School Reopen- স্কুল খুলেছে, কিন্তু ওদের কথা কেউ ভাবছে না

নেহা চক্রবর্তী ও তন্ময় রায়, কলকাতা-  ‘কি রে, স্কুলে যাস..?’ প্রশ্ন শুনতেই মুঝরে গেল পাড়ার চায়ের দোকানের মালিক (tea shop owner)  নরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের মেয়ে টিনা। টিনার আসল নাম মঞ্জিসঠা বিশ্বাস। বারাসাতে (barasat) থাকেন নরেন্দ্র। তাকে যখন জিজ্ঞেস করলাম,’ কি গো, মেয়ের কি হল?’ উত্তর দিল, ‘ আসলে সারাদিন এখানেই তো। বিরক্ত হয়ে উঠছে। অল্প অল্প পড়তে শিখেছিল, কিন্তু স্কুলটা বন্ধ হয়ে গেল। আর পড়তেও বসে না, পড়ার ইচ্ছাও নেই।’ সত্যিই তো এই রকম কত টিনা রয়েছে আমাদের চারপাশে৷

প্রায় ৫৬৪দিন বন্ধ স্কুলের দরজা (school closed)। চলেছে লকডাউন (lockdown), কারফিউ (carfew) আরও বহু কিছু । অবশেষে জগদ্ধাত্রী পুজোর পর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Chief Minister Mamata Banarjee) আদেশে আগামী ১৬ই নভেম্বর আরম্ভ হলো স্কুল (school) । কিন্তু স্কুলে যাচ্ছে কারা? শুধুই নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ শ্রেনী? তারাও বা কত পরিমাণই  স্কুলে যাচ্ছে (school attendence percentage)? আমার – আপনার পাড়ার টিনারা কি আর কোনদিন পড়ার মজা খুজে পাবে (school Dropout)?

মাঝখানে কেটে গেছে বহুদিন । তবু কি সবাই স্কুলকক্ষে ফিরলো! এই মাঝে দিনগুলোয় বেড়ে গেছে স্কুলছুটের  সংখ্যা। আর অনেক জায়গায় শিক্ষকের অভাবে ইতিমধ্যেই বন্ধ হতে চলেছে স্কুল, যেটা আরো এক বিরাট সমস্যা, যা কোন কারণে দেখেও অদেখা করতে চাইছেন সরকার। কেউ কি আমরা খোজ নিয়েছি, শিক্ষার মূলস্রোতে ফিরতে গিয়ে স্রোতের বিপরীতে হারিয়ে গেলো কত মুখ? এই দেড় বছরে শিক্ষার হাল খানিকটা ছিল পেন্ডুলামের মতন। যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী অনলাইন ক্লাস করলো তারা একদিকে অনলাইনেই পড়লো,পরীক্ষা দিলো রেজাল্ট পেলো আর অপরদিকে নুন আনতে পান্তা ফুরানো বাড়ির ছেলে রাজু ঢুকে গেলো কোনো এক সাইকেলের দোকানে।

পশ্চিমবঙ্গের স্কুলছুট,পশ্চিমবঙ্গে স্কুল খোলা,পশ্চিমবঙ্গে স্কুল খোলার খবর,স্কুল নিয়ে ব্রাত্য বসুর মন্তব্য,স্কুলছুটের সমস্যা,স্কুলছুট বাড়ছে কেনো,স্কুলছুট কি,স্কুলছুট কমানো,বিভিন্ন রাজ্যে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা,স্কুল নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ,মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য স্কুল নিয়ে,কোথায় স্কুলছুটের হার বেশি,কলকাতার স্কুলের খবর,School Reopening in West Bengal,news of school reopening in West Bengal,Bratya Basu's comments about school,problem of school Dropout,why school Dropout is increasing,what is school dropout,Reduction of school dropout,number of primary schools in different states,High Court directive about school,CM's comment School news

রাজ্যে আপাতত ১১ হাজার ৬৪১টি প্রাথমিক স্কুল আছে, যেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা ৩০-এর নিচে। উচ্চ প্রাথমিকে এমন স্কুলের সংখ্যা ১৭২২। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতায় আসা সরকারের সাফল্য থাকা সত্বেও সরকারি, সাহায্যপ্রাপ্ত ও পোষিত স্কুলে দিন দিন স্কুলছুট বেড়েই চলেছে। কি এই কারণ? একদিকে সরকারের সব প্রকল্প অন্যদিকে বাচার জন্য লড়াই। খেটে খাওয়া মানুষ বেছে নিচ্ছে দ্বিতীয়টা। যা খুব স্বাভাবিকভাবেই ডারউইনের তৃতীয় সুত্রের সাথে খাপ খাইয়ে এগিয়ে চলছে।

