞ্চল। সম্পূর্ণরূপে বসতিহীন হওয়ায় এই অঞ্চল জুড়ে রহস্যের জাল ঘনীভূত হয়েছে আরও।

Zone of silence

ইতিহাস Zone Of Silence নিয়ে যা বলছে

Zone of silence

 

ইতিহাস বলছে, ১৯৬৬ সালে প্রিমেক্স নামে একটি তেল উৎপাদনকারী সংস্থা এই অঞ্চল পরিদর্শনে আসে। যে পরিদর্শনকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন অগাস্ত হ্যারি দে লা পিনা। তখন যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম ছিল রেডিয়ো সিগন্যাল, এলাকায় প্রবেশের পরই তিনি লক্ষ্য করেন যে ওই সিগন্যাল কখনও আছে, কখনও নেই। এরপরই তিনি এই অঞ্চলের এহেন নামকরণ করেন।১৯৭০ সালে পুনরায় এই অঞ্চলের নাম সকলের সামনে আসে। জানা যায়, উটার গ্রিন রিভার বিমানঘাঁটি থেকে উৎক্ষেপিত রকেট ‘এথেনা’-র নিউ মেক্সিকোর হোয়াইট স্যান্ড এলাকায় অবতরণের কথা থাকলেও, এই অঞ্চল অতিক্রম করার সময় তা নিয়ন্ত্রণ হারায়। নীরবতার অঞ্চলের ঠিক মাঝে ভেঙে পড়ে এই রকেট!

Zone of silence

ভিনগ্রহীরা আসে Zone Of Silence- এ?

Zone of silence

পরপর দুই রহস্যময় ঘটনার পর নাসা ভন ব্রাউন নামে এক বিজ্ঞানীকে এই অঞ্চলে পাঠায়। রকেট দুর্ঘটনার বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ গবেষণার জন্যই ভনকে পাঠিয়েছিল নাসা। প্রায় ২৮ দিন যাবৎ এই অঞ্চলে বসবাস করেন ভন, তাঁর সঙ্গে ছিল ৩০০ জন কর্মী। জানা যায়, মাত্র একমাসের মধ্যেই একটি ছোটখাটো গ্রাম বানিয়ে ফেলেছিলেন ভন ও তাঁর সঙ্গীসাথীরা। বাড়ি, রান্নাঘর, চিকিৎসালয় থেকে একটি গোটা রেললাইন বানিয়ে ফেলেন তাঁরা। রকেটের ধ্বংসাবশেষ সহ মাটি এবং অন্যান্য নমুনা, গবেষণার ফলাফল ট্রেনে করেই গবেষণাগারে পাঠাতেন বিজ্ঞানী।মরুভূমিতে কাটানো ওই ২৮ দিনে নাকি নানা অতিজাগতিক ঘটনা লক্ষ্য করেন ভন ও তাঁর সহচররা। শ্রমিকদের একাংশ ভিন্‌গ্রহীদের দেখেছেন বলেও দাবি করেন। পাশাপাশি আকাশে রহস্যময় আলোক বিচ্ছুরণ এবং অদ্ভুতুড়ে প্রাণী ও উদ্ভিদের দেখা পাওয়ার খবরও পাওয়া যায়।

Zone of silence

জীবাশ্ম ও নুন উত্তোলনের কাজ চলে Zone Of Silence – এ

Zone of silence

যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বহু ভ্রান্ত ধারণার অবসান হয়। জানা যায়, ১৯৩৮ এবং ১৯৫৪ সালে একই স্থানে দু’টি বড় আকারের উল্কা পড়ে। ফলত সৃষ্টি হয় বিশালাকার গর্ত। ১৯৬৯ সালে এই অঞ্চলের পশ্চিমে ফের উল্কাবৃষ্টি হয়, তৈরি হয় গভীর গর্ত। বিজ্ঞানীদের মত, লাগাতার উল্কাপাতে চৌম্বকক্ষেত্র সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে এই অঞ্চলে। ভূতত্ত্ববিদদের মতে, প্রাচীন সময়ে টেথিস সাগরে ডুবে ছিল এই অঞ্চল। স্বভাবতই প্রচুর পরিমাণে সামুদ্রিক জীবের জীবাশ্ম এবং নুনের উপস্থিতি দেখা যায় মাটিতে। বর্তমানে ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে জীবাশ্ম ও নুন উত্তোলনের কাজ চলে এই এলাকায়।

Zone of silence

আরও পড়ুন : যৌনাঙ্গে গরম ডিম! কৃষকের কাছে আজও অনুপ্রেরণা নাচোলের রানী




Leave a Reply

Back to top button