Republic Day 2022 – কখনও বদলেছে রঙ, কখনও জ্যাকেট, কখনও শিবির! গিরগিটি নাকি রাজনীতিবিদ

Republic Day 2022 – প্রজাতন্ত্র, বিশ্বের সবথেকে মহান প্রজাতন্ত্র। প্রজাতন্ত্রের মানে প্রজা বা সাধারণ জনগণের তন্ত্র ( System)। তাই অনেকে ভারতবর্ষকে সাধারণতন্ত্র বলেও উল্লেখ করেন। অর্থাৎ সাধারণ মানুষ তার প্রতিনিধি ঠিক করবে আর সেই সাধারণ জনগণ দ্বারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সাধারণ জনগণের কথা দেশের সরকারের সামনে তুলে ধরবেন। যে নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের জনপ্রতিনিধিরা দেশে কিংবা রাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিরাজ করবে সেই রাজনৈতিক দল কেন্দ্রে বা রাজ্যে সরকার তৈরি করবে। এই হল ভারতবর্ষের সাধারণতন্ত্রের মূল কাঠামো।

Republic Day 2022- আয়া রাম, গ্যায়া রাম
কিন্তু ভোট আসলেই নেতাদের দলের প্রতি ‘অসন্তোষ’, ‘নিশ্বাস না নিতে পারা’, ‘কাজ করার স্বাধীনতা না থাকা’ ইত্যাদি ইত্যাদি অছিলায় দল ত্যাগ। উদাহরণ হিসাবে আপনাকে বেশি দূর যেতে হবে না, আমাদের পশ্চিমবঙ্গের দিকেই তাকান। বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির একসময়ের ছায়া সঙ্গী মুকুল রায়ের ‘তৃণমূলে নিশ্বাস বন্ধ’ হয়ে আসায় ২০১৭ তে দলপাল্টি হয়ে সোজা ‘ভারতীয় জনতা পার্টি’। তারপর হঠাত করেই শ্বাসকষ্ট ঠিক হয়ে যাওয়ায়, পুত্রসহ তৃণমূলে ফিরে আসলেন, এক্ষেত্রে সময় কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ ঠিক ’২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে। কিছুদিন আগেই সংবাদমাধ্যমে উনি নিজের অভিঞ্জতা থেকে জানিয়েছেন, ‘যাহাই বিজেপি, তাহাই তৃণমূল’।
আরও পড়ুন- https://thebengalichronicle.com/netaji-subhas-chandra-bose-goes-viral-in-his-birthday/
চলুন রাজ্য থেকে বেড়িয়ে অন্য রাজ্যে ঘুড়ে আসি। উত্তরপ্রদেশ! সংবাদমাধ্যমগুলির ভাষায় ২০২৪ এর কেন্দ্রের রাস্তা যায় এই উত্তরপ্রদেশ দিয়ে। ৫ বছর রাজ্যের বিজেপি সরকারের মন্ত্রী থাকার পর স্বামী প্রসাদ মৌর্য্য ঠিক নির্বাচনের দোরগোড়ায় বিজেপি থেকে ইস্তফা দিয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানালেন, “এই বিজেপি সরকার পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর কথা ভাবে না। তাই আমি বলে বলে উইকেট নেব, এই সরকারের ‘খাটিয়া খাড়ি’ করে দেব”। ৫ বছর মন্ত্রী থাকার সময় তার এই বোধোদয় হয়নি বোধ হয়, হঠাত করেই ’২২ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই বোধ জেগে উঠেছে।
শুধু তাই নয় ভোট হয়ে যাবার পর বিধায়কদের এক দল থেকে অন্য দলে ঝাপ। তারপরই কেল্লা ফতে। নতুন সরকার, নতুন মুখ্যমন্ত্রী, নতুন দল আর সাধারণতন্ত্রের মৃত্যু। ভুঁড়ি ভুঁড়ি উদাহরণ। মহারাষ্ট্রের কথা মনে আছে আপনার? সকালে এক সরকার বিকেলে অন্য এক সরকার। মধ্যপ্রদেশে বিধায়করা হঠাত করেই দল পরিবর্তন করায়, এক্কেবারে নতুন সরকার, বিজেপি সরকার। রাজস্থানে আবার সাধারণতন্ত্রের অন্য এক নিদর্শন দেখা গেছিল। কংগ্রেসি বিধায়কদের পলায়ন রুখতে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলথ সব সব বিধায়ককে এনে রেখে দিল এক হোটেলে। মানে সাধারণতন্ত্র হোটেলে বন্দী।
আসলে সাধারণতন্ত্রী ভারতবর্ষের সাধারণ জনগণের সাধারণ মত কেবলই প্রহসন। ছাত্র বিক্ষোভে জল কামান, চাকরি না পাওয়া যুবক-যুবতিদের বেত্রাঘাত, কৃষকদের ‘আতঙ্কবাদী’ সম্বোধন, প্রতিবাদীদের ‘দেশবিরোধী’ তকমা আর কলা-কুশলীদের ‘রগড়ে’ দেওয়ায় বেচে আমার সাধারণতন্ত্র ( Republic Day 2022), আমার ভারতবর্ষ।