চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় মনোযোগ, বছরে ১৫ লাখের বেশি ইনকাম করছেন কপিল
এবার এমনই এক দৃষ্টান্ত গড়ল রাজস্থানের কোটার বাসিন্দা কপিল জৈন। কপিল জৈন চাকরি ছেড়ে বর্তমানে করছে গোলাপ চাষ। এই গোলাপ চাষ করে সে কত রোজগার করছেন জানেন? প্রতিবছরে সে ১৫ লাখ টাকা করে ইনকাম করেন

শুভঙ্কর, রাজস্থান: আমরা ছোটবেলা থেকেই একটা জিনিসই জেনে এসেছি পড়াশোনা ভাল করে করতে হয়। শুধু পড়াশোনা ভালো করলেই হবে না পড়াশোনা শেষ করে ভালো চাকরিও করতে হবে। কিন্তু কখনও কাউকে বলতে শুনেছি যে চাকরি না করে ব্যবসা বা কৃষি কাজ করা যায়। হয়তো সেই চিন্তাভাবনা আমাদের অনেকেরই নেই। কিন্তু এবার এমনই এক দৃষ্টান্ত গড়ল রাজস্থানের কোটার বাসিন্দা কপিল জৈন। কপিল জৈন চাকরি ছেড়ে বর্তমানে করছে গোলাপ চাষ। এই গোলাপ চাষ করে সে কত রোজগার করছেন জানেন? প্রতিবছরে সে ১৫ লাখ টাকা করে ইনকাম করেন। কিন্তু কপিল জৈন কেন নিজের চাকরি ছাড়লেন? হঠাৎ কিভাবেই তিনি গোলাপ চাষ শুরু করলেন?
কপিল জৈন রাজস্থান কোটার বাসিন্দা হলেও তিনি পড়াশোনা করেন পুনেতে। এরপর এশিয়ান পেইন্টস কোম্পানিতে ম্যানেজার হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেখানে তাঁর আয় ছিল বার্ষিক ১৭ লাখ টাকা। সেখানে কাজও করেন পাঁচ বছর। কিন্তু কি এমন হল যে তাকে চাকরি ছাড়তে হল? সেটাই এখন ভাবছেন তো। কপিল বিবাহিত। ২০১২ সালে তিনি বিয়ে করেন। পরিবার নিয়ে বেশ ভালই মুম্বাইতে বসবাস শুরু করেছিল। কিন্তুঁর স্ত্রী চাকরি পান কোটার গ্রামীণ ব্যাঙ্কে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই মুম্বাইয়ের পাঠ চুকিয়ে চলে আসেন নিজেদের বাড়ি কোটায়। তবে এখানে থেকে সেই ভাবতে থাকে কি করবে। কপিলের বাবা কৃষি কাজ করেন। গ্রামে তাঁর বাবার ৪০ বিঘা জমি ছিল। প্রতিদিনই কপিল খামারে যেতেন। সেখানে দাঁড়িয়ে পরিকল্পনা করতেন নতুন কিছু করার। তার মামা একজন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র বিজ্ঞানী। তারপর তিনি সেই মামার কাছেই পরামর্শ নেন চাষ করার। যদিও কপিল প্রথমে চেয়েছিল কৃষিকাজ করতে। কিন্তু তার কাকা বারণ করেন। কারন তিনি বলেন কৃষিকাজ করলে ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এমন কিছু করতে হবে যাতে সেটা নষ্ট না হয়।
সেই কথাকে মাথায় রেখে কপিল পরিকল্পনা করেন মামার পরামর্শ মত গোলাপজল বসানোর। ৪-৫ মাসের মধ্যে একটি গোলাপ জলের প্লান্টও তৈরি করে ফেলেন। তারপর তিনি কৃষকদের কাছ থেকে গোলাপ ফুল কিনে গোলাপ জল তৈরি করতে থাকেন। বিয়ের মরশুমে গোলাপের দাম খুবই বেশি থাকে। তাই তখন কৃষকদের কাছ থেকে গোলাপ ফুল পাওয়া খুবই মুশকিল হয়। গোলাপ ফুল না পাওয়ার জন্য তার উৎপাদনও বন্ধ থাকে। আর তারপরেই সে পরিকল্পনা করে নিজের খামারে গোলাপ ফুল চাষ করার। এখন চার বছর ধরেই তিনি নিজের খামারেই গোলাপ ফুল চাষ করছেন এবং গোলাপজল প্রস্তুত করছেন। আর এইভাবে তিনি প্রতি বছর ১৫ লাখ টাকা উপার্জন করেন।