স্কুল প্রারম্ভের ফলাফল দু রকমের হয়েছে। সুফল হিসাবে ধরা যেতে পারে শিক্ষক ছাত্রের মধ্যে জুম কলের মিউট আন মিউটের সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসে ক্লাসরুমে বসে আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের মাধ্যমে তারা আবার পড়াশুনাতে মনোনিবেশ করতে পারছে। মনোবিদদের মতে বাড়িতে থাকতে থাকতে ছাত্রদের মানসিক চাপ বেড়ে চলেছিল, গেমের প্রতি আসক্তি তাদের নিয়ে যাচ্ছিল বই থেকে বহু বহু দূরে। তাছাড়াও অনেক রকম হিংসাত্মক প্রবণতাও দেখা যাচ্ছিল। এত গেল সমাজের তথাকথিত এলিট ক্লাসে বড় হয়ে ওঠা ছাত্রছাত্রীদের কথা। কিন্তু যাদের বাচার জন্যে নেমে পড়তে হছে কাজে। যাদের কাছে লড়াইটা দুতরফা। এক, তাদের এত ছোট বয়স থেকে কাজ করতে হচ্ছে। আর দুই, তারা যারা পড়াশুনা করতে চায়, তারা চেয়েও করতে পারছে না। কারণ এই সমাজে বেচে থাকতে টাকা লাগে। স্কুলের প্রারম্ভ  মানসিক রোগের উপসম হিসাবেই কাজ করবে বলা চলে ঠিকই, কিন্তু এই খেটে খাওয়া মানুষদের বাড়ির ছাত্রছাত্রীরা ফিরতে পারবে কি?

আরও পড়ুন…..School Reopening- পড়ুয়াদের ফের বিদ্যালয়মুখী করে তুলতে উদ্যোগ নিল এই জেলার শিক্ষকেরা

প্রশ্ন আরও আছে। করোনার প্রাদুর্ভাব অতিরিক্ত না হলেও চলে যায়নি দেশ থেকে। দিনে  হাজারের সংখ্যায় আক্রান্ত। তাছাড়াও ভ্যাকসিন হয়নি স্কুলে পাঠরত পড়ুয়াদের। মাস্ক আর স্যানিটাইজেশনের পরও কজন সোশ্যাল ডিসটেন্স মানছে সেটাও বড়ো প্রশ্নের। আক্রান্ত বেড়ে যাওয়ার সম্ভবনা প্রচুর, দায়িত্ব কার?দ্বিতীয়ত, স্কুলছুট এবং শিক্ষকদের স্কুলে ইস্তফা দেওয়ার হার। দীর্ঘদিন ধরে উঠে আসা এই প্রশ্নের সুউত্তর আজো কোনো সরকারই দিতে পারেনি। কোথাও পড়ুয়ার সংখ্যা সাড়ে সাতশো, শিক্ষক মোটে দুজন। কোথাও আবার শিক্ষকের সংখ্যা ছাত্রছাত্রীদের তুলনায় ছ’গুণ বেশি। প্রাথমিকে যত সংখ্যক ছাত্রছাত্রী ভর্তি হচ্ছে, পরবর্তী ধাপে স্কুলে থাকা পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে। একই অবস্থা উচ্চ প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিকে ভর্তির ক্ষেত্রে।

পশ্চিমবঙ্গের স্কুলছুট,পশ্চিমবঙ্গে স্কুল খোলা,পশ্চিমবঙ্গে স্কুল খোলার খবর,স্কুল নিয়ে ব্রাত্য বসুর মন্তব্য,স্কুলছুটের সমস্যা,স্কুলছুট বাড়ছে কেনো,স্কুলছুট কি,স্কুলছুট কমানো,বিভিন্ন রাজ্যে প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা,স্কুল নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশ,মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য স্কুল নিয়ে,কোথায় স্কুলছুটের হার বেশি,কলকাতার স্কুলের খবর,School Reopening in West Bengal,news of school reopening in West Bengal,Bratya Basu's comments about school,problem of school Dropout,why school Dropout is increasing,what is school dropout,Reduction of school dropout,number of primary schools in different states,High Court directive about school,CM's comment School news

কর্ণাটকে মাধ্যমিক ও সিনিয়র সেকেন্ডারিতে স্কুল-ছুটের হার খুব বেশি প্রায় ২৩.৪%। তামিলনাড়ুতে সরকারি ব্যবস্থাপনার স্কুলে শুধু মাধ্যমিক স্তরেই ৩.২০ লাখ পড়ুয়া কমেছে। ত্রিপুরায় মাধ্যমিক স্তরে স্কুলছুট ২৯.৫ শতাংশ। স্কুলে থাকা পড়ুয়ার হার ৪৯.৯ শতাংশ। হরিয়ানায় স্কুলছুট বেড়ে ১৪.৮ শতাংশ। ওডিশায় মাধ্যমিক স্তরে তফসিলি জাতি ও উপজাতিদের স্কুলছুটের হার যথাক্রমে ১৭.৬ ও ২০.৮ শতাংশ। মাধ্যমিকের মোট পড়ুয়ার ৫৮ শতাংশ উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হয়। এদের অবস্থান এখন কোথায় , আদৌও এরা আর কখনো শিক্ষার মূলস্রোতে ফিরতে পারবে কিনা তার নিশ্চয়তা নেই । প্রশ্ন বহু ,প্রশ্ন করার জায়গাও অগুনতি কিন্তু সঠিক উত্তর দেবে কে?




Back to top button