সোনাচূড়া গ্রামে দেবী সিংহবাহিনীর পুজোর ইতিহাস
কেন সোনাচূড়া গ্রামে দেবী দুর্গা পূজিত হন দেবী সিংহবাহিনী রূপে? কি জানালেন স্থানীয় বাসিন্দারা?১৫০ বছরেরও বেশি এই পুজো

শুভঙ্কর,নন্দীগ্রাম: দোরগোড়ায় দেবী দুর্গার পুজো! আর তার আগে চলছে জোর কদমে প্রস্তুতি। সব নামকরা পুজোগুলি একটা লম্বা সময় ধরে প্যান্ডেল তৈরি করার কাজে ব্যস্ত থাকে। কারণ সেই পূজোর নাম আলাদা, জনপ্রিয়তা থাকে। ঐতিহ্যের ব্যাপার কিছুটা তো আছেই। তার উপর পুজো প্রেমীদের আকর্ষিত করাও একটা বড় লক্ষ্য। সব বড়ো পূজারই আছে এক ইতিহাস। তেমনি এই পুজোরও রয়েছে এক ইতিহাস। কি পুজো? কোথাকার পুজো?
এই পুজোটি হয় নন্দীগ্রামের সোনাচূড়াতে। ১৫০ বছরেরও বেশি এই পুজো। এখানে মা দুর্গা পূজিত হন দেবী সিংহবাহিনীর রূপে। এমনকি এই গ্রামের নামেরও ইতিহাস এই পুজোকে জড়িয়ে। জানা গিয়েছে এই গ্রামের নাম আগে সোনাচূড়া ছিল না। এর পুরনো নাম গুমগড়। যেহেতু অনেক আগে থেকে এখানে দেবী সিংহবাহিনীর সোনার মূর্তি ছিল, সেই কারণেই এই গ্রামের নাম রাখা হয়েছে সোনাচূড়া। তা কি এর সাথে জুড়ে থাকা ইতিহাস? জানা গিয়েছে, অনেক বছর আগে এখানে এক জমিদার ছিলেন। তার নাম ছিল বৈকুন্ঠ মন্ডল। তাকে দেবী স্বপনে দেখা দেয় এবং সেই অনুযায়ী তিনি তুলাঘাটার জঙ্গল থেকে সোনার দুর্গা মূর্তি খুঁজে পান এবং তা নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। এই স্বপ্নের পর তিনি আরও একটি স্বপ্ন পান দেবীর এবং সেই অনুযায়ী তিনি দেবীর একটি মন্দির গড়েন।
গল্প এখানেই শেষ নয়। সেই সোনার মূর্তি এখন আর নেই। মহিষাদলের রাজা সেই সময়ের গুমগড়ের জমিদারের থেকে জোর করে মূর্তিটি কেড়ে নিয়েছিলেন এবং তা নিয়ে যাওয়ার সময় সোনার চূড়া খুলে পড়ে গিয়েছিল। সেই থেকেই গ্রামের নাম হয় সোনাচূড়া। এই ইতিহাস সম্বন্ধে জমিদার বৈকুণ্ঠ মণ্ডলের নাতি প্রবীর মন্ডল জানান, “এখানকার দেবী খুবই জাগ্রত। গ্রামবাসীরা সকলেই এই দেবীর পূজা করেন এখনও।” অন্যদিকে, মন্দির কমিটির সদস্য দেবব্রত প্রামাণিকের বক্তব্য, “আমি শুনেছি অনেকেই নাকি দেবীর দর্শন পেয়েছেন এবং তাদের মনের কামনা ও ইচ্ছা পূরণও হয়েছে। যদিও সেই মূর্তি আর নেই, তবে দেবীর মন্দিরটি আছে। এখন এখানে গ্রামবাসীরা ভক্তি দিয়ে পূজা করেন।”