Russia-Ukraine War: দেশে পৌঁছেও ইউক্রেনে ফেরার সিদ্ধান্ত পৃথ্বীরাজের, আটকদের দিকে বাড়িয়ে দেন সাহায্যের হাত

রিমা শিয়ালী, কলকাতা: গত ২৪ শে ফেব্রুয়ারী থেকেই ইউক্রেনে বেজে উঠেছে রণডঙ্কা ( Russia-Ukraine War ) । রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ সামরিক বাহিনীর ক্রমাগত অভিযান,বোমা বর্ষণের ফলে ইউক্রেনের নাগরিকদের পক্ষে সেখানে থাকা দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে।এর ফলেই যেমন বহু নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে ঠিক সেরকমই ইউক্রেনে আটক হয়ে পড়েছে অন্যান্য দেশের বহু নাগরিক এবং শিক্ষার্থী ( students ) যারা প্রতিনিয়ত চেষ্টা চালাচ্ছে এই যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ইউক্রেন থেকে পালানোর।এমতাবস্থায় সকলেই যখন ইউক্রেন ছেড়ে আন্তর্জাতিক সীমান্তের দিকে ছুটছে, ঠিক তখনই ৩৭ বছর বয়সী একজন বাঙালি ডাক্তার ( bengali doctor ) ইউক্রেনে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেখানে আটকে থাকা ভারতীয় ও অন্যান্য নাগরিকদের সাহায্যের জন্য।
শত ভারতীয়কে সীমান্তে পৌঁছাতে সাহায্য পৃথ্বীরাজের
ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ পৃথ্বীরাজ ঘোষ বিগত দুই দশক ধরে ইউক্রেনে বসবাস করে আসছেন। হিন্দুস্তান পার্কের বাসিন্দা পৃথ্বী রাজ বর্তমানে কিইভের ভেলিকা ভাসিল্কিভস্কায় রয়েছেন।জানা গিয়েছে শত শত ভারতীয় এবং অন্যান্য নাগরিকদের বাস ও গাড়ির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন পৃথ্বী রাজ ঘোষ যাতে তারা সীমান্তে পৌঁছাতে পারে। এছাড়াও তিনি ভারতীয় দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছেন এবং সীমান্তের দিকে যেসব নাগরিকরা যাচ্ছেন তাদের সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট দিয়ে যাচ্ছেন।এইভাবে কিয়েভের ৫০ টিরও বেশি বাঙালি এবং প্রায় ৩৫০ জন ছাত্রকে শহর থেকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন তিনি৷
ফের কেন ইউক্রেনে ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেন পৃথ্বীরাজ?
পৃথ্বীরাজ ঘোষ একটি সংস্থা চালান যেখানে বিদেশী শিক্ষার্থীদের ইউক্রেনে সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে নির্দেশ প্রদান করা হয়। অপর একটি সংবাদ মাধ্যমের সাক্ষাৎকারে পৃথ্বীরাজ বলেন যে তিনি ২০১৪ সালের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ও ইউক্রেনে ছিলেন তাই তিনি যুদ্ধ বিষয়ক ঘটনাগুলির সাথে পরিচিত ছিলেন।তাই যুদ্ধ শুরুর পূর্বেই তিনি শিক্ষার্থীদের চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।পরামর্শ অনুযায়ী বেশ কিছু ছাত্র ছাত্রী চলে গিয়েছিল। কিন্তু পরে প্লেনের টিকিটের মূল্যবৃদ্ধির ফলে বাকি শিক্ষার্থীদের আর ফেরা সম্ভব হয় না এবং এরপরই যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।তার মতে অন্যান্য শহরে এখনও অনেক শিক্ষার্থী আটকে পড়ে আছে আর তিনি সেসব মানুষদের এরূপ দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় ছেড়ে দিতে পারেন না।
আটকদের কিভাবে সাহায্য করলেন পৃথ্বী?
ইউক্রেনে যেসকল শিক্ষার্থী রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বাঙ্কারে বসবাস করছিল তাদের খাওয়ানোর জন্য বেশ কয়েক বস্তা চাল,ডাল মজুদ করে রেখেছিলেন পৃথ্বী।তিনি বলেছিলেন যুদ্ধের দরুন শিক্ষার্থীদের সীমান্তে নিয়ে যাওয়া খুবই দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল এবং ইউক্রেনের চালকরাও কারফিউ জারি হওয়ার জন্য গাড়ি চালাতে ভয় পাচ্ছিলেন।তবুও শেষ মুহূর্তে পৃথ্বীরাজ ঘোষ কুড়িটি ছোট বাস এবং পাঁচটি বড় বাসের ব্যবস্থা করেছিলেন যা শেষ পর্যন্ত ছাত্রদের সীমান্তে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
আরও পড়ুন: দুরন্ত ঘূর্ণির জাদুকরের বিদায়ে বাকরুদ্ধ ক্রিকেট
ঘুমহীন রাত কাটাচ্ছেন পৃথ্বীর বৃদ্ধ বাবা-মা
ইতিমধ্যেই বহু ভারতীয় শিক্ষার্থী ইউক্রেনের সীমান্ত ছেড়ে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে এবং বেশকিছু জন দেশে পৌঁছেও গেছে।কিন্তু এসব নাগরিকদের সাহায্যে ব্যস্ত পৃথ্বীরাজের বৃদ্ধ বাবা-মা কলকাতায় ফিরে পৃথ্বীর ফিরে আসার অপেক্ষায় ঘুমহীন রাত কাটাচ্ছেন।তারা বলেন,তাদের ছেলের এই দুর্দান্ত কাজের জন্য তারা গর্বিত সাথে চিন্তিতও বটে।তারা চান এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে যেন পৃথ্বী নিরাপদে থাকে এবং শিঘ্রই বাড়ি ফিরে যায়।
আরও পড়ুন: ‘বল অফ দ্য সেঞ্চুরি’ ওয়ার্নের ‘শেন’ ডকুমেন্টারিতে ফাঁস স্পিন ম্যাজিক